আমার ভালবাসার নায়ক শাহরুখ খানের শুভ জন্মদিন

Spread the love

আমার ভালবাসার নায়ক শাহরুখ খানের শুভ জন্মদিন

ফারুক আহমেদ

শাহরুখ খানের শুভ জন্মদিন ২ নভেম্বর। পাঠান, জাওয়ান বিশ্বরেকর্ড করেছে ইতিপূর্বেই। ২১ ডিসেম্বর ২০২৩ মুক্তির অপেক্ষায় রাজকুমার হীরানির ডানকি। ২০২৩ সালটা ছিল শাহরুখ খানের। সর্বকালের সেরা অভিনেতা শাহরুখ খান। ভালবাসার আর এক নাম শাহরুখ খান। আবেগ, প্রেম, বিরহ, একশানে ভরপুর সুপার ডুপার হিট সিনেমা উপহার দেওয়ার সর্বোচ্চ সংখ্যায় উপার্জনকারি হিরোর নাম শাহরুখ খান। দেশ প্রেম থেকে নারী মনের রাজকুমার শাহরুখ খান। গোটা পৃথিবীতে একটাও এমন জনপ্রিয় অভিনেতা নেই শাহরুখ খানের মতো। জন্মদিন পালনের আগের রাত থেকেই ভিড় জমতে থাকে মান্নাতের সামনে। সমগ্র মহাবিশ্বে তাঁর জন্মদিন মানেই একটা উৎসব। কলকাতায় তিনি আসেন সময় পেলেই। আন্তর্জাতিক কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসব মাতিয়ে তুলতে এবছরও হাজির থাকবেন শাহরুখ খান। সম্প্রতি রিলিজ হয়েছিল শাহরুখ খান অভিনিত সব থেকে সফল সিনেমা জাওয়ান। আট থেকে আশি সবার মনে দাগ কেটেছে জাওয়ান সিনেমা। প্রেমিকা জাওয়ান সিনেমা দেখে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছে শাহরুখ খানের তুখোড় অভিনয় মুগ্ধ করে। এখানেই শাহরুখ খানের জয়।
শাহরুখ খান ২ নভেম্বর ১৯৬৫ সালে এক স্বাধীনতা সংগ্রামী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ভারতে তাঁর থেকে বড় দেশপ্রেমিক আর কে হবেন? পাঠান জিন্দা হ্যায়। শাহরুখ খান জিন্দা হ্যায়। ভালবাসা জিন্দা হ্যায়। চারিদিকে বিদ্বেষ প্রকাশ করছে ভারতের অশুভ শক্তি। সমগ্র বিভেদকামী শক্তির বিরুদ্ধে উদার ভালবাসা নিয়ে হাজির শাহরুখ খান। তিনি হেরে গিয়ে জড়িয়ে রাখেন ভালবাসা দিয়ে৷ তাই তো তিনি বাজিগর৷ ভালবাসা দিয়েই মানুষের ভালবাসা অর্জন করতে হবে। বিদ্বেষ নয়, চাই সম্প্রীতি। ভারতের ঐতিহাসিক পটভূমিতে যুগ্ম সহাবস্থানই পথ দেখিয়েছে। অসহিষ্ণু ভারতকে সহিষ্ণুতার শিক্ষা দিয়ে নতুন ভারত গড়তে শাহরুখ খান ভালবাসাকেই অবলম্বন করলেন। ঘৃণার চোখে ভালবাসাই পারে বুকে জড়িয়ে নিতে। সব বিতর্কের মুখে একটাই আওয়াজ উঠেছে, শাহরুখ খান পেরেছেন মানুষের ভালবাসা অর্জন করতে।
গোটা বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় নায়ক হচ্ছেন শাহরুখ খান। তাঁর জন্য ভারতের মুখ উজ্জ্বল হয়েছে বিশ্ব দরবারে। তিন দশক ধরে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে একটার পর একটা চলচ্চিত্রে ভালবাসার আকাশ দেখিয়েছেন শাহরুখ খান। তাঁকে হাজার চেষ্টা চালিয়েও রুখতে পারল না অশুভ শক্তি। সবশেষে ভালবাসাই জিতে যায়। যেখানে পেয়ার হ্যায়, সেখানে কুছ পরোয়া নেহি। ভারতের সব থেকে বড় আইকন হচ্ছেন শাহরুখ খান। তিরিশ বছর ধরে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে তাঁর দেখানো পথেই মানুষ ভালবাসার মানুষের মনে দাগ কেটেছেন। সমস্ত ধর্মের প্রতি তাঁর গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন ভারতীয় হিসেবে সকলকেই মুগ্ধ করে। বয়কট ভক্তরা শাহরুখ খানকে নিশানা করে কত বড় থাপ্পড় খেলেন তার জ্বলন্ত উদাহরণ পাঠান সিনেমা৷ এটি ইতিমধ্যেই সমগ্র বিশ্বের মানুষের ভালবাসা অর্জন করেছে। সমস্ত রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড তৈরি হয়েছে পাঠান সিনেমা। অসহায় মানুষের কল্যাণে শাহরুখ খান সর্বদা মীর ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সাহায্য করে আসছেন। ভারতের অশুভ শক্তির পতন সুনিশ্চিত করতে শাহরুখ খান জিন্দা হ্যায়। ভারতীয় নারীদের মধ্যে সব থেকে জনপ্রিয় প্রেমিক হচ্ছেন শাহরুখ খান। আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর নামের আদ্যক্ষর দিয়ে গঠিত এসআরকে নামে ডাকা হয়। শাহরুখ খান একজন ভারতীয় অভিনেতা, প্রযোজক, টেলিভিশন উপস্থাপক এবং মানবসেবী হিসাবেই অধিক পরিচিত হয়েছেন বিশ্ব দরবারে। গণমাধ্যমে ‘বলিউডের বাদশাহ’, ‘বলিউডের কিং’ ও ‘কিং খান’ হিসেবে পরিচিত হয়েছেন যা আকাশ স্পর্শ করেছে। শাহরুখ খান ৮৭টির অধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন ইতিমধ্যেই। তিনি অসংখ্য পুরস্কার অর্জন করেছেন, তারমধ্যে রয়েছে চোদ্দোটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার, যার আটটিই শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার। হিন্দি চলচ্চিত্রে অসাধারণ অবদানের জন্য ২০০২ সালে ভারত সরকার শাহরুখ খানকে পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত করে এবং ফ্রান্স সরকার তাঁকে অর্দ্র দে আর্ত এ দে লেত্র ও লেজিওঁ দনর সম্মাননায় ভূষিত করে। অভিনেতা হিসেবে সারা বিশ্বে অফুরন্ত অবদানের জন্য শাহরুখ খানকে সম্মানসূচক ডক্টরেট উপাধিতে ভূষিত করেছে স্কটল্যান্ডের প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয় এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়। এশিয়ায় ও বিশ্বব্যাপী ভারতীয় বংশোদ্ভূত তাঁর প্রায় ৪.২ বিলিয়ন ভক্ত রয়েছে এবং তাঁর মোট অর্থসম্পদের পরিমাণ ৫০০০ কোটি রুপিরও বেশি। ওয়েলথ-এক্স সংস্থার বিচারে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী হলিউড-বলিউড তারকার তালিকায় শাহরুখ খান দ্বিতীয় স্থানও পেয়েছেন। বর্তমানে তিনি চতুর্থ স্থানে আছেন। তাঁর ছবির দর্শক-সংখ্যা ও আয়ের দিক থেকে তাঁকে বিশ্বের অন্যতম সফল চলচ্চিত্র তারকা বলে অভিহিত করা হয়। শাহরুখ খান ১৯৮০-র দশকের শেষের দিকে বেশ কিছু টেলিভিশন ধারাবাহিকে অভিনয়ের মাধ্যমে তাঁর অভিনয় জীবন শুরু করেন। ১৯৯২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘দিওয়ানা’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তিনি চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করেন। তিনি কর্মজীবনের শুরুর দিকে খল চরিত্রে ‘ডর’ (১৯৯৩), ‘বাজিগর’ (১৯৯৩), ও ‘আঞ্জাম’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে পরিচিতি লাভ করেন। এরপর তিনি অসংখ্য বাণিজ্যিকভাবে সফল চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন এবং খ্যাতি অর্জন করেন। তারমধ্যে রয়েছে দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েঙ্গে (১৯৯৫), দিল তো পাগল হ্যায় (১৯৯৭), কুছ কুছ হোতা হ্যায় (১৯৯৮), মোহাব্বতে (২০০০), ও কভি খুশি কভি গম… (২০০১)। তিনি দেবদাস (২০০২)-এ মদ্যপ জমিদার পুত্র দেবদাস মুখার্জি, স্বদেশ (২০০৪)-এ নাসার বিজ্ঞানী, চক দে ইন্ডিয়া (২০০৭)-এ হকি কোচ ও মাই নেম ইজ খান (২০১০)-এ অ্যাসপারগারের লক্ষণে আক্রান্ত ব্যক্তি চরিত্রে অভিনয় করে সমাদৃত হন। তার সর্বোচ্চ আয়কারী চলচ্চিত্রসমূহ হল প্রণয়ধর্মী হাস্যরসাত্মক ছবি চেন্নাই এক্সপ্রেস (২০১৩), উত্তেজনাপূর্ণ হাস্যরসাত্মক ছবি হ্যাপি নিউ ইয়ার (২০১৪), মারপিটধর্মী ছবি দিলওয়ালে (২০১৫), অপরাধমূলক ছবি রইস (২০১৭) এবং পাঠান (২০২৩) সব রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়তে শাহরুখ খানই পারেন। সমালোচনারও মুখোমুখি হতে হয়েছে শাহরুখ খানকে। কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ চলচ্চিত্র দর্শক মন জয় করতে না পারায় দেশের মাটিতে মুখ থুবড়ে পড়েছে। চার বছর বিরতির পরও এভাবে ফিরে আসেন তিনি। পাঠান সিনেমা ঘিরে দর্শকদের মধ্যে যে উৎসাহ দেখা দিয়েছে তা নয়া ইতিহাস রচনা করছে। একদিকে বয়কট ভক্তদের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হয়নি দেশের মানুষ আজও পজিটিভ মাইন্ডসেট নিয়ে বাঁচতে চান বলেই। সমস্ত নোংরামির রাজনৈতিক ফায়দা তোলার উদ্দেশ্য সফল করতে দেয়নি দেশের সচেতন মানুষ। বলিউডকে নতুন করে চাঙ্গা করে দিলেন শাহরুখ খান বিশ্বের সেরা রোমান্টিক হিরো। বাংলার মানুষের ভালবাসা অর্জন করেছেন শাহরুখ খান নাইট রাইডার্স দলের মালিক হিসাবে। বাংলাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত শক্ত করেছেন। নারী-পুরুষ ভেদাভেদ নেই, সবার হৃদয়ে ঢুকেই পড়েছেন, তাঁর ভালবাসার অভিনয় দিয়ে মন জয় করেছেন শাহরুখ খান।
শাহরুখ খান চলচ্চিত্র প্রযোজনা কোম্পানি রেড চিলিজ এন্টারটেইনমেন্ট ও এর সহযোগী সংগঠনের সহ-চেয়ারম্যান এবং ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের দল কলকাতা নাইট রাইডার্স ও ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগের দল ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্সের সহ-কর্ণধার। তাঁকে প্রায়ই টেলিভিশন অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ও স্টেজ শোতে পরিবেশনা করতে দেখা যায়। পণ্যের শুভেচ্ছাদূত ও শিল্পোদ্যোগের জন্য গণমাধ্যম তাঁকে প্রায়ই ‘ব্র্যান্ড এসআরকে’ বলে উল্লেখ করে থাকে। শিশুদের শিক্ষায় সহায়তার জন্য ইউনেস্কো তাঁকে ‘পিরামিড কন মার্নি পুরস্কার’ প্রদান করে এবং ভারতে নারী ও শিশুদের অধিকার রক্ষার্থে তাঁর নেতৃস্থানীয় ভূমিকার জন্য ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম তাঁকে ২০১৮ সালে ‘ক্রিস্টাল পুরস্কার’ প্রদান করে। তাঁকে প্রায়ই ভারতের সংস্কৃতির সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের তালিকায় স্থান পেতে দেখা যায়। ২০০৮ সালে নিউজউইক তাঁকে বিশ্বের ৫০ ক্ষমতাধর ব্যক্তির তালিকায় স্থান দেয়। ভালবাসার আর এক নাম শাহরুখ খান। ভারতীয় হিসেবে সকলকেই গর্বিত করেন শাহরুখ খান। দেশপ্রেম প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে তাঁর পাঠান সিনেমা থেকে ফির ভি দিল হ্যায় হিন্দুস্থানি। দেশকে যাঁরা টুকরো টুকরো করতে বিদ্বেষের সুরে বাঁধতে চাইছেন তাঁদের মুখে ঝামা পাথর ঘষে ঐক্যের মাধ্যমে আধুনিক বিশ্বের সেরা বৈচিত্রময় পবিত্র উদার ভারত উপহার দেওয়ার অগ্নিশপথে পথ হাঁটতে শুরু করলেন স্বাধীনতা সংগ্রামীর সন্তান শাহরুখ খান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *