৬ দিনের মধ্যে ষাঁড়ের আক্রমণে মরণাপন্ন রোগী হেঁটে বেড়ালো

Spread the love

৬ দিনের মধ্যে ষাঁড়ের আক্রমণে মরণাপন্ন রোগী হেঁটে বেড়ালো

স্থিতিস্থাপকতা এবং চিকিৎসা দক্ষতার একটি অসাধারণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো চুনাভাটির নারায়ণা হাসপাতাল। সত্তোরোর্ধ একজন মহিলা যিনি ষাঁড়ের শিং-গুঁতোয় প্রায় মরণাপন্ন হয়ে গিয়েছিলেন তাকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসে। মারাত্মক এই অপারেশনটি করেন হাওড়া ও চুনাভাটির নারায়ণা হাসপাতালের কনসালটেন্ট সার্জন ডাঃ শুভম কান্তি বেরা, তার অনুকরণীয় প্রতিক্রিয়াশীলতা এবং দক্ষতা প্রদর্শন করেছেন।

সম্প্রতি এই হাড়হিম করা ঘটনার সম্মুখীন হন হাওড়ার সাঁকরাইলের বাসিন্দা ৭১ বছর বয়সী একজন মহিলা। মাঠে কাজ করার সময় একটি ক্ষুব্ধ ষাঁড়ের সাথে মারাত্মক মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি৷ ভদ্রমহিলার পেট ষাঁড়ের শিং দ্বারা ফুটো হয়ে গিয়েছিল, যার ফলে তার অন্ত্রগুলি উন্মুক্ত হয়ে গিয়েছিল এবং পেটের পেশী সম্পূর্ণ ছিঁড়ে গিয়েছিল। ঘটনাটি জানতে পারার সাথে সাথে, ডাঃ বেরা স্থানীয়দের অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন, তাদের পরামর্শ দেওয়া হয় ক্ষতটি একটি পরিষ্কার কাপড় বা জীবাণুমুক্ত ব্যান্ডেজ দিয়ে ঢেকে রাখতে, উষ্ণতা এবং আর্দ্রতা বজায় রাখতে এবং দ্রুত তাকে চুনাভাটির নারায়ণা হাসপাতালে নিয়ে আসতে।

হাসপাতালে নিয়ে আসার পর ডাঃ বেরা সহ তার গোটা মেডিকেল টিম ওই মহিলার শারীরিক অবস্থা দেখে চমকে ওঠেন। কিন্তু, প্রতিকূল পরিস্থিতি সত্ত্বেও, ডাক্তার, নার্স এবং অন্যান্য চিকিৎসা কর্মীদের সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টা একটি দ্রুত এবং কার্যকর প্রতিক্রিয়া নিশ্চিত করে।

ডাঃ বেরা তার প্রাথমিক মতামত জানান , “দুর্ঘটনার নৃশংসতা আমি আগে যা দেখেছি এটি তার থেকে ভিন্ন ছিল। তার অন্ত্রগুলি উন্মুক্ত হয়ে গিয়েছিল, এবং তার পুরো পেটের পেশীগুলি ছিঁড়ে গিয়েছিল। কেসটি অত্যন্ত জটিল ছিল, তবে আমাদের সম্মিলিত মেডিকেল টিম অত্যন্ত কঠোর পরিশ্রম করেছে।”

ডাঃ বেরা নির্ভুলতা এবং দক্ষতার সাথে অস্ত্রোপচারটি সম্পন্ন করেন। পেটের ছেঁড়া পেশীগুলি সফলভাবে মেরামত করা হয়। সৌভাগ্যক্রমে, পেটের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলি অক্ষত ছিল। রোগীকে সাধারণ ওয়ার্ডে স্থানান্তরিত করার আগে বিশেষ তত্ত্বাবধানে নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে (আইসিইউ) ৩-৪ দিন রাখা হয়।

ডাঃ বেরা সফল অস্ত্রোপচারের পর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেছেন, “এই ধরনের ঘটনা বিরল, এবং আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি যে রোগীর পুনরুদ্ধারের জন্য অবদান রাখতে পেরেছি। পুরো মেডিকেল টিমের সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল, এবং আমি অত্যন্ত আনন্দিত তাকে সুস্থ ভাবে চলা ফেরা করতে দেখে।”

এখানেই শেষ নয়, ৬ তম পোস্টোপারেটিভ দিনে হাঁটার সময় তার উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি স্পষ্ট লক্ষ্য করা যায়। যা চুনাভাটির নারায়ণা হাসপাতাল প্রদত্ত চিকিৎসা সেবার কার্যকারিতা অন্যতম নিদর্শন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *