৫০ বছরে পা দিল “সংলাপ”
:- সাধন মন্ডল ,বাঁকুড়া:——বাঁকুড়া শহরে সাংস্কৃতিক সংস্থা বা সংস্কৃতিক চর্চা কেন্দ্র গড়ে উঠেছিল অনেকগুলোই তাদের মধ্যে অন্যতম একটি আবৃতি প্রশিক্ষণের কেন্দ্র হল “সংলাপ” সত্যরের দশকেযে সময় রাজনৈতিক হানাহানি চলছে সেই সময় এক তরুণ আবৃত্তিকার স্বপ্ন দেখেছিলেন শুধুমাত্র আবৃত্তি চর্চা ও ছেলেমেয়েদের আবৃত্তির প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করার। আর যেমনি ভাবনা তেমনি কাজ ১৯৭৫ সালে তৈরি করে ফেললেন “সংলাপ” নামে একটি প্রতিষ্ঠান। বর্তমান সময়ে এ শহরের শুধু নয় রাজ্যের এক খ্যাতিমান আবৃত্তিকার পার্থসারথি কুণ্ডুর হাত ধরে জন্ম নেওয়া সেই “সংলাপ” ৫০ বছরে পা দিলো। এই উপলক্ষে গত ৩১ মার্চ সন্ধ্যায় বাঁকুড়া রবীন্দ্রভবনে আয়োজিত হয়েছিল সংস্থার সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসবের। বরেণ্য সাহিত্যিক দেবব্রত সিংহ, সংস্কৃতিপ্রেমী চিকিৎসক অমিতাভ চট্টরাজ, বাচিক শিল্পী দেবব্রত সেন, চিত্তরঞ্জন কুণ্ডু, ডাঃ জীতেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, ডাঃ পার্থসারথি দত্ত, দীপক ঘোষ, রামপ্রসাদ বিশ্বাস, কাঞ্চন চক্রবর্তী ও সংলাপের কর্ণধার পার্থসারথি কুণ্ডু প্রদীপ জ্বালিয়ে উৎসবের সূচনা করলেন। সম্পাদক অনিন্দিতা ঘটক, ডাঃ জীতেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ও মনোজ ভট্টাচার্য সংস্থার গড়ে ওঠার ইতিহাস থেকে অন্দরমহলের কথা তুলে ধরলেন। ডাঃ অমিতাভ চট্টরাজ তাঁর বক্তব্যে বাঁকুড়ার আবৃত্তি চর্চার এক মনোজ্ঞ ধারাবাহিক ইতিহাস উপস্থাপন করেন। সংলাপ নামে এই আবৃত্তি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি গুটিগুটি পায়ে ৫০ বছরে পা দিল সুনামের সাথে সংস্থাটি তার কর্তব্যে অবিচল রয়েছে। শুধু বইয়ের মধ্যে ডুবে থাকলে হবেনা যুবসমাজকে সংস্কৃতি চর্চার মধ্যে এগিয়ে আসতে হবে। আজকে ছেলেমেয়েদের কাছে বাবা-মা মেয়েরা শুধুই পড়াশোনার প্রতি ইঁদুর দৌড়ে অংশগ্রহণ করানোর লক্ষ্যে ছুটে বেড়াচ্ছেন সংস্কৃতি চর্চার প্রতি ছেলেমেয়েদের যে একটু সময় দেওয়া দরকার সেদিকে খুব কম অভিভাবকই নজর দিচ্ছেন সকলেই ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হোক আমার ছেলে মেয়ে এদিকেই বেশি ঝোঁক দিচ্ছেন। দেখলে কষ্ট হয় যে আজকাল ছেলেমেয়েদের মধ্য থেকে মানবিকতা, শ্রদ্ধাবোধ হারিয়ে যাচ্ছে আর এই জন্য তাই আমরাই। সংলাপের ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের সমবেত আবৃত্তি ‘পদাতিক’ ও পার্থ কুণ্ডু ও অন্যান্যদের সমবেত আবৃত্তি, নন্দিতা কুণ্ডুর একক আবৃত্তি মন ছুঁয়ে যায়। অনুষ্ঠানে সাহিত্যিক দেবব্রত সিংহ ও বাচিক শিল্পী দেবব্রত সেনকে সংস্থার পক্ষ থেকে সম্বর্ধিত করা হয়। অনুষ্ঠানে বাড়তি পাওনা হিসেবে পাওয়া গেল আকাশবাণীর ঘোষক তথা প্রোগ্রাম কোঅর্ডিনেটর বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী শৈলেন চক্রবর্তীকে ।সংলাপের সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষ উদযাপন উপলক্ষ্যে শুধুমাত্র কবিতার অনুষ্ঠানের পরিপূর্ণ প্রেক্ষাগৃহ বারংবার করতালি মুখরিত হয়ে উঠেছে। অতিথিদের সকলের কথায় ফুটে উঠেছে সংলাপ তার কর্তব্যে অবিচল থেকে শতবর্ষের পথে এগিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয়। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সুচারুভাবে পরিচালনা করেন আকাশবাণীর ঘোষক তথা প্রোগ্রাম কোঅর্ডিনেটর বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী শৈলেন চক্রবর্তী।