উড়িষ্যার নাবালিকা কে অপহরণ, ধৃত মঙ্গলকোটের ‘গুনধর’ যুবক

Spread the love

উড়িষ্যার নাবালিকাকে বিয়ে, আটক বাংলার যুবক,

    জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,

        প্রথম বিয়ে গোপন রেখে দ্বিতীয়বার  বিয়ে তাও আবার নাবালিকাকে! শেষ পর্যন্ত গোপন বিয়ে রইলো না গোপনে। তামিলনাড়ু পুলিশের সহযোগিতায় ও মঙ্গলকোট থানার পুলিশের ত‍ৎপরতায় বাঁকুড়ার সোনামুখী থেকে উদ্ধার করা হলো অভিযুক্ত যুবক ও নাবালিকা। অভিযুক্ত যুবকের নাম রাহুল দাস। বাড়ি মঙ্গলকোট থানার গোতিষ্ঠা গ্রামে এবং নাবালিকার বাড়ি উড়িষ্যায় । 

       নাবালিকার পরিবার সূত্রে জানা যাচ্ছে নাবালিকার মা ও অভিযুক্ত  রাহুল দাস তামিলনাড়ুর একটি সুতো কারখানায় কাজ করত। পাশাপাশি দীর্ঘদিন কাজের সূত্রে তাদের মধ্যে সখ্যতা গড়ে ওঠে। সেই সখ্যতার সুযোগ নিয়ে মাস চারেক আগে অভিযুক্ত যুবক নাবালিকা মেয়েটিকে নিয়ে 'চলে' যায়। সখ্যতা জনিত কারণে প্রথমে কোনোরকম সন্দেহ নাহলেও যখন নাবালিকার মা বুঝতে পারে তার মেয়ে অপহৃত হয়েছে সঙ্গে সঙ্গে তিনি স্হানীয় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন এবং নুন্যতম সময় নষ্ট না করে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রীর শরণাপন্ন হন। এরপরই নাবালিকার খোঁজে তামিলনাড়ুর পুলিশ তৎপর হয়ে ওঠে । পুলিশি তৎপরতার খবর পেয়েই দু'জনে  ব্যাঙ্গালোরে গা-ঢাকা দ্যায়। তারপর সেখান থেকে পশ্চিমবঙ্গ পালিয়ে এসে ব্যান্ডেল ও সোনামুখীর বিভিন্ন জায়গায় তারা লুকিয়ে থাকছিল।

     এদিকে ছেলেমেয়ে দুটির খোঁজ পাওয়ার জন্য তামিলনাড়ুর পুলিশ মঙ্গলকোট থানার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং পুরো ঘটনাটি তাদের অবহিত করে। সঙ্গে সঙ্গে মঙ্গলকোট থানার পুলিশ তৎপর হয়ে ওঠে। পুরো বিষয়টি মণিটারিং করেন আই.সি পিণ্টু মুখোপাধ্যায়। আটক করা হয় অভিযুক্ত যুবকের এক নিকট আত্মীয়কে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে   বাঁকুড়ার সোনামুখীতে তাদের অবস্থানের কথা জানতে পারা যায়। অনেক লুকোচুরি খেলার পর সেখান থেকে ছেলেমেয়ে দু'টিকে উদ্ধার করে পয়লা মে মঙ্গলকোট থানায় আনা হয়। 

        মেয়ের উদ্ধারের খবর পেয়েই তামিলনাড়ুর চার পুলিশ আধিকারিক সহ ঐ নাবালিকার মা মঙ্গলকোট থানায় হাজির হন এবং  মেয়ে-জামাইকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন। মেয়ে-জামাইয়ের উদ্ধারের ঘটনায় ঐ নাবালিকার মা মঙ্গলকোট থানার পুলিশ আধিকারিকদের ধন্যবাদ জানান। সহযোগিতার জন্য তামিলনাড়ু পুলিশের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন - মূলত এদের জন্যই আমার মেয়ে উদ্ধার হলো। 

        এদিকে রাহুলের ঘটনা ছড়িয়ে পড়তেই মঙ্গলকোটের কাশেমনগর থেকে থানায় হাজির হয় আর এক যুবতী। তার দাবি এক বছর আগে লক ডাউনের সময় রাহুলের সঙ্গে লুকিয়ে তার বিয়ে হয়। যদিও পরবর্তীকালে দুটি পরিবার এই বিয়ে মেনে নেয়। বিয়ের সময়, কাশেমনগরের মেয়েটির দাবি, সে নাবালিকা ছিল। যাইহোক  কাজের অজুহাতে রাহুল তার নববিবাহিতা স্ত্রীকে রেখে দক্ষিণ ভারতে যায়। কিন্তু আজ স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ের কথা শুনে সে চমকে যায়।  এই ঘটনার জন্য সে তার স্বামীর শাস্তির দাবি রেখেছেন।

  অন্যদিকে রাহুল দাসের পরিবারের সদস্যরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে রাহুলের শাস্তির দাবি করে।

       মঙ্গলকোট থানার আই.সি পিণ্টু মুখোপাধ্যায় বললেন - ঘটনার খবর পেয়েই আমরা তৎপর হয়ে উঠি। সম্ভাব্য সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে আমরা বুঝতে পারি মেয়েটি আর যাইহোক নারী প্রাচারকারীদের খপ্পড়ে  পড়েনি। ফলে ছেলেমেয়ে দুটিকে উদ্ধার করা আমাদের পক্ষে কিছুটা সহজ হয়ে ওঠে। জানা যাচ্ছে আগামীকাল ছেলেটিকে আদালতে হাজির করানো হবে এবং 'ট্রানজিট ডিমান্ড'-এ তামিলনাড়ু নিয়ে যাওয়া হবে। মেয়েটি আপাতত 'সেফ হোমে' আছে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *