মোল্লা জসিমউদ্দিন,
একুশে বিধানসভা নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলির মাঠে ময়দানে লড়াইটা যেমন জমজমাট হয়ে উঠছে। ঠিক তেমনি আইনী লড়াইটাও হাড্ডাহাড্ডি চলছে কলকাতা হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্টে। একুশে বিধানসভা নির্বাচনে প্রথম দফার ভোটগ্রহণে নন্দীগ্রাম যেমন হেভিওয়েট আসন হিসাবে গোটা দেশবাসীর নজর রয়েছে। ঠিক তেমনি দুই দুঁদে পুলিশ কর্তার রাজনৈতিক লড়াইয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরা বিধানসভা কেন্দ্র আলোচিত সব মহলে।আইপিএস মহলে এই দুই প্রাক্তন পুলিশ কর্তা একদা মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠবৃত্তে পড়তেন। এখন সবই অতীত।বাম জমানায় তৃনমূল নেত্রীর একদা দু চোখের বিষ আইপিএস এখন তাঁরই দলের প্রার্থী! আবার জঙ্গলমহলের ‘মা’ এর কন্যা বর্তমানে তৃণমূলের প্রধান প্রতিপক্ষ বিজেপির প্রার্থী? তর্কবিতর্ক এর মধ্যেই মঙ্গলবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্টে বিজেপির রাজ্য নেত্রী ভারতী ঘোষের দাখিল করা মামলার শুনানি চলে। সেখানে দীর্ঘ সওয়াল-জবাবের পর সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ মামলার পিটিশনকারী ভারতী ঘোষ কে আগামী ১০ মে অবধি ‘সুপ্রিম’ রক্ষাকবচ দিয়েছে। পাশাপাশি মনোনয়ন জমা দেওয়া থেকে প্রচারে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট এর এই অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ জারী তে বড় জয় দেখছে বঙ্গ বিজেপি শিবির । একদা পশ্চিম মেদনীপুরের পুলিশসুপার ভারতী ঘোষ বর্তমানে এই জেলারই অন্তর্ভুক্ত ডেবরা বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী। আবার এই বিধানসভা কেন্দ্রের ‘ভূমিপুত্র’ আইপিএস ডঃ হুমায়ুন কবীর সম্প্রতি চুঁচড়া পুলিশ কমিশনারের পদে ইস্তফা দিয়ে এই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী। সুপ্রিম কোর্টে বিজেপি নেত্রী ভারতী ঘোষ তাঁর বিরুদ্ধে ৩০ টি ফৌজদারি মামলায় এফআইআর এবং নিম্ন আদালতে জারি হওয়া জামিন অযোগ্য ধারায় ওয়ারেন্ট খারিজের আবেদন রেখেছিলেন। প্রাক্তন পুলিশ কর্তা ভারতী ঘোষের দাবি, গত লোকসভা নির্বাচনে(২০১৯) এর আগে থেকেই রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে রাজ্যের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস একের পর এক মিথ্যা মামলায় অভিযুক্ত করছে।যাতে আদালতে আইনী লড়াইয়ে সদা ব্যস্ত রাখা যায়।পাশাপাশি রাজনৈতিক ময়দানে অনুপস্থিতি আনা যায়।বেশ কিছু এফআইআর অত্যন্ত গোপনীয়তা রেখে নিম্ন আদালতে ওয়ারেন্ট জারী করা হয়েছে বলে দাবি মামলাকারীর।এমনকি সেগুলি আদালতে ডিজিটাল আপলোড করতেও গড়িমসি দেখা গেছে। এমনকি ভারতী ঘোষ দাবি করেছেন যে, তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা গুলির অভিযোগকারী হিসাবে রয়েছে ধর্ষণ এবং পাচার মামলায় অভিযুক্তরা! তবে রাজ্যের আইনজীবীর দাবি – ‘ আদালতের ধারাবাহিক হাজিরা সহ সমন এড়িয়েছেন।তাই ওয়ারেন্ট জারী করা হয়েছে আদালতের পক্ষ থেকে ‘। সুপ্রিম কোর্টে মঙ্গলবার দুপুরে রাজ্যের আইনজীবী দাবি করেন – ‘ এখন কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের আওতায় পুলিশ রয়েছে। তাই এইবিধ ফৌজদারি মামলায় পুলিশের অতিসক্রিয়তার অভিযোগ ঠিক নয়’। তবে সুপ্রিম কোর্ট এদিন রাজ্যের আইনজীবী কে জানায় -‘ যখন পুলিশ এফআইআর রুজু করেছিল, তখন কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন ছিলনা’। সুপ্রিম কোর্ট মামলাকারী প্রাক্তন পুলিশ কর্তা ভারতী ঘোষ কে আগামী ১০ মে অবধি গ্রেপ্তারিতে অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ জারী করে। সেইসাথে মনোনয়ন জমা দেওয়া থেকে প্রচারে যাওয়ার অনুমতি দেয় সুপ্রিম কোর্ট।