‘থমথমে’ মঙ্গলকোটে আতঙ্ক বাড়ছে
মোল্লা জসিমউদ্দিন,
পঞ্চায়েত ভোট এখনও ঘোষণা করা হয়নি রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফে। তবে মঙ্গলকোটে পঞ্চায়েত ভোটের দামামা ইতিমধ্যেই বেজে গেছে যেন।রাজ্যের শাসক দলের পার্টি অফিসগুলি বিশেষত সদর মঙ্গলকোট এলাকায় পরিস্থিতি ভিন্ন।থমথমে পরিস্থিতি এখানে।মঙ্গলকোটে কোন বিরোধী রাজনৈতিক দলের অস্তিত্ব নেই।তবে শাসক দলের দুই শিবিরের একে অপরের টেক্কা দেওয়া বিশেষত লোকবল প্রদর্শন এক অন্য মাত্রা এনে দিয়েছে সমগ্র এলাকায় । শুধু তাই নয় সশস্ত্র বিবাদও চলছে দুই তরফে।একপক্ষ আক্রমণাত্মক তো,অপরপক্ষ রক্ষণাত্মক ম্যাচ চালাচ্ছে যেন।সোশ্যাল মিডিয়ায় অনুগামীদের ধারাবাহিক পোস্ট নানান বার্তা দেয় মঙ্গলকোটের বুকে।এই শক্তি প্রদশর্নের লড়াইয়ে কর্মসংস্থানের জন্য অবশ্য এলাকাবাসীদের একাংশ কে ভিন্নরাজ্যে কর্মসূত্রে যাওয়া অনেকটা কমেছে বলে স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে ।দলীয় অফিসে সকাল-বিকেল হাজিরা দিলে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা দেওয়া হয় বলে স্থানীয় সুত্রে প্রকাশ। তবে পুলিশ সুত্রে প্রকাশ – ‘যেকোনো ঘটনারই দুপক্ষের অভিযোগ নেওয়া হয়েছে বা হচ্ছে।অভিযোগ অনুযায়ী তদন্তও চলছে’। সম্প্রতি তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এর ‘নব জোয়ার’ কর্মসূচির দিন এক মারামারির ঘটনায় দুই তরফেই ১২ জন অভিযুক্ত হয়েছেন।তবে মামলায় ধারা গুলি ‘কমন’ রাখা হয়েছে এফআইআর গুলিতে। তবে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে -‘এতে তৃণমূলের
অন্দরে দুই শিবিরের দূরত্ব প্রকাশ্যে এসেছে’।তবে সেইদিন অবশ্য অভিষেকের ‘নব জোয়ার’ কর্মসূচি হয়নি তুমুল প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে। দুই শিবিরেরই দাবি তারাই এবার পঞ্চায়েত ভোটের দলীয় প্রতীক পাচ্ছে।একপক্ষের তরফে গতবারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা যেমন রয়েছে। অপরপক্ষের সাথে নুতন করে গড়া বুথ সভাপতিরা আছেন। সকাল থেকে বিকাল সদর মঙ্গলকোট, কামালপুর, জহরপুর,দেওলিয়া,মাহাত্তুবা প্রভৃতি গ্রাম গুলি রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছে।মোটরবাইক বাহিনীর দাপট দেখার মত। এলাকার শান্তিপ্রিয় বাসিন্দাদের দাবি – ” এইসব এলাকায় পুলিশি টহল বাড়ুক,তা না হলে খুনখারাপিতে ফের মঙ্গলকোট আসতে পারে সংবাদ শিরোনামে “। মঙ্গলকোট বিধানসভার মধ্যে নুতনহাট এলাকায় থানা,ব্লক অফিস,পঞ্চায়েত সমিতি,কৃষি দপ্তর প্রভৃতি রয়েছে। এটি মঙ্গলকোট গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন।এই গ্রাম পঞ্চায়েতের রাশ কার হাতে থাকবে? তা নিয়ে চলছে জোর টক্কর। বিগত বাম জমানায় বিভিন্ন তৃণমূল কর্মী খুনে সিপিএমের অভিযুক্তরা শাসক দলের এহেন লড়াইয়ে নিজেদের ‘হৃতগৌরব’ যেন ফিরে পেয়েছে। এলাকায় তারা ফিরছে পুরানো ছন্দে। এটাই এলাকাবাসীদের কাছে আতঙ্কের কারণ হয়ে উঠছে। কেননা এই মঙ্গলকোটেই খুন হয়েছে সাইফুল মুন্সি, আলাউদ্দিন সেখ, হাসমত সেখ, পূর্ণিমা মাঝী প্রমুখরা।পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা কাটোয়ার বর্ষীয়ান বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের অনুগামী হিসাবে চন্দন সরকার ( উপপ্রধান মঙ্গলকোট) নিজেকে জনসংযোগে ব্যস্ত রাখছেন সর্বদা।অপরদিকে মঙ্গলকোট বিধানসভার জনপ্রিয় বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরীর অনুগামী রহিম মল্লিক (একদা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ) মাঠে নেমেছেন আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতিতে।ইতিমধ্যেই মঙ্গলকোট গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শারীরিক নিগ্রহের শিকার হয়েছেন।