সেনকো ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেড কে দ্রুত ফ্ল্যাট গ্রাহকদের সুরাহা দিতে বললো রেরা

Spread the love

সেনকো ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেড কে দ্রুত ফ্ল্যাট গ্রাহকদের সুরাহা দিতে বললো রেরা

মোল্লা জসিমউদ্দিন , 

ফের আরও একবার ফ্ল্যাট প্রতারিতদের পাশে দাঁড়ালো ওয়েস্ট বেঙ্গল রিয়েল এস্টেট আপিলেট ট্রাইবুনাল কর্তৃপক্ষ । মঙ্গলবার বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তের নেতৃত্বধীন তিন সদস্য বিশিষ্ট বেঞ্চ নরেন্দ্রপুরের কামালগাছির দুই বাসিন্দা কে দ্রুত ফ্ল্যাট প্রদান করতে বললো। তার আগে অবশ্য সংশ্লিষ্ট পুরসভা অর্থাৎ সোনারপুর – রাজপুর পুরসভার কাছে প্রয়োজনীয় বসবাস যোগ্য শংসাপত্র নিতে হবে অভিযুক্ত আবাসান নির্মাণকারী সংস্থা কে।চলতি সপ্তাহে ওয়েস্ট বেঙ্গল রিয়েল এস্টেট আপিলেট ট্রাইবুনাল এর চেয়ারম্যান বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্ত এই নির্দেশ জারি করেছেন। জানা গেছে, গড়িয়াহাট সংলগ্ন নরেন্দ্রপুর এলাকায় সেনকো ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেড নামে এক আবাসন নির্মাণকারী সংস্থার কাছে সুদীপ্ত কুমার দে এবং সুচিশ্মিতা দে ফ্ল্যাট বুক করেন। সুদীপ্ত দে ২০২২ সালের ১৫ ই মার্চ ১১০২ স্কোয়ার ফুটের ফ্ল্যাট বুক করেন। এর মূল্য ৪৪ লক্ষ ২৭ হাজার ৪০০ টাকা। উক্ত আবাসন সংস্থার ডিরেক্টর জয়দীপ মুখার্জির সাথে দলিল মারফত চুক্তি হয় যে ওই বছরের ২৫ জুনের মধ্যে ফ্ল্যাট হস্তান্তর করবে।ফ্ল্যাট গ্রাহক সুদীপ্ত দে পরে জানতে পারেন ওই আবাসন প্রকল্পটি সংশ্লিষ্ট পুরসভার সিসি এবং বসবাসের উপযোগী শংসাপত্রই নেই! আবাসন কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানায় – ‘ ওই ফ্ল্যাট গ্রাহকের ৮ লক্ষ টাকা বাকি রয়েছে, তাই ফ্ল্যাট হস্তান্তর করা হয়নি’।  গতবছর এই বিষয়টি ওয়েস্ট বেঙ্গল রিয়েল এস্টেট অথরিটির কাছে অভিযোগ আকারে আসে।অথরিটি কর্তৃপক্ষ দু পক্ষের বক্তব্য জেনে ওই আবাসন নির্মাণকারী সংস্থা কে সংশ্লিষ্ট পুরসভার ছাড়পত্র নিয়ে দ্রুত ফ্ল্যাট প্রদান করতে নির্দেশ দেয়। এই নির্দেশ কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ওয়েস্ট বেঙ্গল রিয়েল এস্টেট আপিলেট ট্রাইবুনালের দারস্থ হয় সেনকো ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেড। চলতি সপ্তাহে মঙ্গলবার ট্রাইবুনালের চেয়ারপার্সন বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্ত এর নেতৃত্বধীন তিন সদস্য বিশিষ্ট বেঞ্চ আগেকার নির্দেশ বহাল রাখে।সেইসাথে দ্রুত ফ্ল্যাট প্রদান না করলে   ২০২২ সালের ২৫ জুনের পর থেকে জমাকৃত অর্থের সাথে অতিরিক্ত ১৫% হারে সুদ দেওয়ার নির্দেশ দেন।ফ্ল্যাট গ্রাহক সুদীপ্ত দের পাশাপাশি ওই আবাসনের আরেকজন গ্রাহক সুচিশ্মিতা দে এর ক্ষেত্রে অনুরুপ নির্দেশ কার্যকর থাকবে বলে রেরা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। 

ইতিপূর্বে  ওয়েস্ট বেঙ্গল রিয়েল এস্টেট আপিলেট ট্রাইবুনাল  এক গুরত্বপূর্ণ রায় দিয়েছিল।যা  ফ্ল্যাট প্রতারিতদের কাছে যুগান্তকারী বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।  ওয়েস্ট বেঙ্গল রিয়েল এস্টেট আপিলেট ট্রাইবুনাল এর চেয়ারপার্সন বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্ত এর নেতৃত্বধীন তিন সদস্যর বেঞ্চ রায় ঘোষণা করেছে  । রায়দানকারী  রেরার চেয়ারপারসন রয়েছেন বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্ত, বিচার বিভাগীয় সদস্য রয়েছেন  শ্রী গৌর সুন্দর ব্যানার্জী, প্রশাসনিক সদস্য রয়েছেন  ড. সুব্রত মুখার্জি। এক অভিযোগে  অভিযুক্ত প্রমোটার সংস্থা মেসার্স সৃষ্টি ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড কে বড়সড় আর্থিক জরিমানা সহ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ রয়েছে। এই মামলায় আবেদনকারীরা হলেন পার্থ প্রতিম বিশ্বাস ও অদিতি বিশ্বাস।।  অভিযোগ অনুযায়ী  ওয়েস্ট বেঙ্গল রিয়েল এস্টেট রেগুলেটরি অথরিটি (এর পরে ‘নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে) দ্বারা ১১.০৯.২০২৩ তারিখের চূড়ান্ত আদেশ থেকে এই আপিলটি গ্রহণ  হয়েছে।  ১,১১,৮৭,২৭০/- (এক কোটি এগারো লাখ আটাশ হাজার দুইশত সত্তর টাকা মাত্র) দেওয়ার নির্দেশ দেয় ওয়েস্ট বেঙ্গল রিয়েল এস্টেট রেগুলেটরি অথরিটি ।জানা গেছে,  ১২৫০ বর্গফুট পরিমাপের একটি অ্যাপার্টমেন্ট বুক করে।  দাম নির্ধারণ হয়  ১,১৮৭৫,০০০/- (এক কোটি আঠারো লাখ পঁচাত্তর হাজার টাকা মাত্র) “THE V প্রিভিলেজড লিভিং” নামে একটি প্রকল্পের  তিন  তলায়, নিউ টাউনে। এই বিষয়ে ৩১.১০.২০১৪  তারিখে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, চুক্তি অনুসারে, ২০১৫  সালে বুকিংকারীদের  কাছে অ্যাপার্টমেন্টের দখল দেওয়ার কথা ছিল৷ যদিও  ০৮.১২.২০১৪ তারিখ  পর্যন্ত ফ্ল্যাট গ্রাহকেরা  ১,১১,৮৭,২৭০/- টাকা (এক কোটি এগারো লাখ সাতাশ হাজার দুইশ সত্তর টাকা) পরিশোধ করেছেন এপ্রিল, ২০১৫ এর নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে । নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফ্ল্যাট না পাওয়ায়  প্রজেক্ট থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেন এবং আপীলকারীকে বিধিবদ্ধ সুদ সহ তাদের দেওয়া অর্থ ফেরত চেয়ে নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের কাছে যান। সম্প্রতি  ওয়েস্ট বেঙ্গল রিয়েল এস্টেট আপিলেট ট্রাইবুনাল এর চেয়ারপার্সন বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্ত তাঁর নির্দেশিকায় মূল অর্থ ফেরত দেওয়ার পাশাপাশি সুদ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন।প্রমোটার সংস্থা   প্রদত্ত সম্পূর্ণ অর্থ ফেরত দেবেন অর্থাত্‍ ১,১১৮৭,২৭০/- টাকা (এক কোটি এগারো লাখ আটাশ হাজার দুইশ সত্তর টাকা মাত্র) সঙ্গে ৯৫ ,১৬,৭২৩/- (পঁচানব্বই লক্ষ টাকা) ষোল হাজার সাতশত তেইশটি শুধুমাত্র) সুদ এবং/অথবা ক্ষতিপূরণ এবং/অথবা জরিমানা হিসাবে মামলাটি মোট ২,০৭,০৩,৯৯৩/- টাকা  (দুই কোটি সাত লাখ তিন হাজার নয়শ তিরানব্বই টাকা মাত্র ) দেবে বলে জানা গেছে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *