১৫ আগস্টের মধ্যেই ৮০% স্কুল ফি মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ হাইকোর্টের
মোল্লা জসিমউদ্দিন
সোমবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে বেসরকারি স্কুলে বকেয়া ফি সংক্রান্ত মামলার ভার্চুয়াল শুনানি চলে। সেখানে রাজ্যের ১১২ টি বেসরকারি স্কুলের ১৫ হাজার মত অভিভাবকদের পক্ষে দাবি জানানো হয় – ‘মামলার চুড়ান্ত নিস্পত্তি না হওয়া অবধি যেন কোন স্কুল ফি না নেওয়া হয় ‘। অভিভাবকদের এহেন দাবি অবশ্য খারিজ করে দেয় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ।পাশাপাশি ডিভিশন বেঞ্চ পরিস্কারভাবে নির্দেশ দেয় – ‘ আগামী ১৫ আগস্টের মধ্যেই ১১২ টি বেসরকারি স্কুলে বকেয়া টিউশন ফির ৮০% যেন মিটিয়ে দেন অভিভাবকরা ‘। এদিন রাজ্যের পক্ষে এডভোকেট জেনারেল উচ্চ আদালত কে জানান -‘ এইসব বেসরকারি স্কুলে বাড়তি ফি মকুব নিয়ে রাজ্য সরকার এক সার্কুলার জারি করেছে। পাশাপাশি কোন অভিভাবক ফি দিতে না পারলে তার পড়ুয়া সন্তান যেন স্কুলের অনলাইন ক্লাস থেকে বঞ্চিত না হয় ‘। তবে বেসরকারি স্কুলের পক্ষের আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তী এদিন অনলাইন শুনানিতে জানিয়েছেন – ‘ রাজ্য সরকার ওই সার্কুলারে স্কুল ফি কম নেওয়া নিয়ে অনুরোধ করেছে মাত্র, কোন নির্দেশ অবশ্য দেয়নি। তাই স্কুল ফি কম নেওয়া নিয়ে কোন বাধ্যবাধকতা নেই। তবে বেসরকারি স্কুল গুলি করোনা আবহে ইতিমধ্যেই মোট টিউশন ফির ৩৫% কম নিচ্ছে ‘। এদিন আদালতে স্কুলের পক্ষে হলফনামা জমা পড়ে। যেখানে স্কুল কর্মীদের বেতন, স্কুলের পরিকাঠামোয় উন্নয়ন সহ একাধিক তথ্য পেশ করা হয় হলফনামায়। এদিন অভিভাবকদের একাংশের এই মামলার বিভিন্ন তথ্য সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করার জন্য কলকাতা হাইকোর্ট ভৎসনা করে। আগামী দিনে এইরুপ শেয়ার পর্ব চালু না হয় সেই ব্যাপারে কড়া হুশিয়ারি দেওয়া হয় কলকাতা হাইকোর্টের তরফে। এই মামলায় আগামি সোমবার পুনরায় শুনানি রয়েছে বলে জানা গেছে। মার্চ মাসের শেষের দিকে গোটা দেশজুড়ে শুরু হয়েছে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে লকডাউন। যা এখনও চলছে ধাপে ধাপে। স্কুল – কলেজ, অফিস – আদালত একপ্রকার বন্ধ বলা যায়। তবে শিক্ষাক্ষেত্রে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একেবারেই বন্ধ। যেখানে স্কুলে পঠনপাঠন বন্ধ সেখানে ক্রমাগত পড়ুয়াদের বেতন কেন দিতে হবে? এই মর্মে কলকাতা সহ বিভিন্ন জেলার বেসরকারি স্কুলগুলিতে দফায় দফায় চলেছিল অভিভাবকদের বিক্ষোভ প্রদর্শন কর্মসূচি৷স্কুল হচ্ছেনা, অথচ বকেয়া ফি নেওয়া হচ্ছে পুরোপুরি, শুধুমাত্র টিউশন ফি নেওয়া হোক । তবে স্কুল কর্তৃপক্ষ এর বাকি বেতন নেওয়া চলবেনা। এই মর্মে বিনীত রুইয়া নামে এক অভিভাবক কলকাতা হাইকোর্টের দারস্থ হন৷ । আগে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার অনলাইন শুনানি চলেছিল। উভয় পক্ষের সওয়াল-জবাব শুনে ডিভিশন বেঞ্চ পরিস্কার ভাবে নির্দেশ দিয়েছিল – ‘চলতি মাসের ৩১ তারিখ পর্যন্ত স্কুলের বকেয়া বেতন মিটিয়ে ফেলতে হবে ১৫ আগস্টের মধ্যে। যাদের আর্থিক অবস্থা করোনার জেরে বেহাল তাদেরকেও বকেয়া বেতনের অন্তত আশিভাগ মিটিয়ে দিতে হবে ‘। পাশাপাশি বেসরকারি স্কুলগুলি কে এই ব্যাপারে হলফনামা পেশের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। সোমবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলায় নির্দেশ দেওয়া হয় – আগামী ১৫ আগস্টের মধ্যে ৮০% ফি দিয়ে দিতে হবে অভিভাবকদের কে ‘। এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে আগামী সোমবার বলে জানা গেছে।