খায়রুল আনাম (সম্পাদক – সাপ্তাহিক বীরভূমের কথা)
দলত্যাগীদের দলে আশ্রয় দেওয়ার অনিবার্য পরিণতিতে, রাজনৈতিক দিক থেকে উত্তেজনাপূর্ণ বীরভূমের নানুর থানার কীর্ণাহার এলাকার সরডাঙা গ্রামে শাসক দলের দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ ও বোমাবাজির ঘটনা ঘটলো। রাতের দিকে দু’টি গোষ্ঠীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ব্যাপক বোমাবাজির সাথে সাথে ধারালো অস্ত্র নিয়েও একে অপরকে আক্রমণ করে বলে অভিযোগ। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত এক গোষ্ঠীর নেতা শেখ বাবরকে নিয়ে এসে ভর্তি করা হয়েছে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে। আহত শেখ বাবর ওই এলাকায় শাসক দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত আহ্বায়ক স্বপন মণ্ডলের অনুগামী হিসাবে পরিচিত। বিগত লোকসভা নির্বাচনের পরে তিনি সিপিএম ছেড়ে শাসক শিবিরে এসে নাম লেখান। অপর দিকে লোকসভা নির্বাচনের আগেই সিপিএম ছেড়ে শাসক শিবিরে এসে নাম লেখান শেখ বাদশা। তিনি এলাকায় শাসক দলের নানুর ব্লক কার্যকরী সভাপতি শেখ কাজলের অনুগামী হিসাবে পরিচিত। শাসক দলের নানুর ব্লক সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য স্বীকার করে নিয়েছেন যে, দু’পক্ষই তাঁঁদের দলের কর্মী। এই ঘটনার সঙ্গে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কোনও যোগ নেই। পারিবারিক বিরোধের জেরেই এই সংঘর্ষ ঘটেছে। শেখ বাবরের মা আলিয়া বেগমের অভিযোগ, আমার ছেলে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা নয়-ছয় করার প্রতিবাদ করায় শেখ বাদশারা তাঁঁকে আক্রমণ করে এবং বোমাবাজি করে তাঁঁদের ভয় দেখায়। অপর দিকে শেখ বাদশার বাবা শেখ মন্টুর বক্তব্য, আমার ছেলেই গ্রামে দলের নেতৃত্ব দিতো। তাঁর হাত থেকে নেতৃত্ব কেড়ে নিতেই শেখ বাবর আমাদের উপরে চড়াও হয়। ওরাই বোমা নিয়ে আক্রমণ করে বলে তাঁঁর অভিযোগ। নানুরে শাসক দলের গোষ্ঠী বিবাদ ও গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনা নতুন নয়। বিভিন্ন সময়ই শাসক দল এখানে গোষ্ঠী বিবাদ ও গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িয়েছে। যথেচ্ছভাবে ব্যবহৃত হয়েছে বোমা-গুলি। ঘটেছে অগ্নি সংযোগ ও প্রাণহানির ঘটনা। অথচ একটা সময় আজকের শাসক দল বিরোধী আসনে থাকার সময়, সংঘবদ্ধভাবে থাকার ফলেই নানুরের বামেদের শক্ত ঘাঁঁটি ভেঙে দিয়ে এখানে বিধানসভায় ক্ষমতায় আসতে পেরেছিল। আবার গোষ্ঠী বিবাদের জেরেই এখানকার জেতা আসনটি বামেদের কাছে হারাতে হয় শাসক শিবিরকে। আবার এই গোষ্ঠী বিবাদের জেরেই নানুরের প্রাক্তন বিধায়ক গিয়ে নাম লিখিয়েছেন বিজেপি-র খাতায়। এই সন্ধিক্ষণেই এগিয়ে আসছে বিধানসভা নির্বাচন। তাই, আবারও যদি এখানে শাসক শিবির গোষ্ঠী সংঘর্ষে জড়ায় তাহলে, শাসক শিবিরের কাছে তার ফল ভালো নাও হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই ।।