অকালবোধন
মালবিকা পণ্ডা ডিরোজিওনগর, পশ্চিম মেদিনীপুর)
বাপরে বাপ ! বাজারে শুনলাম একি কান্ড !
লুটে পুটে খাচ্ছ সবাই লক্ষ্মী মায়ের ভান্ড !
এতো খেয়েও সাধ মেটেনি তবু ভুখা পেট !
পুকুরচুরি করতে গিয়ে করলি মাথা হেট !
প্রণামী দে, কাজ কর দেবতা হবেন তুষ্ট ,
প্রণামী একটু কম হলেই হবেন তিনি রুষ্ট !
কোন দেবতা কোন ফুলেতে বেশি হন খুশি
লক্ষ্মী দেবীর প্রণামীটা কিঞ্চিদধিক বেশি ।
গৃহদেবতা তুষ্ট হবেন দু হাত ভরা প্রণামীতে ,
মধ্য বিত্তের ট্যাক খালি প্রণামী সব দিতে দিতে ।
গ্যাস হয়েছে হাজার মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা ,
না না, ভয় পেয়ো না ! আচ্ছে দিন আয়ে গা” !
ডাক্তার বদ্যি বসে আছে হাতে নিয়ে খড়্গ,
জ্বর, সর্দি, হাঁচি ,কাশি যা হোক উপসর্গ,
সোজা তোমায় দেবে পাঠিয়ে যেথায় ছবি তোলে ,
এইভাবেই তো মধ্যবিত্ত মরছে তিলে তিলে ।
হাসপাতালের বিল মেটাতে হচ্ছে যৎপরোনাস্তি ,
হাতের নোয়া মঙ্গলসূত্র বেঁচতে চলে এয়োতি ।
প্রণামী দাও তেল দাও মিলবে পেটের ভাত ,
গদির উপর বসে আছেন ঠুঁটো জগন্নাথ।
শিক্ষা দিচ্ছে অযোগ্যরা যোগ্যরা ফুটপাতে,
ঝাণ্ডা হাতে দাবি জানায় ঝড় বৃষ্টির রাতে ।
নাই ডিগ্রি নাই শিক্ষা আমলা মন্ত্রী জ্যেঠা কাকা ,
পকেট ভর্তি টাকা আছে জ্ঞানের ঘরটি শুধুই ফাঁকা।
অযোগ্যরা বুক ফুলিয়ে শ্যুট বুট আর টাই ঝুলিয়ে ,
যোগ বিয়োগে হোঁচট খেয়ে একশা হল ঘেমে নেয়ে।
মোটা টাকার বিনিময়ে বিক্রি হলো “কাজ”,
শিক্ষিত সব যুবক গুলো বেকার হল আজ।
বাঁচতে হলে এবার তোমরা পথেই না হয় নামো,
ভিক্ষা নয় দাবি জানাও আদায় করেই থামো।
হাতে তুলে কেউ দেবে না নিতে হবে ছিনিয়ে,
আকাশে আজ মেঘ জমেছে দুর্যোগ আসছে ঘনিয়ে।
লোহা এখন গরম আছে মারো এবার হাতুড়ি,
উপরতলা টাকা নিয়ে করছে কাড়াকাড়ি।
মরার আগে মরবে কেন! কাপুরুষ সব যতো!
লড়াই করে নাও ছিনিয়ে বীরপুরুষের মতো।
ঘোলা জলে ধরতে মাছ ব্যস্ত এখন সবাই,
সময় থাকতে লেগে পড় নইলে হবে জবাই।
ভিক্ষা নয় দাবি জানাও এটাই মূল মন্ত্র,
একজোট হয়ে ভেঙ্গে দাও ওদের ষড়যন্ত্র।
ভয় নয় ! ভয় নয়! ভয় কে কর জয় ,
জিতলে পরে আসবে দেখো সাফল্য নিশ্চয়।
জেগে ওঠো যুবসমাজ ধরো এবার দেশের হাল ,
নাবিক হীন জাহাজের ন্যায় দেশটা বেসামাল।
আঁধার নিশি ঘনিয়ে এলো পথ দেখাবার নেই কেউ !
সুনামির ন্যায় ছড়িয়ে পড়ল বেকারত্বের বিশাল ঢেউ।
বিচারের নামে প্রহসন মানবিকতার বিসর্জন,
গর্জে উঠুক জনগণ এবার হোক অকালবোধন।