বারুইপুর পুলিশসুপার কে নিখোঁজ ঘটনার কিনারা করতে বললো ডিভিশন বেঞ্চ
পারিজাত মোল্লা ,
এবার পুলিশ সুপার কে চার সপ্তাহের মধ্যে নিখোঁজ ব্যক্তির ঘটনায় কিনারা করতে বললো কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। অতি সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে এক প্রবীণ ব্যক্তির নিখোঁজ সংক্রান্ত মামলার শুনানি চলে। অভিযোগ, প্রমোটারদের ষড়যন্ত্রে নিখোঁজ তিনি। বারুইপুরের এই প্রবীণ নিখোঁজ ঘটনায় চাঞ্চল্য রয়েছে এলাকা জুড়ে । স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসনকে জানিয়েও সুরাহা না হওয়ায় বাধ্য হয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন নিখোঁজ এর ছেলে । কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলায় চার সপ্তাহের মধ্যে ফের পুলিশের রিপোর্ট তলব করেছে ।আদালত সূত্রে জানা প্রকাশ , বারুইপুরের বাসিন্দা গোপাল সর্দার জন্মসূত্রেই পৈতৃক ভিটেতে থাকেন । বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত তিনি । বাড়ির পাশেই সালেপুর যুববৃন্দ সংঘ নামে একটি ক্লাব রয়েছে । ক্লাবের সদস্যরা গোপাল সর্দারের বসতবাটির জায়গায় প্রোমোটিং করতে উত্সাহী বলে তাঁকে জানান । তবে তিনি তাতে রাজি না থাকায় জোর করে তাঁর পৈতৃক ভিটে দখল করার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ । আরও অভিযোগ, প্রোমোটিং তে বাধা দিলে গোপাল সর্দার ও তাঁর পুত্র বাবাই সর্দারকে বেধড়ক মারধরও করা হয় ।এ বিষয়ে স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও পুলিশ ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় বাধ্য হয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন গোপাল সর্দারের পুত্র বাবাই সর্দার । তাঁর অভিযোগ, আদালতে মামলা করার পর তাঁদের পরিবারের উপর আরও আক্রমণ শুরু হয় । নানারকম ভয় দেখানো ও হুমকি দেওয়া চলে । এবং তাঁদের মামলা তুলে নিতে চাপ সৃষ্টি করা হয় ।গত বছরের ২৯ অক্টোবর হঠাত্ করে গোপাল সর্দার নিখোঁজ হয়ে যান । ৩০ অক্টোবর বাবাই সর্দার স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করেন । পুলিশ ব্যবস্থা না নেওয়ায় ০৩ নভেম্বর ফের অভিযোগ দায়ের করেন তিনি । তাঁর বাবাকে হয় অপহরণ করা হয়েছে অথবা নয়তো মেরে ফেলা হয়েছে বলে আশংকা করছেন নিখোঁজ এর ছেলে । বারুইপুর জেলা পুলিশ সুপারের কাছেও গত ১৭ নভেম্বর অভিযোগ দায়ের করেন তিনি । কিন্তু কোনও পুলিশি সক্রিয়তা চোখে পড়েনি ওই পরিবারের।অতি সম্প্রতি এই মামলাটি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চে উঠলে ‘পরোপকারী’ আইনজীবী ইন্দ্রজিত্ রায়চৌধুরী জানান, -‘ ২৯ অক্টোবর থেকে ওই ব্যক্তি নিখোঁজ । তিনি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত । এরফলে তাঁকে বেশিদিন আটকে রাখলেও তিনি অসুস্থ হয়ে মারা যাবেন । তাঁকে কোথাও লুকিয়ে রাখা হয়েছে বা মেরে ফেলা হয়েছে’ । এর প্রতুত্তরে রাজ্য জানায়, -‘ মামলা দায়ের হওয়ার পর ক্লাবের সদস্যদের বিরুদ্ধে কিডন্যাপের মামলা শুরু করে তদন্ত চলছে । কিছুদিন সময় দিলে দ্রুত ওই ব্যক্তিকে খুঁড়ে বের করা সম্ভব হবে’ । কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে এই ঘটনায় পুলিশ কী তদন্ত করেছে? তার কেস ডায়েরি-সহ অন্যান্য নথি ডিভিশন বেঞ্চে হাজির করতে নির্দেশ দিয়েছে। গত সপ্তাহে এই মামলার শুনানিতে পুলিশি রিপোর্টে অসন্তুষ্ট প্রকাশ করে ডিভিশন বেঞ্চ। জেলার পুলিশ সুপার এই মামলার কিনারা করতে চার সপ্তাহের সময়সীমা বেঁধে দেয়।চার সপ্তাহ পরবর্তীতে এই মামলার শুনানি রয়েছে বলে জানা গেছে।