আগামীকাল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে ২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলার শুনানি
মোল্লা জসিমউদ্দিন,
আগামীকাল অর্থাৎ সোমবার দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে উঠতে চলেছে প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলার শুনানি। গত ২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগ মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানানো হয়েছে।গত সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চের রায়ে বাতিল হয়েছে ২৫ হাজারের বেশি চাকরি। এর মধ্যে রয়েছে গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশের নিয়োগ।সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য সরকার। স্কুল সার্ভিস কমিশন ও মধ্য শিক্ষা পর্ষদও সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে। হাইকোর্টের মামলায় মূল মামলাকারী পক্ষ থেকে ৩ টি ক্যাভিয়েট দাখিল হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে।চলতি সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি মহম্মদ শাব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চের রায়ে, ২০১৬ সালের গোটা নিয়োগ প্যানেলই বাতিল হয়ে গিয়েছে। বৃহত্তর বেঞ্চ জানিয়েছে, -‘মোট ১৭ রকমভাবে বেনিয়ম হয়েছে। কে যোগ্য চাকরিপ্রাপক, কে অযোগ্য চাকরিপ্রাপক… তা আলাদা করা যায়নি’। উল্লেখ্য, গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ মিলিয়ে মোট ২৪ হাজার ৬৪০ শূন্যপদ ছিল। তার মধ্যে বোর্ডের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী নিয়োগপত্র ইস্যু হয়েছিল ২৫ হাজার ৭৫৩। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে সমস্ত নিয়োগপত্র বাতিল হয়ে গিয়েছে। ব্যতিক্রম শুধু বীরভূমের ক্যানসার আক্রান্ত সোমা দাসের চাকরি। গত সোমবার হাইকোর্টের রায় প্রকাশ্যে আসার পরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার কথা জানিয়ে দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এই রায় ‘বেআইনি’। তারপরই রাজ্য সরকার, পর্ষদ, কমিশন হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে। আগামী সোমবারই সুপ্রিম কোর্টে সেই মামলার শুনানির সম্ভাবনা। সেখানে ‘যোগ্য’ চাকরিপ্রাপকদের হয়ে সওয়াল করবে স্কুল সার্ভিস কমিশন। আগামী সোমবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চই শুনবে এই মামলা। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ শুনবে এই মামলা। জানা গেছে, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে থাকবেন বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্র। আরও জানা গেছে , সোমবার বেলা ১২টা নাগাদ শুনানি হতে পারে। উল্লেখ্য, মামলা দায়েরের পর সুপ্রিম কোর্ট সূত্রে জানা গিয়েছিল, মামলার শুনানির দিন স্থির হয়েছে আগামী ৩ মে। কিন্তু কোন বিচারপতির বেঞ্চ সেই মামলা শুনবে তা জানানো হয়নি। মামলাকারী পক্ষ চেয়েছিল, মামলার শুনানি যেন হয় প্রধান বিচারপতির বেঞ্চেই। শনিবার দেখা গেল, এগিয়ে এসেছে মামলার শুনানির দিন। আগামী সোমবার বেলা ১২টা থেকেই শুনানি শুরু হবে বলে জানা গেছে। গত সোমবার এসএসসির নিয়োগে ‘দুর্নীতি’র মামলায় রায় ঘোষণা করেছিল কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ ২০১৬ সালের নিয়োগের প্রক্রিয়া বাতিল ঘোষণা করে। এতে চাকরি হারান ২৫,৭৫৩ জন। যাঁরা মেয়াদ-উত্তীর্ণ প্যানেলে চাকরি পেয়েছিলেন, যাঁরা সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন, তাঁদের বেতন ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। চার সপ্তাহের মধ্যে ১২ শতাংশ হারে সুদ-সহ বেতন ফেরত দিতে বলা হয়েছে ওই চাকরিপ্রাপকদের। হাইকোর্ট এর বৃহত্তর বেঞ্চ জানায়, -‘এসএসসি দুর্নীতি সংক্রান্ত অভিযোগগুলি নিয়ে তদন্ত চালিয়ে যাবে সিবিআই। প্রয়োজনে তারা সন্দেহভাজনদের হেফাজতে নিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে’।সাধারণ চাকরিপ্রার্থীদের একাংশের অভিযোগ , -‘অযোগ্যদের চাকরি দেওয়ার জন্য বাড়তি পদ তৈরি করা হয়েছিল এসএসসিতে। সেই পদ তৈরির অনুমোদন দিয়েছিল ক্যাবিনেট মন্ত্রিসভা।কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই কে প্রয়োজনে হেফাজতে রাখার ছাড়পত্র দেওয়া হয়