মন্ত্রিত্বের দড়ি নিয়ে টানাটানি গুজরাটে

Spread the love

মন্ত্রিত্বের দড়ি নিয়ে টানাটানি গুজরাটে 

আবুল কায়েম
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আঁতুড়ঘর গুজরাটে এবার বিজেপির বিবাদ প্রকাশ্যে।ভূপেন্দ্র পটেলের মন্ত্রীসভায় কারা কারা জায়গা পাবেন তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে তীব্র চাপানউতোর চলছে। বিদায়ী মন্ত্রীরা সবাই জায়গা পাচ্ছেন না এটা একরকম নিশ্চিত। বিজেপি  রাজ্য সভাপতি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, বুধবার বেলা ২টা থেকে চারটের মধ্যে শপথ নেবে নয়া মন্ত্রিসভা। সেইমতো রাজভবন চত্বরে পোস্টারও পড়ে। দুপুরে রাজভবন গিয়ে সাংবাদিকরা দেখেন, লিম্বডির বিধায়ক কিরিটসিন রানার সমর্থকরা সুরেন্দ্রনগর থেকে সেখানে হাজির। রানা নতুন মন্ত্রিদের মধ্যে থাকছেন বলে খবর ছিল তাঁদের কাছে। কিন্তু ততক্ষণে শপথগ্রহণের বিজ্ঞপ্তির পোস্টার খুলে ফেলা হয়। তার কিছুক্ষণ বাদে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরের সরকারি হ্যান্ডলে ট্যুইট করা হয়, বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টায় শপথগ্রহণ হবে। কিন্তু সেই ট্যুইট মুছে ফেলে আবার নতুন ট্যুইট করা হয়। সব মিলিয়ে নাটকীয়তা বহাল থাকে।বিজয় রূপানি মন্ত্রিসভার সদস্য জনৈক বিধায়ক জানান, তাঁরা কয়েকজন মিলে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে তীব্র প্রতিবাদ জানান, যখন জানতে পারেন, নয়া মন্ত্রিসভায় তাঁরা ব্রাত্য থাকছেন। তিনি বলেন, সব সিনিয়র মন্ত্রীকে সরিয়ে দেওয়া হবে। নয়া মন্ত্রিসভায় একজনেরও জায়গা হবে না। তাই আমাদের সরব হতেই হয়েছে। সূত্রের খবর, পটেল স্থানীয় পুরসভা নির্বাচনের টিকিট বন্টনে নতুন নিয়ম চালু করছেন যে, যাঁরা তিনটি মেয়াদ পূর্ণ করে ফেলেছেন, তাঁদের ফের টিকিট মিলবে না। এতে বর্তমান বিধায়ক, মন্ত্রীদের মনে আতঙ্ক ছড়িয়েছে, এই বুঝি তাঁদের রাজনৈতিক কেরিয়ার শেষ হতে চলল। সৌরাষ্ট্রের এক বিজেপি বিধায়ক বলেছেন, পরিষদীয় দলের কোনও বৈঠক ডাকা হয়নি। ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে আমাদের গাঁধীনগরে বিধায়ক আবাসে থাকতে বলা হয়, যদিও দলীয় সংগঠন বা পরিষদীয় দলের কোনও বৈঠক ডাকার কথা ছিল না। প্রথা অনুসারে, শপথ গ্রহণের কিছুক্ষণ আগেই বিধায়কদের জানানো হয়, কার মন্ত্রিসভায় জায়গা হচ্ছে। এমন কোনও তালিকা আজ বেরয়নি।বিজেপির একটি ওপর মহলের সূত্রের দাবি, মঙ্গলবার দুপুরেই শীর্ষ কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতৃত্ব বিদায়ী মন্ত্রিসভার সদস্যদের মুখোমুখি বৈঠকের জন্য একে একে তলব করে জানিয়ে দেন, ফর্মূলা অনুসারে, নয়া মন্ত্রিসভায় তাঁদের জায়গা হচ্ছে না। বুধবারও রাষ্ট্রমন্ত্রীদের ডেকে একই কথা জানিয়ে দেওয়া হয়।গাঁধীনগরে এক শীর্ষ দলীয় নেতা বলেন, দিন বদল করা হয়েছে, বুধবার মুহূর্তটি শুভ ছিল না বলে।
কিছু বিধায়কের ক্ষোভ, প্রতিবাদ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে এক সিনিয়র পদাধিকারী অবশ্য বিষয়টি লঘু করে দেখিয়ে বলেন, তেমন কোনও উল্লেখযোগ্য প্রতিবাদ হয়েছে বলে মনে হয় না। আর বছর ঘুরতেই যখন ভোট, তখন কোনও প্রতিবাদ-বিক্ষোভ দেখানো রাজনৈতিক বিচক্ষণতার পরিচয় বলে মনে হয় না। শপথ গ্রহণ এমন কোনও প্রতিবাদের জেরে পিছয়নি। আরেক নেতা জানান, কিছু বিধায়ক সময় চেয়েছেন, যাতে শপথ নেওয়ার অনুষ্ঠানে থাকার জন্য বাড়ির লোকজন আসতে পারেন। শপথ পেছনোর কারণ হতে পারে এটা।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পদাধিকারী বলেন, শপথ গ্রহণ স্থগিত হওয়ার পিছনে হিসাবের গন্ডগোল ছাড়া আর কিছুই নেই। নেতৃত্ব হয়তো আঞ্চলিক, জাতপাতের ফ্যাক্টর মাথায় রেখে এগচ্ছে, এতে সময় লাগে। সব নাম রেডি করে ফেলা যাবে না বুঝেই হয়তো শপথ গ্রহণ পিছনো হয়েছে।এখন দেখার গুজরাটের রাজনীতি কোন দিকে প্রবাহিত হয়?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *