৭ নং রাজ্য সড়কে থাকা মঙ্গলকোটের লোচনদাস সেতু ‘আলোহীন’
পারিজাত মোল্লা, মঙ্গলকোট,
বয়স সবে তেইশ। আর তাতেই নানান পরিকাঠামোগত সমস্যায় পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোটের অজয় নদের লোচনদাস সেতু। সেতুতে আলো না থাকা থেকে দূর্বল সেতু পিলার সমস্যাগুলি উল্লেখযোগ্য। প্রাচীনকালের বিখ্যাত ভূমিপুত্র বৈষ্ণব কবি লোচনদাস স্মরণে বীরভূম এবং পূর্ব বর্ধমান জেলার সংযোগকারী মঙ্গলকোটের নুতনহাট সংলগ্ন এই সেতু সড়ক যোগাযোগে অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ। দক্ষিণবঙ্গের সাথে উত্তরবঙ্গের যোগাযোগকারী ৭ নং রাজ্য সড়কপথে এই সেতুটি ‘আলোবিহীন’ রয়েছে । যার ফলে সন্ধে লাগলেই পথ দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থাকে সেতুতে।কলকাতা থেকে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা বিশেষত বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, মালদা সর্বপরি উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকার যাত্রীবাহী বাস যাতায়াত করে এই সেতুর উপর। শুধু তাই নয় রাজ্যের বিভিন্ন এলাকার পণ্যবাহী গাড়িগুলি এমনকি উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন গ্যাস – জ্বালানি তেলের গাড়ির দেখা মেলে এই লোচনদাস সেতুতে।ছোটখাটো প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটে এই সেতুতে।জানা গেছে, প্রায় ১ কিমি দৈর্ঘ্য অজয় নদের উপর গত ২০০০ সালে এই সেতু উদঘাটন হয়েছে। এই সেতুর নিচে বেশ কয়েকটি বেআইনী বালিঘাট থাকার জন্য সেতুর কয়েক টি পিলার অত্যন্ত দুর্বল হয়ে গেছে ।সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের তরফে সেতুর নিচে যততত্রভাবে বালি উত্তোলনের জন্য এফআইআর দাখিল পর্যন্ত হয়। তবে খাতা-কলমেই,বাস্তবিক কোন সক্রিয়তা নেই পুলিশ প্রশাসনের একাংশের মধ্যে।যদিও পুলিশ প্রশাসনের তরফে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। গত ২০১৯ সালের শেষের দিকে ৮০ লক্ষের মত টাকা এই সেতু সংস্কারের জন্য বরাদ্দকৃত হয় রাজ্য সরকারের তরফে।তার পরের বছর অর্থাৎ ২০২০ সালে ২০ জানুয়ারি থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত টানা ১ মাস সমস্ত গাড়ি বন্ধ রেখে সংস্কার হয়। এই সংস্কারপির্ব নিয়ে বিস্তর প্রশ্নচিহ্ন উঠে।যদিও এলাকাবাসীদের দাবি -‘সেতুর ক্ষতিগ্রস্ত পিলারে মেরামত না হয়ে শুধুমাত্র পিচেই কাজ করা হয়’। দাবি পাল্টা দাবি যাই থাকুক না কেন, দক্ষিণবঙ্গের গুরত্বপূর্ণ এই লোচনদাস সেতুতে আলোর দাবি দীর্ঘদিনের।প্রশাসন সুত্রে প্রকাশ, এই সেতু আর্থিক উপার্জনকারী হিসাবে স্বাবলম্বী। ২০০০ সালের পর থেকে বাৎসরিক কোটি টাকার কাছাকাছি টোল ট্যাক্স থেকে আয় করে পূর্ব বর্ধমান জেলা পূর্ত দপ্তর। যদিও গত সপ্তাহে সংশ্লিষ্ট টোল ট্যাক্স এর ঠিকেদারের বিরুদ্ধে আত্মসাৎ ও প্রতারণার অভিযোগদায়ের করেছে জেলা পূর্ত দপ্তর। এলাকাবাসীরা জানাচ্ছেন -‘ যে সেতু বছরে কোটি টাকার কাছাকাছি রাজস্ব থেকে আয় করে,সেই সেতুর আলোর ব্যবস্থা পর্যন্ত নেই।তা ভাবতে অবাক লাগে।প্রশাসনের উচিত স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই দীর্ঘতর সেতুতে আলোর ব্যবস্থা করা’। জেলা প্রশাসন থেকে অবশ্য বিষয়টি ( আলো) নিয়ে খোঁজখবর নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।