সাধন মন্ডল
দারিদ্র কে সঙ্গী করে বেশ কিছুদিন ধরে বার্ধক্যজনিত কারণে হিড়বাঁধ থানার নোয়া ডিহি গ্রামের বিশিষ্ট পটশিল্পী মুচিরাম চিত্রকর সকাল সাড়ে সাতটায় নাগাদ অমৃতলোকে যাত্রা করলেন। মুচিরাম চিত্রকর মারা যাওয়ার সাথে সাথেই নোয়াডিহির চিত্রকরদের একটা অধ্যায় শেষ হয়ে গেল। মুচিরাম বাবু বর্তমানে নোয়াডিহির বাসিন্দা হলেও জন্মগ্রহণ করেন পুরুলিয়া জেলার কেন্দা থানা পিঁড়রা গ্রামে। সেখান থেকে উঠে এসেছিলেন নোয়াডিহিগ্রামে। এখানেই তিনি গড়ে তোলেন তার নিজস্ব ঘরানার শিল্প-সংস্কৃতি পটচিত্র। এই পটচিত্র কে পেশা করে তিনি দীর্ঘদিন ছবি এঁকেছেন ও তার সাথে সাথে ছবি উপযোগী সুন্দর সাবলীল ভাষায় গান রচনা করেছেন। তিনি ছিলেন এই প্রজন্মের কাছে পটচিত্রের প্রেরণা ও গুরুদেব। তার হাত ধরেই বর্তমান প্রজন্মের অনেক পট শিল্পী উঠে এসেছেন আজ তারা শোকে মুহ্যমান। এই পটশিল্পী অভাব কে উপেক্ষা করে নোয়া ডিহি গ্রামের উত্তরসূরিদের পটচিত্রের প্রতি আকর্ষন বাড়িয়ে ছিলেন। পট শিল্পীরা বর্তমানে উপেক্ষিত। আজকাল আর পটচিত্র দেখিয়ে বা গান গেয়ে রোজকার করার মত পরিবেশ পরিস্থিতি নেই তাই বর্তমানে পট শিল্পীরা এই শিল্পকর্ম থেকে অনেকটা সরে এসেছেন। তা হলেও পট শিল্প একটি আলাদা ঘরানা যা মুচিরাম চিত্রকরের নিজস্ব সৃজন শৈলীতে গড়ে তোলা। মুচিরাম বাবু নিঃসন্তান থাকায় তিনি গ্রামের ছেলেদের সন্তানস্নেহে পটশিল্প শিখিয়ে গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। তিনি রেখে গেলেন তার সহধর্মিনী কাজল চিত্রকরকে। উল্লেখ্য তিনি অভিব্যক্তি সম্মান ও বনলতা উৎসবে বনলতা সম্মান লাভ করেছিলেন তার মৃত্যুতে নোয়াডিহি সহ এলাকার মানুষ শোকোস্তব্ধ। বাংলার খবরাখবরের পক্ষ থেকে আমরা এই প্রবীণ শিল্পী কে জানাই শ্রদ্ধা ও তার পরিবারের প্রতি রইল আমাদের সমবেদনা