ওয়েস্ট বেঙ্গল গ্রামীণ ব্যাঙ্ক রিটায়ারড স্টাফ এসোসিয়েশনএর সাধারণ সম্মেলন ।

Spread the love

ওয়েস্ট বেঙ্গল গ্রামীণ ব্যাঙ্ক রিটায়ারড স্টাফ এসোসিয়েশনএর সাধারণ সম্মেলন ।


সাধণ মন্ডল বাঁকুড়া:-
বাঁকুড়া অঞ্চলিক কমিটির প্রথম বিশেষ সাধারণ সম্মেলন
১৪ আগস্ট ওয়েস্ট বেঙ্গল গ্রামীণ ব্যাংক রিটায়ার্ড স্টাফ এসোসিয়েশনের প্রথম সাধারণ সম্মেলন বাঁকুড়া শহরের এক বেসরকারি লজে অনুষ্ঠিত হলো।
কেন্দ্রীয় সরকারের “এক রাজ্য – এক গ্রামীণ ব্যাঙ্ক” নীতি রূপায়ণের ফলে সরকারী নির্দেশে আমাদের রাজ্যের তিনটি গ্রামীণ ব্যাঙ্ক তথা বঙ্গীয় গ্রামীণ বিকাশ ব্যাঙ্ক, পশ্চিমবঙ্গ গ্রামীণ ব্যাঙ্ক ও উত্তরবঙ্গ ক্ষেত্রীয় গ্রামীণ ব্যাঙ্ক একীকরণ বা এমালগামেশনের মাধ্যমে গঠিত হয়েছে একটি নুতন ব্যাঙ্ক যার নাম ওয়েস্ট বেঙ্গল গ্রামীণ ব্যাঙ্ক – পথচলা শুরু করেছে বিগত ১লা মে ২০২৫ থেকে।
ফলশ্রুতিতে রাজ্যের পূর্বতন ব্যাঙ্ক গুলির অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের ট্রেড ইউনিয়নগুলিও সাংগঠনিক স্তরে মিলন বা সংযুক্তিকরণের মাধ্যমে গঠিত হয়েছে ওয়েস্ট বেঙ্গল গ্রামীণ ব্যাঙ্ক রিটায়ারড স্টাফ এসোসিয়েশন যেটি রাজ্যের গ্রামীণ ব্যাঙ্ক ক্ষেত্রে অবসরপ্রাপ্ত দের সর্ব বৃহৎ সংগঠন। এই নুতন সংগঠন প্রত্যেকটি জেলায় বিশেষ সাধারণ সম্মেলনের মাধ্যমে পুনর্গঠন ও পর্যালোচনা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই সিদ্ধান্ত অনুসারে আজ ১৪ই আগস্ট ২০২৫ তারিখে বাঁকুড়া বাইপাস স্থিত আমন্ত্রণ লজের সভাগৃহে আমাদের আঞ্চলিক কমিটির বিশেষ সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
সম্মেলন এ পতাকা উত্তোলন ও শহীদ বেদীতে মাল্যদান করার পর শুরু হয়। সম্পাদকীয় প্রতিবেদন পাঠ করেন সম্পাদক সুধাংশু শেখর পান্ডা।
১৯৭৫ সালে গঠিত হওয়া গ্রামীণ ব্যাঙ্ক গুলির কর্মচারীরা বাণিজ্যিক ব্যাংকের কর্মীদের সমতুল বেতন বা পেনশন কিছুই পেতেন না। সমকাজে সমবেতনের দাবিতে আমাদের কেন্দ্রীয় সংগঠন AIRRBEA সাংগঠনিক ও আইনি লড়াই করে সুপ্রিম কোর্টের মাধ্যমে প্রথমে বাণিজ্যিক ব্যাংকের কর্মীদের সমতুল বেতন ও পরবর্তীতে ২০১৮ সালে অবসরপ্রাপ্ত দের জন্য একই হারে ও নিয়মে পেনশন কেন্দ্রীয় সরকারের অনিচ্ছুক হাত থেকে আদায় করেছেন। কেন্দ্রীয় সরকার প্রথমে অতীতের দিন থেকে পেনশন দিতে অস্বীকার করলেও পরে ২০২৪ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ০১.১১.১৯৯৩ থেকে পেনশন লাগু করতে বাধ্য হয়। এই লড়াইয়ে গ্রামীণ ব্যাঙ্ক কর্মচারীরা ঐতিহাসিক জয় লাভ করেন।

