জয়পুর বিধানসভার তৃণমূল প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা ডিভিশন বেঞ্চের

Spread the love

মোল্লা জসিমউদ্দিন, ১২ মার্চ,
চব্বিশ ঘন্টার মধ্যেই ছবি বদলে গেল রাজরাজনীতিতে।৩ টি আসন পাহাড়ের বিমল গুরঙদের উপর ছেড়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ২৯১ টি বিধানসভা আসনে মনোনয়ন জমা দিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। সেখানে গত বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের সিঙ্গেল বেঞ্চে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের মনোনয়ন বাতিলের নির্দেশিকায় প্রার্থীর মনোনয়নে বৈধতা মিলেছিল।তা তড়িঘড়ি কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে আপিল পিটিশনে সিঙ্গেল বেঞ্চের বৈধতা খারিজ করে দেওয়া হলো। অর্থাৎ পুরুলিয়ার জয়পুর বিধানসভার নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী উজ্জ্বল কুমারের মনোনয়ন বাতিলের নির্দেশিকা যে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন জারি করেছিল,তা এদিন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ বৈধতা দেয়। মনোনয়ন পেশের শেষদিনে জয়পুর বিধানসভার কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী উজ্জ্বল কুমার মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন ঝালদা মহকুমাশাসক অফিসে।সেই মনোনয়ন দাখিলে হলফনামায় তথ্য ভূল থাকায় পুনরায় তাঁকে মনোনয়ন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন। সেখানেও মনোনয়ন পেশে তারিখ বিভ্রাট ছিল।তাই তৃণমূল প্রার্থীর মনোনয়ন টি বাতিল ঘোষণা করে কমিশন। শুধু তৃণমূল প্রার্থীর নয় তৃণমূলের একাংশের গোঁজপ্রার্থী, জনতা দল ইউনাইটেড এবং ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চার প্রার্থীদের মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন। আগামী ২৭ ই মার্চ একুশে বিধানসভা নির্বাচনে প্রথম দফার ভোটগ্রহণ। তাই নির্বাচনী প্রস্তুতি তুঙ্গে প্রতিটি রাজনৈতিক দলেরই।পুরুলিয়ার জয়পুর (২৪১ নং)  বিধানসভার আসন নিয়ে ছিল তুমুল রাজনৈতিক উৎসাহ উদ্দীপনা। একাধারে গত লোকসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে এগিয়ে থাকা বিজেপি হয়তো ভেবেছিল ফাকা মাঠে গোল ( জিতবার)দেওয়ার। অপরদিকে শাসক দল তৃণমূল অবশ্য বিকল্প হিসাবে এক নির্দল প্রার্থী প্রস্তুত রেখেছিল।তবে তৃণমূলের অন্দরে ছিল চরম হতাশা।কেননা জয়পুরের তৃণমূল প্রার্থী উজ্জ্বল কুমার একাধারে আড়শা পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি আবার তিনিই ব্লক তৃণমূল সভাপতি। তাই জয়পুরে বিধানসভা ভোট ঘিরে ছিল সাজোসাজো রব।গত বুধবার রাতে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব ওয়েবসাইটে যখন দেখাচ্ছিল জয়পুর বিধানসভার নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী উজ্জ্বল কুমারের মনোনয়ন ‘রিজেক্টেড’। তখন সারা বাংলা জুড়ে তৃনমূলের ২৯১ টি আসনের জায়গায় একটি কমে মনে হচ্ছিল ২৯০ টি আসনে যেন তৃণমূল প্রার্থী! উল্লেখ্য, দার্জিলিঙে ৩ টি আসন ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বিমল গুরুঙের দল কে। যাবতীয় রাজনৈতিক উত্তেজনার অবসান প্রাথমিকভাবে ঘটেছিল গতবৃহস্পতিবার  কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের সিঙ্গেল বেঞ্চে।পুরুলিয়ার  জয়পুর বিধানসভার তৃণমূল প্রার্থী উজ্জ্বল কুমার তাঁর কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন কর্তৃক মনোনয়ন বাতিলের নির্দেশের বিরুদ্ধে মামলা টি দাখিল করেছিলেন। ওইদিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের মনোনয়ন বাতিলের নির্দেশ টি খারিজ করে দিয়েছিলেন।বিচারপতি ওইদিন এজলাসে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী কে সওয়াল-জবাব পর্বে বলেন ‘ শুধুমাত্র তারিখ ভূলে মনোনয়ন বাতিল করা যায়না।’ বিচারপতি  নির্বাচন কমিশনের শুধুমাত্র তারিখ ভূলের জন্য মনোনয়ন বাতিল কে সামান্য ভূল ( তারিখ ভূল কে) বলে জানিয়েছিলেন।আগামী ২৭ মার্চ একুশে বিধানসভা নির্বাচনে প্রথম দফার ভোটগ্রহণের জন্য গত ৯ মার্চ ছিল মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন।ঝালদা মহকুমা শাসকের অফিসে জয়পুর বিধানসভার তৃণমূল প্রার্থী উজ্জ্বল কুমার তাঁর পেশ করা মনোনয়ন পত্রে ৯ ই মার্চের পরিবর্তে ৮ ই মার্চ লিখে ফেলেছিলেন। আর এতেই কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন গত বুধবার রাতে তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে জয়পুরের তৃনমূল প্রার্থী উজ্জ্বল কুমারের মনোনয়ন বাতিল দেখায়।তড়িঘড়ি বিষয়টি ওই রাতেই তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব কে অবগত করান এই প্রার্থী। অতি দ্রুত তৃনমূল লিগ্যাল সেলের আইনজীবীরা  দ্রুত শুনানি চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দারস্থ হয়েছিলেন। সেখানে  কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী  ভট্টাচার্যের এজলাসে এই মামলার উভয়পক্ষের শুনানিতে বিচারপতি কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের বাতিল নির্দেশিকা কে খারিজ করে দিয়েছিলেন।সিঙ্গেল বেঞ্চের এই নির্দেশে শাসক দল তৃণমূল উজ্জীবিত হলেও তা শুক্রবার পাল্টে  যায় হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের মনোনয়ন বাতিলের নির্দেশিকায় শিলমোহর দেওয়াতে।অর্থাৎ একটি আসন তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্বের একেওপরের অবিশ্বাসী মনোভাবে হেরে গেল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *