কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে মানিকতলা বিধানসভা উপনির্বাচনের সম্ভাবনা প্রবল 

Spread the love

কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে মানিকতলা বিধানসভা উপনির্বাচনের সম্ভাবনা প্রবল 

মোল্লা জসিমউদ্দিন, 

অবশেষে উত্তর কলকাতার মানিকতলা বিধানসভার এলাকাবাসীদের প্রায় দু বছর বিধায়ক না থাকার ‘যন্ত্রণা’ কাটছে।বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের নির্দেশে খুব তাড়াতাড়ি ভোট হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল হয়ে উঠলো বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। অবশেষে কাটল মানিকতলা বিধানসভা উপনির্বাচনের জট। গত বিধানসভার ভোটে বিজেপি প্রার্থী  কল্যাণ চৌবে কে মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়ার নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। বিজেপি নেতা কল্যাণ চৌবের ইলেকশন পিটিশন প্রত্যাহার করার আবেদন মঞ্জুর করল কলকাতা হাইকোর্ট। কলকাতা হাইকোর্টের  বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত মামলাকারীর আর্জি মেনে মামলা প্রত্যাহার করার অনুমতি দেন। রাজ্যে যে হাতেগোনা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ছিলেন, যাঁরা টানা বিধায়ক হয়েছেন।তাঁদের মধ্যে অন্যতম প্রয়াত মন্ত্রী সাধন পান্ডে।যিনি টানা ৯ বার বিধায়ক ছিলেন উত্তর কলকাতা এলাকায়। জানা গিয়েছে, গত ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা মানিকতলা বিধানসভা কেন্দ্রের দীর্ঘদিনের বিধায়ক সাধন পাণ্ডের মৃত্যুর পর ওই কেন্দ্রে শূন্যতা তৈরি হয়।১৯৫১ সালের জন প্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী কোন বিধায়কের ইস্তফা এবং মৃত্যুর কারণে কোনও বিধানসভা কেন্দ্রে শূন্যতা তৈরি হলে সেই কেন্দ্রে শূন্যতা তৈরির দিন থেকে ছ’মাসের মধ্যে উপনির্বাচন করে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করা বাধ্যতামূলক। তবে  সাধন পাণ্ডের মৃত্যুর পর বছর খানেক ঘুরে গেলেও তেমনটা হয়নি। কারণ গত বিধানসভা নির্বাচনে সাধন পাণ্ডে মানিকতলা কেন্দ্র থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হওয়ার পরেই গোটা নির্বাচন প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী কল্যাণ চৌবে।মামলার দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টেও মামলা দায়ের হয়েছিল। সেখানে সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়েন কল্যাণ। কারণ তিনি হাইকোর্টে মামলা করলেও শুনানিতে বার বার মুলতবি চাইছিলেন। আর তাতেই ক্ষোভ প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্ট।দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট  হাইকোর্টকে নির্দেশ দেয়,-‘ দৈনিক শুনানি করে দ্রুত মামলার এর নিষ্পত্তি করতে হবে’। আগামী ৩০ জুন সময়সীমা নির্দিষ্ট করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। তারই মধ্যে গত গত ২৯ এপ্রিল, হাইকোর্টে দায়ের হওয়া ‘ইলেকশন পিটিশন’ প্রত্যাহারের আবেদন জানান কল্যাণের আইনজীবী। তিনি বলেন, ব্যক্তিগত কারণে তাঁর মক্কেল এই মামলা তুলে নিতে চান। তার পরিপ্রেক্ষিতেই চূড়ান্ত শুনানির দিন ধার্য করে আদালত। কল্যাণ চৌবের মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়ার নির্দেশ দিল  কলকাতা হাইকোর্ট। গত ২০২১ সালেও জেতেন তৃণমূল প্রার্থী সাধন পান্ডে । সেবার বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন কল্যাণ চৌবে। হেরে গিয়ে কল্যাণ মানিকতলার ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা করেন। এদিকে ২০২২ সালে শারীরিক অসুস্থতার কারণে প্রয়াত হন সাধন পাণ্ডে। তবে সেই মামলার কারণে এখনও উপনির্বাচন হয়নি ওই কেন্দ্রে।এরইমধ্যে কল্যাণের বারবার অনুপস্থিতির কারণে হাইকোর্টে এই মামলার শুনানি বারবার পিছিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে গত মাসে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। শীর্ষ আদালত কল্যাণকে তীব্র ভর্ৎসনা করে। শোকজ নোটিস দেওয়া হয় মানিকতলার বিজেপি প্রার্থীকে। সুপ্রিম কোর্টে ওই ভর্ৎসনার পরে গত ২৯ এপ্রিল হাইকোর্টে মামলা প্রত্যাহার করার কথা জানান কল্যাণ। আবেদন বিবেচনা করার কথা জানিয়েছিলেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। বৃহস্পতিবার পিটিশন প্রত্যাহারের অনুমতি দেন তিনি। এবার ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে এবার কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন সক্রিয় ভূমিকা নিতে বাধ্য হবে।তা না হলে পুনরায় সুপ্রিম কোর্টে দ্রুত উপনির্বাচন চেয়ে মামলা হতে পারে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *