মোল্লা জসিমউদ্দিন টিপু,
রবিবার বিকেলে কলকাতার হাডকো মোড় সংলগ্ন বিধান শিশু উদ্যান থেকে এক প্রতিবাদী মিছিল বের হয়।এই মিছিলে পা মেলান বিধান শিশু উদ্যানের পড়ুয়াদের অভিভাবক – শিক্ষক শিক্ষিকা সহ এলাকার নাগরিক সমাজ।মিছিল টি উল্টোডাঙ্গার হাডকো মোড় থেকে কাঁকুরগাছি হয়ে মানিকতলায় শেষ হয়।মিছিল শেষে এক প্রতিনিধিদল মানিকতলা থানায় মহাকাশ বিজ্ঞানী কে খুনের ষড়যন্ত্র নিয়ে উচ্চপর্যায়ের তদন্তের দাবি করে স্মারকলিপি জমা দেন।করোনা স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে প্রায় ৫০০ জন প্রতিবাদী এই মিছিলের মাধ্যমে মহাকাশ বিজ্ঞানে ভেতরকার লবিবাজি নিয়ে সচেতনতা প্রচার করে থাকে।গত ৫ জানুয়ারি সোশাল মিডিয়ায় ফেসবুকে তাঁকে খুনের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে তা তথ্য প্রমাণ সহ পোস্ট করেছিলেন ইসরোর গর্বিত বাঙালি বিজ্ঞানী তপন মিশ্র।কেন তাঁকে খুনের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে, কেনই বা তিনি দেশ কে মহাকাশ নিয়ে আশাতীত সাফল্য এনে দিয়েও খুন হয়ে যাওয়ার ভয়ে সিঁটিয়ে রয়েছেন। তা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে উচ্চপর্যায়ের তদন্তও দাবি করেছেন তিনি।বিশেষ সুত্রে প্রকাশ, ইসরোর একাংশে মহাকাশ নিয়ে ( বিদেশ থেকে যন্ত্রাংশ কেনার) কাটমানি নিয়ে তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। যদিও ইসরোর তরফে কোন মন্তব্য মেলেনি।ঘটনা যাই হোক, খুনের একাধিকবার চেস্টা করার যে অভিযোগ উঠছে তার পুর্নাঙ্গ তদন্তের দাবি উঠছে আম বাঙালির মনে। বিধান শিশু উদ্যানের সম্পাদক গৌতম তালুকদার জানিয়েছেন – ” আমরা মহাকাশ নিয়ে গর্বিত বাঙালি বিজ্ঞানী তপন মিশ্র এর জীবন নিয়ে খুব সংশয়ে রয়েছি।বিষয়টি দেশের আভ্যন্তরীণ ও বিদেশে কর্মরত কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা পরখ করে দেখুন অভিযোগ টি”। শেষ পর্যন্ত বেড়ালের গলায় ঘন্টাটি বেঁধেই ফেললেন বিশিষ্ট মহাকাশ বিজ্ঞানী ড. তপন মিশ্র।গত ৫ জানুয়ারি মঙ্গলবার ভারতের অন্যতম প্রথম সারির মহাকাশ বিজ্ঞানী তপন মিশ্র ফেসবুকের পাতায় তাঁর কর্মজীবনের শেষ কয়েকটি বছরের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা লিখেছেন। কিভাবে ISRO অর্ন্তগত অত্যন্ত প্রশিক্ষিত ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ তাঁকে সুপরিকল্পিতভাবে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছে। ড. মিশ্রের অপরাধ – তিনি মহাকাশ গবেষণা সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে বেশকিছু উল্লেখযোগ্য আবিষ্কার করেছিলেন এবং ISRO কে অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংস্থা হিসেবে বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠিত করতে যোগ্য নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। একথা অনস্বীকার্য যে, ISRO কে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে যথেষ্ট সময় লাগবে। কিন্তু আমাদের বিজ্ঞানীরা তপন মিশ্রের সুযোগ্য পরিচালনায় স্যাটেলাইটের বহু গুরুত্বপূর্ণ payload তৈরী করতে সক্ষম হয়েছিলেন আহমেদাবাদের SPACE APPLICATIONS CENTRE (SAC) এ। মনে হয় এখানেই ISRO এর একটি প্রভাবশালী অংশ যাঁরা সবকিছুই বিদেশ থেকে আমদানি করতে সচ্ছন্দবোধ করেন তাঁরা অসুবিধায় পরে গেলেন। চাইছিলেন ড. তপন মিশ্রকে পৃথিবী থেকে একেবারেই সরিয়ে দিতে। ইতিহাস ঘাটলে দেখা যাবে আমাদের দেশের বহু বিশিষ্ট পরমানু বা মহাকাশ বিজ্ঞানীদের বিভিন্ন সময়ে রহস্যজনক মৃত্যু ঘটেছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেইসব মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করা হয়নি। ড. তপন মিশ্রের ফেসবুকের পোস্টটি মন দিয়ে পড়লে বোঝা যাবে – তিনি বেড়ালের গলায় ঘন্টাটি বেঁধেছেন।৫ জানুয়ারির ড. তপন মিশ্রের পোস্টটির পর থেকেই আমাদের দেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত তোলপাড়। বিভিন্ন সর্বভারতীয় চ্যানেলে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।ঘরের মধ্যে বিষধর সাপ ঢুকিয়ে সর্পদংশনে মৃত্যুর ষড়যন্ত্র কিংবা খাবারে বিষপ্রয়োগ ঘটনা গুলি আঁতকে দেয় বাঙালিদের কে। বিজ্ঞানী তপন মিশ্রর সময়কালে এবং পরবর্তীতে ইসরোর পক্ষে মহাকাশ নিয়ে বিদেশি যন্ত্রাংশ কিনবার টেন্ডার গুলি দেখলে সুত্র মিলতে পারে বলে গোয়েন্দাদের একাংশ মনে করছেন।ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে বাংলার প্রখ্যাত প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী বিধান চন্দ্র রায় নামাঙ্কিত বিধান শিশু উদ্যানের তরফে বাঙালি মহাকাশ বিজ্ঞানী কে নিয়ে প্রতিবাদী মিছিল বের হল রবিবার বিকেলে।পরে তাঁরা মানিকতলা থানায় স্মারকলিপি জমা দেন বিজ্ঞানীর উপর গভীর ষড়যন্ত্রের উচ্চপর্যায়ের তদন্তের দাবিতে।উল্লেখ্য, বাংলায় শিক্ষা সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে বিধান শিশু উদ্যান বাঙালি বুদ্ধিজীবী মহলে পরিচিত এক নাম।