এক হাঁটু কাদা, কাঁধে করে নিয়ে যাওয়া হল মৃতদেহ
সেখ রিয়াজুদ্দিন বীরভূম
শেষ যাত্রাও নিরাপদ নয় খয়রাসোল থানার মাটিয়ালা গ্রামের মানুষের কাছে।গত ৫০ বছর ধরে এই অবস্থায় ভুক্তভোগী। এমনই রাস্তার বেহাল চিত্র বীরভূম জেলার খয়রাশোল ব্লকের কেন্দ্রগড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে মাটিয়ালা গ্রামে। বৃষ্টি হলে তো দুর্ভোগ আরও বেশি। পাকা রাস্তার অভাবে মৃতকে সমাধিস্থ করতে গেলেও জলেকাদায় প্রায় ডুবে যেতে হয় শববাহকদের। জলযন্ত্রণার মধ্যেই এক করুণ ছবি দেখা গেল মাটিয়ালা গ্রামে। এই গ্রামের মানুষজনের মরেও যেন শান্তি নেই। কথায় আছে মারা গেলে শান্তি পায় মানুষ কিন্তু এই গ্রামে ঠিক তার উল্টো চিত্র দেখা যায়। মাটিয়ালা গ্রামে কেউ মারা গেলে মাটি দেওয়ার জন্য নিয়ে যেতে হয় প্রায় আড়াই কিলোমিটার দূরে কবরস্থানে। সেখানে জানাজায় অংশ গ্রহণ কিম্বা মাটি দেওয়ার ক্ষেত্রে এই রাস্তায় ভরসা। যার ফলে নাজেহাল হতে হয় গ্রামবাসীদের। দীর্ঘদিন ধরে গ্রামবাসীদের দাবি এই কবরস্থান যাওয়ার রাস্তা যেন ভালো করে দেওয়া হয়। গ্রামবাসীদের আক্ষেপ যেন মরেও শান্তি নেই আমাদের। শুধুমাত্র প্রতিশ্রুতিই সার হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাছাড়াও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন জায়গায় গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষের জন্য পথশ্রী প্রকল্পের আওতায় রাস্তা তৈরি করে দিয়েছেন। কিন্তু এই গ্রামের কাদায় ভর্তি রাস্তাটা আজ পর্যন্ত তৈরি হইনি বলে অভিযোগ করেন গ্রামবাসীরা। গ্রামবাসী জসিম খান জানান, আমার বয়স হচ্ছে ৩৬ বছর। তখন থেকেই দেখছি এরকমই আছে রাস্তাটা। বৃষ্টির কারণে রাস্তা কাদায় ভরে যাওয়ায় মৃতদেহ নিয়ে কবরস্থানে যাওয়া খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। গ্রামের মানুষজন মিলে কোনোমতে মৃতদেহ নিয়ে কবরস্থানে এলাম। জল-কাদার মধ্যে দিয়ে হেঁটে যেতে হয়, যা খুবই কষ্টকর ছিল। অনেক কষ্টে আমরা কবরস্থানে পৌঁছালাম। পাশাপাশি স্থানীয় মসজিদের ইমাম নিজামুদ্দিন রিজভী জানান, রাস্তাটা এত খারাপ যে, যারা এই রাস্তা দিয়ে এসেছে একমাত্র তারাই জানে। তাছাড়াও গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে প্রশাসনকে বারবার জানিয়েও কোন সুরাহা হয়নি। গ্রামে কারোর মৃত্যু হলে এই জায়গায় প্রত্যেককে আসতে হবে। তবে বেহাল রাস্তার জন্য সকলে আসতে পারেন না। তাই আমি রাজ্য সরকারকে অনুরোধ করব দ্রুত রাস্তা মেরামতের।