ঝাড়খন্ডের মানসিক ভারসাম্যহীন কে বাড়ি পৌঁছে দিল মঙ্গলকোট পুলিশ
পারিজাত মোল্লা ও আমিরুল ইসলাম
; করোনা আবহে কড়া লকডাউনে মানবিক মুখ বারবার ফুটে উঠছে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের একাংশের। গত শুক্রবার দুপুরে অভুক্ত দুই ভবঘুরেদের নিজেদের আহার তুলে দেন ভাতার থানার টহলরত পুলিশ অফিসার সফিউদ্দিন। আবার অন্যদিকে মঙ্গলকোট থানার পুলিশ নিজেদের খরচে প্রায় দুশো কিমি দুরে থাকা ঝাড়খন্ডের এক মানসিক ভারসাম্যহীন এক নাবালক কে বাড়ি পৌঁছে দিল। সবটাই মঙ্গলকোট ওসি মিথুন ঘোষের উদ্যোগে। তিনি একটু প্রচারবিমুখ। তবে তিনি বললেন – ” পুলিশের চাকরিতে কোন অসহায় ব্যক্তি কে তার বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া আলাদা আনন্দের”। মঙ্গলকোট থানার পুলিশের মানবিক উদ্যোগে মানসিক ভারসাম্যহীন আদিবাসী যুবক ফিরে গেল বাড়িতে।পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিক মিথুন ঘোষের মানবিক উদ্যোগে আদিবাসী সম্প্রদায়ের এক যুবক ফিরে পেল তার পরিবারকে।গত চারদিন আগে এক মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক মঙ্গলকোটের নতুনহাটে ইতস্ততভাবে ঘোরাফেরা করছিল ।স্থানীয়রা খবর দেয় মঙ্গলকোট থানাতে। ওই মানসিক ভারসাম্যহীন যুবককে মঙ্গলকোট থানার পুলিশ থানায় নিয়ে যায়।দুবেলা খাওয়ার পাশাপাশি তার সমস্ত দায়িত্ব নেয় মঙ্গলকোট থানার পুলিশ। পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারে – তার বাড়ি ঝাড়খন্ড রাজ্যের পাকুড় জেলার মহেশপুর থানার খেরুনদোলা গ্রামে।মঙ্গলকোট থানার পুলিশ মহেশপুর থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে।ওই যুবকের নাম জানতে পারেন ইন্দ্রজিৎ সরেন।গত দশদিন আগে ইন্দ্রজিৎ সরেন বাড়ি থেকে চলে আসে কাউকে কিছু না বলে। সে মানসিক ভারসাম্যহীন।বাড়ির লোক এলাকায় খোঁজাখুঁজি করলেও তার কোন হদিস মেলেনি।তার বাড়ির লোক কে পুলিশ বিষয়টি জানায় – ইন্দ্রজিৎ বর্তমানে মঙ্গলকোট থানার পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।ইন্দ্রজিতের দাদা প্রসেনজিৎ সরেন পাকুর থানার পুলিশকে তাদের অর্থনৈতিক বেহাল কাঠামোর কথা বলেন এবং থানায় আর্জি জানায় তার ভাইকে আনতে যাওয়ার মত তাদের কোন সমর্থন নেই। গাড়ি ভাড়া দিয়ে ভাইকে আনতে পারবেনা । অর্থনৈতিক কাঠামো খুবই খারাপ এবং লকডাউন এর জন্য অর্থনৈতিক কাঠামো আরো খারাপ হয়ে গেছে।পাকুর থানা তাদের অসহায় অবস্থার কথা মঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিক মিথুন ঘোষ কে জানায়।মঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিক মিথুন ঘোষ তিনি পাকুর থানাকে জানিয়ে দেন – এএসআই গিয়াস উদ্দিন মন্ডল তাকে বাড়ি পৌঁছে দেবে থানার গাড়ি করে।আজ অর্থাৎ শনিবার মঙ্গলকোট থানার এএসআই গিয়াস উদ্দিন মন্ডল, কনস্টেবল প্রদীপ গুপ্তা ও হোমগার্ড চন্দন দাস এই তিনজন পুলিশ কর্মী ওই মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক ইন্দ্রজিৎ সেন কে প্রায় দুশো কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিয়ে তার গ্রামের বাড়িতে তার বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিল। মঙ্গলকোট থানার মানবিক উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন ওই মানসিক ভারসাম্যহীন যুবকের পরিবারের মানুষজন।