এনআইএ আধিকারিক বদলী মামলায় হস্তক্ষেপ করলো না হাইকোর্ট
মোল্লা জসিমউদ্দিন,
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ-র সুপার পদমর্যাদার আধিকারিককে বদলি করতে হবে, এই আবেদন করা হয়েছিল শাসক দল তৃণমূলের তরফে। সেই আবেদনে হস্তক্ষেপ করল না কলকাতা হাইকোর্ট। বদলী করানোর এক্তিয়ার নেই বলে জানিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এনআইএ সুপার ধনরাম সিং-এর ভূমিকা প্রশ্ন তুলেছিল শাসক দল।এনআইএর এসপি ধনরাম সিংকে বদলির নির্দেশের দাবি জানিয়ে তৃণমূলের করা আবেদনে কর্ণপাত করল না কলকাতা হাইকোর্ট। আদালত জানিয়েছে , -‘কেন্দ্রীয় সংস্থার আধিকারিকদের বদলির নির্দেশ দেওয়ার অধিকার নেই আদালতের’। যা আদালতে তৃণমূলের আরও এক ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে। তৃণমূল দাবি করেছিল, -‘গত ২৬ মার্চ ধনরাম সিং-এর বাড়িতে গিয়েছিলেন বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র সিং’। তা নিয়েই প্রশ্ন তোলে তৃণমূল। কলকাতা হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ,- তৃণমূল চাইলে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করতেই পারে। ধনরাম সিং-এর বদলি চেয়ে প্রথমে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিল তৃণমূল। সেখানে সুরাহা না মেলায় মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে। এদিন ছিল সেই মামলার শুনানি। এদিন এনআইএর আইনজীবী এজলাসে জানান , -‘তদন্ত থেকে বাঁচতে এই ধরনের পদক্ষেপ করছে অভিযুক্তরাই’। অপরপক্ষে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী জানাযন -‘ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের বদলি তাদের এক্তিয়ারভুক্ত নয়’। তাই কোনও হস্তক্ষেপ করবে না তারা। উল্লেখ্য, তৃণমূল দাবি করেছে, গত ২৬ মার্চ নিউ টাউনের একটি আবাসনে ধনরাম সিং-এর বাড়ি যেতে দেখা গিয়েছে বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র সিং-কে। সেখানে এসপি-কে সাদা খামে করে টাকা দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। জিতেন্দ্র যে এনআইএ আধিকারিকের বাড়িতে গিয়েছিলেন তার সিসিটিভি ফুটেজও তৃণমূলের কাছে আছে বলে দাবি করেছিল শাসক দল।গত ৬ এপ্রিল ভোর রাতে ভূপতিনগর বিস্ফোরণ কাণ্ডের তদন্তে দুই তৃণমূল নেতার খোঁজে নাড়ুয়াবিলা গ্রামে হানা দেন কেন্দ্রীয় আধিকারিকরা। ফেরার পথে এনআইএর গাড়ির ওপর হামলা চালায় তৃণমূল। সেই ঘটনা নিয়ে যখন রাজনীতি তোলপাড় তখন তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয় বিজেপির নির্দেশে কাজ করছে এনআইএ শাসকদলের এক মুখপাত্র সাংবাদিক বৈঠক করে দাবি করেন, -‘গত ২৬ মার্চ কলকাতা লাগোয়া উত্তর ২৪ পরগনার নিউটাউনের একটি আবাসনে এনআইএর এসপি ধনরাম সিংয়ের ফ্ল্যাটে গিয়েছিলেন বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র সিং। তাঁর হাতে ছিল একটি টাকা ভর্তি সাদা খাম। ধনরাম সিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করে ভোটের আগে কোন কোন তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করতে হবে তাদের নামের তালিকা ও টাকা দেন তিনি’। প্রমাণ হিসাবে ওই আবাসনের ভিজিটরস বুকে জিতেন্দ্র সিংয়ের সই দেখান তিনি।ধনরাম সিংয়ের ফ্ল্যাটে যাওয়ার কথা অস্বীকার করেননি জিতেন্দ্র। বিজেপির তরফে দাবি করা হয়, এসপি পদমর্যাদার আধিকারিকের বাসভবনেও একটি দফতর থাকে। তদন্তের সঙ্গে যুক্ত কোনও তথ্য – প্রমাণ দিতে সেই দফতরে যে কেউ যেতে পারেন। এর পরই ধনরামকে বদলির দাবিতে সরব হয় তৃণমূল। সেই দাবিতে আদালতের দ্বারস্থ হয় তারা। এদিন ছিল সেই মামলার শুনানিতে আদালতের তরফে তৃণমূলের আবেদন পত্রপাঠ খারিজ করে দেওয়া হয়। সঙ্গে জানানো হয়, কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থার আধিকারিকদের বদলির নির্দেশ দেওয়ার এক্তিয়ার নেই আদালতের।এখন দেখার কলকাতা হাইকোর্টের এই নির্দেশ কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যায় কিনা শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস?