বগটুই কান্ডের দিন আনারুলের সাথে অনুব্রতের কথা হয়, হলফনামায় জানালো সিবিআই
পারিজাত মোল্লা , ২ জানুয়ারি
সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে বগটুই কাণ্ডের অন্যতম মূল অভিযুক্ত লালন শেখের হেফাজতে মৃত্যুর হলফনামায় বিস্ফোরক দাবি রাখলো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। এদিন সিবিআই জানিয়েছে , -‘ যে রাতে বগটুইয়ে লাইন দিয়ে বাড়িতে আগুন লাগানো হয়েছিল সেই রাতেই আনারুল হক এবং অনুব্রত মণ্ডলের ফোনে কথা হয়েছিল’। আদালত সুত্রে প্রকাশ, -‘সিবিআই সময় নির্দিষ্ট করে হলফনামায় লিখেছে, ২১ মার্চ রাত ৮টা ৫০ মিনিটে কথা হয়েছিল আনারুল ও অনুব্রতর। ২২ মার্চ ফের দু’জনের কথা হয়’। এতেই চাঞ্চল্য পড়ে গেছে সর্বস্তরে।তৃণমূলের রামপুরহাটের ব্লক সভাপতি ছিলেন আনারুল হক। এই আনারুল বর্তমানে বগটুই গনহত্যা মামলায় অন্যতম ষড়যন্ত্রী হিসেবে জেলবন্দি রয়েছেন। অনুব্রত মন্ডলও জেলবন্দি, তবে গরু পাচার মামলায়। এবার বগটুই মামলাতেও তাঁর নাম জড়িয়ে গেল ষড়যন্ত্রকারী হিসাবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। গত বছর ২১ মার্চ সন্ধে নাগাদ বাড়ির অদূরেই খুন হয়ে গিয়েছিলেন তৃণমূল নেতা তথা বগটুয়ের উপপ্রধান ভাদু শেখ। সেই খুনের বদলা নিতেই অভিযুক্তদের বাড়ি বাড়ি আগুন লাগানো হয় বলে অভিযোগ। আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটে প্রায় মধ্যরাতে। অর্থাত্ সিবিআইয়ের দাবি অনুযায়ী, আনারুল ও অনুব্রতর ফোনে কথা হয়েছিল ভাদু খুন ও গণহত্যার মাঝামাঝি সময়ে। আর এতেই ষড়যন্ত্রকারী হিসাবে যোগসূত্র খুঁজছে সিবিআই বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। ২২ মার্চ সকালেও অনুব্রত-আনারুলের কথা হয়েছে বলে দাবি সিবিআইয়ের। ২২ তারিখ সকালে অনুব্রত আবার সংবাদমাধ্যমের সামনে বলেছিলেন, -‘টিভি ফেটে আগুন লাগে!’ এই ঘটনার কয়েকদিন পর অর্থাৎ ২৪ মার্চ বগটুই গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে দাঁড়িয়েই মুখ্যমন্ত্রী আনারুলকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দিয়েছিলেন মমতা। ওইদিন বিকেলে তারাপীঠ থেকে গ্রেফতার করা হয় আনারুলকে। সেদিন মমতার পাশে দাঁড়িয়ে অনুব্রতকে পুলিশের উদ্দেশে বলতে শোনা গিয়েছিল, -‘ এমনভাবে কেস ডায়েরি সাজাতে হবে যাতে বেরোতে না পারে’। উদাহরণ দিয়ে অনুব্রত নানুরের বাসাপাড়া সংলগ্ন সূচপুরের মতো কেস সাজাতে হবে বলে জানিয়েছিলেন।এখন প্রশ্ন উঠছে , -‘ তাহলে কি অনুব্রতর সঙ্গে কথা বলেই সবটা ( গনহত্যা) করানো হয়েছিল সেদিন? রাজ্যের বিরোধীরা ওই ঘটনা পরবর্তীতে বলে আসছিলেন, -‘ বীরভূমে কেষ্ট মণ্ডলই ‘মুখ্যমন্ত্রী।’ তাঁর কথা ছাড়া এত বড় ঘটনা ঘটা সম্ভব নয়’। এদিন সিবিআইয়ের হলফনামাতেও বিরোধীদের সেই দাবি অনেকটাই অক্সিজেন পেল বলে মনে করা হচ্ছে।