গ্রামীণ ব্যাঙ্ক অফিসার, কর্মচারী ও অবসরপ্রাপ্তদের তিনটি পৃথক জাতীয় ফেডারেশনের ঐক্যবদ্ধ রূপ হলো কনফেডরেশন AIRRBEA – যা ভারতবর্ষে গ্রামীণ ব্যাঙ্ক সেক্টরে প্রতিনিধিত্বকারী সর্ব বৃহৎ সংগঠন। নিজেদের আর্থিক দাবী দাওয়া ছাড়াও গ্রামীণ ব্যাংকের মাধ্যমে দেশের কৃষিজীবী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, অন্যান্য পেশাজীবি, সাধারণ জনগণ বিশেষত গরিব ও আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা মানুষের ও সমগ্র গ্রাম ভারতের উন্নয়নের জন্য লড়াই করে আসছে। আজকের সভার আলোচনার প্রেক্ষাপটও এই বিষয়গুলিই।

আজকের সভায় প্রধান বক্তা আব্দুল সাঈদ খান, NFRRRBS, আমাদের জাতীয় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এই বিষয়গুলিই বিশদে আলোচনা করেন এবং অবসরপ্রাপ্তদের ভবিষ্যতের ইতিকর্তব্য সম্বন্ধে পরামর্শ দেন।

এই সভায় IPO তথা শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে গ্রামীণ ব্যাংকের ঘুরপথে বেসরকারিকরণের নীতির তীব্র বিরোধিতা করা হয়, গ্রামীণ ব্যাঙ্কগুলিকে স্বাধীন ও সদর্থক ভাবে কাজ করার সুযোগ দেওয়ার জন্য বাণিজ্যিক সংস্থাপক ব্যাঙ্ক মুক্ত জাতীয় গ্রামীণ ব্যাঙ্ক গঠনের দাবী করা হয়। এছাড়াও পেনশন আপডেশন, কমিউটেড পেনশন সঠিক সময়ে ফেরৎ দেওয়া, প্রবীণদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় মেডিকেল ইন্সুরেন্সর প্রিমিয়ামে অনুদান দেওয়া, গ্রামীণ ব্যাংকে সঠিক সংখ্যায় কর্মী নিয়োগ ও সকলের জন্য সমতুল প্রমোশন, সকলের জন্য পুরাতন পেনশন স্কিম চালু করা, অস্থায়ী কর্মচারীদের চাকরি নিয়মিতকরণ করা ইত্যাদির দাবী করা হয় এবং দাবীগুলি আদায়ে কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশ মত লড়াই আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সর্ব সম্মতিক্রমে প্রস্তাব এই সভায় গৃহীত হয়। আঞ্চলিক কমিটির এই বিশেষ সাধারণ সভা গুরুদাস লক্ষন ও সুধাংশু শেখর পান্ডা, যথাক্রমে সভাপতি ও সম্পাদক, এই দুজনের নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী কমিটি সর্ব সম্মতিক্রমে আগামী তিন বৎসর কার্যকালের জন্য নির্বাচিত করে। দুই শতাধিক সদস্য প্রতিনিধিদের উজ্জ্বল উপস্থিতিতে এই বিশেষ সাধারণ সম্মেলন সর্বাত্মকভাবে সফল হয়। উপস্থিত ছিলেন অনাদি মাহাতো ও বিধান চক্রবর্তী অজিত ঘোষ প্রমূখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *