দরজায় কড়া নাড়ছে পুরভোট, পরাজয়ের ক্ষত মেরামতে পদে বদল ঘটাচ্ছে শাসক শিবির

Spread the love

খায়রুল আনাম,

 দরজায় কড়া নাড়ছে পুরভোট
 পরাজয়ের ক্ষত মেরামতে পদে বদল ঘটাচ্ছে শাসক   শিবির
           
সদ্য সমাপ্ত রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে বীরভূম জেলাকে বিরোধী শূন্য করার কথা বললেও, তাতে সফল হয়নি শাসক তৃণমূল কংগ্রেস।  বিধানসভার  ১১ টি আসনের মধ্যে ১০টি নিয়ে তাদের সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে।  দুবরাজপুর বিধানসভা আসনটি কেবলমাত্র বিজেপির কাছেই যে হারাতে হয়েছে তাই নয়, এরমধ্যে দিয়ে জেলায় এই প্রথম বিজেপি কোনও বিধানসভা আসন দখলের স্বাদও পেলো। যা জেলা তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বের কাছে চরম অস্বস্তির কারণও হয়ে গিয়েছে।  দুবরাজপুর বিধানসভা আসনটি হাতছাড়া হওয়ার পিছনে তৃণমূল কংগ্রেসের  প্রার্থী নির্বাচনে নানান জটিলতাও কাজ করেছে। ওই কেন্দ্রের বিদায়ী বিধায়ক নরেশচন্দ্র বাউড়িকে পুনরায় প্রার্থী  করার কথা বলে, সেই মতো প্রচারও শুরু হয়। কিন্তু হঠাতই প্রার্থী বদল করে অসীমা ধীবরকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে তৃণমূল কংগ্রেস প্রচার থেকে শুরু করে দেওয়াল লিখনের কাজও শুরু করে দেয়। আর অসীমা ধীবরকে প্রার্থী  করায় দলের একাংশ তার তীব্র বিরোধীতা করে দলীয় নেতৃত্বের কাছে প্রার্থী বদলের দাবি জানান। এরপরই দল অসীমা ধীবরকে প্রচার বন্ধ করতে বললে, নরেশচন্দ্র বাউড়ির  পুনরায় প্রার্থী  হওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়।   কিন্তু দল সে পথে না হেঁঁটে  অন্যত্র থেকে নবাগত দেবব্রত সাহাকে দুবরাজপুর কেন্দ্রে দলীয় প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করার মধ্যে দিয়ে  আসনটি হাতছাড়া করার পথ প্রশস্ত করে ফেলে।  এবং ফলাফল তাই-ই হয়। দুবরাজপুর বিধানসভা আসনটি বীরভূম লোকসভার অধীন। যার সাংসদ হিসেবে রয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের শতাব্দী রায়। তাঁকেও সে ভাবে পাওয়া যায়নি নির্বাচনী প্রচার কাজে।  জেলার এই আসনটিতে বিজেপির  অনুপ সাহা জয়ী হয়ে শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের জেলাকে বিরোধী শূন্য করার স্বপ্ন ভেঙে দেয়।      ভোট পরবর্তী সময়ে শাসক তৃণমূল কংগ্রেস তাদের বিশ্লেষণে দেখছে যে, আসন সংখ্যায় তারা জয়ী হলেও, জেলায় অতীতের চেয়ে এবারের বিধানসভা নির্বাচনে তাদের ভাঁড়ার অনেকখানিই ফাঁকা হয়েছে। আর সেই ভাঁড়ার ঘরে সিঁঁদ কেটেছে বিজেপি।  এবং পুর এলাকার ভোটাররা তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। ইতিমধ্যেই জেলার ৬ টি পুরসভার মধ্যে নলহাটি পুরসভাকে বাদ  দিয়ে বাকী ৫টি পুরসভা বোলপুর, সিউড়ী, দুবরাজপুর, সাঁইথিয়া ও রামপুরহাট পুর সভার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় পুরসভাগুলিতে প্রশাসক বসিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। পুরসভাগুলিতে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় থাকায়, প্রশাসক হিসেবে বিদায়ী পুরবোর্ডের চেয়ারম্যানদের চেয়ারপার্সন হিসেবে বসিয়ে কাজ চালানো হচ্ছিল। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলে পুর এলাকাগুলিতে দল পিছিয়ে পড়ায় এবার পুরসভাগুলিতে চেয়ারপার্সন পদেও বদল ঘটাতে শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। রামপুরহাট পুরসভার চেয়ারপার্সন অশ্বিনি তেওয়ারিকে সরিয়ে তাঁর জায়গায় মীনাক্ষী ভকতকে বসানো হয়েছে। বোলপুর পুরসভার চেয়ারপার্সন সুশান্ত ভকতকে সরিয়ে সেখানে পর্ণা ঘোষকে বসানো হয়েছে।   এবার দুবরাজপুর পুরসভার চেয়ারপার্সন পীযূষ পাণ্ডেকে চেয়ারপার্সনের পদ থেকে সরানো  না হলেও, তাঁকে দুবরাজপুর শহর সভাপতির  পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে ওই পদে বসানো হলো  বিজেপি থেকে  আসা দলের তরুণ নেতা মানিক মুখোপাধ্যায়কে।  মানিক মুখোপাধ্যায়  ২০১৫ সালে বিজেপি ত্যাগ করে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেও এতোদিন পর্যন্ত তিনি দলের কোনও পদ পাননি।   এবার তাঁকে দুবরাজপুর শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতির পদে বসিয়ে আসন্ন পুর নির্বাচনে   তাঁর হাতেই  পুর নির্বাচনের প্রার্থী মনোনয়নের লাগামটিও তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেল বলেই  মনে করা হচ্ছে ।।         

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *