একশ্রেণির ডাক্তারদের বিরুদ্ধে গণ অবস্থানের ডাক, সোচ্চার নাগরিক সমাজের একাংশ
জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী, আউসগ্রাম, পূর্ব বর্ধমান -:
আরজি করের নৃশংস ঘটনাকে কেন্দ্র করে নাগরিক সমাজ ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। রাত দখলের ডাক দিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে রাস্তায় নামে মহিলারা। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী রাস্তায় নামেন। সবার একটাই দাবি 'উই ওয়াণ্ট জাস্টিস', অপরাধীর চরমতম শাস্তি। এই ঘটনায় ওঠেনি বহিরাগত তত্ত্ব। সরকারের বিরুদ্ধে ছিলনা সরাসরি কোনো অভিযোগ।
আন্দোলন ছিল পুরোপুরি অরাজনৈতিক।
কিন্তু একশ্রেণির জুনিয়র ডাক্তারদের একগুঁয়ে মনোভাবের সৌজন্যে এবং বাম ও অতিবামদের উস্কানির হাত ধরে আন্দোলন রাজনৈতিক রূপ ধারণ করে। স্বাস্থ্য ভবনের সামনে পাঁচ দফা দাবি তুলে জুনিয়র ডাক্তাররা অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করে। পরে তারা সরকারের বিরুদ্ধে চাপের রাজনীতি শুরু করে দশদফা দাবি তোলে এবং অনশন শুরু করে।
কিছু দাবি সাধারণ মানুষ সমর্থন করতে শুরু করলেও পরে জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশের উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ করতে শুরু করে। সরকারি হাসপাতালে ডিউটি না করলেও এদের একাংশ বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে ডিউটি করতে থাকে এবং ডিউটি না করেও সরকারের কাছ থেকে বেতন তোলে।
বিষয়টি সামনে আসতেই এক শ্রেণির ডাক্তারদের বিরুদ্ধে জেলায় জেলায় গণ অবস্থান শুরু হয়। ডাক্তারি রাজ নিপাতের ডাক দেওয়া হয়। বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক রাধামাধব মণ্ডলের উদ্যোগে গত ২০ শে অক্টোবর আউসগ্রামের মোড়বাঁধ বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় একাধিক দাবিতে এরকমই একটি গণ অবস্থান আয়োজিত হয়।
দাবিগুলি হলো সরকারি হাসপাতালে
ডাক্তারদের সিণ্ডিকেট রাজ বন্ধ করা, কোম্পানির ব্রাণ্ডের পরিবর্তে প্রেসক্রিপশনে জেনেরিক ওষুধের নাম লেখা, অযথা পরীক্ষা নিরীক্ষা বন্ধ করা, সব হাসপাতালে ডাক্তারদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার পাশাপাশি ডাক্তারদের ডিউটিতে সময়ে উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করা, ডাক্তারদের ফিস যাতে মানুষের নাগালে থাকে তার নিয়ন্ত্রণ করা ও প্রত্যেক ডাক্তারকে রশিদ দিতে বাধ্য করা ইত্যাদি।
এইসব দাবিতে প্রত্যেক বক্তা সোচ্চার হন। তাদের দাবি সরকার যেমন ডাক্তারদের দাবি পূরণ করার চেষ্টা করছে তেমনি তারও সাধারণ মানুষের দাবি পূরণ করুক।
গণ অবস্থান মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন গায়ক মানস মুখোপাধ্যায়, শিক্ষক নবকুমার বাগ, শিক্ষক দেবদাস সরকার, শিক্ষক অর্ঘ্য বিশ্বাস, আসগর সেখ, রাজদীপ ভট্টাচার্য সহ বেশ কয়েকশত সাধারণ মানুষ।
রাধামাধব বাবু বলেন, একশ্রেণির ডাক্তারদের সৌজন্যে সমাজবন্ধুর পরিবর্তে ডাক্তারদের পরিচয় হয়ে উঠছে সমাজশত্রু বা কসাই রূপে। মানুষের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে রীতিমত তারা মানুষের উপর অত্যাচার শুরু করেছে। ডাক্তারদের নিরাপত্তার দাবি যেমন ঠিক তেমনি সাধারণ মানুষের উপর ডাক্তারদের অযথা অত্যাচার বন্ধ করার দাবিও ঠিক। আশাকরি ডাক্তারবাবুরা এবার সচেতন হবেন।