গুসকরায় আয়োজিত হলো দুর্গাপুজো কার্নিভ্যাল
জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী
মঞ্চে উপবিষ্ট স্থানীয় বিধায়ক, ইতিহাস গবেষক, অধ্যাপক, শিক্ষক, সঙ্গীত শিল্পী, জাতীয় দলের ক্রীড়াবিদ, পুলিশ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তি সহ আরও অনেকেই। মঞ্চের সামনে উন্মুক্ত প্রাঙ্গনে চলছে সঙ্গীত, নৃত্য, লাঠি নৃত্য, ছৌনাচ। রাস্তার দু'পাশে কয়েক হাজার উৎসুক দর্শক। শহরের বুকে আয়োজিত প্রথম কার্নিভ্যালে সাক্ষী থাকার জন্য কার্যত সমগ্র শহরবাসী ও পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের গন্তব্যস্থল একটাই - গুসকরা বাসস্ট্যান্ড। রাস্তায় নেমে পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যস্ত পুরসভার চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান সহ অন্যান্যরা। মাঝখান দিয়ে চলেছে শহরের একের পর এক বারোয়ারি দুর্গা প্রতিমা। এভাবেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জ্জীর অনুপ্রেরণায়, স্থানীয় বিধায়ক অভেদানন্দ থাণ্ডারের সহযোগিতায় ও গুসকরা পুরসভার উদ্যোগে ২৬ শে অক্টোবর রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের সঙ্গে গুসকরা শহরের বুকে প্রথম বারের জন্য আয়োজিত হলো দুর্গাপুজোর 'শরণ্যে ত্র্যম্বকে গৌরী' কার্নিভ্যাল।
এতদিন ওরা বিসর্জন কার্নিভ্যালের স্বাদ মিটিয়েছে টিভির পর্দায়। কেউ কেউ হয়তো কলকাতা শহরে গিয়ে কার্নিভ্যালের আনন্দ উপভোগ করেছে। কিন্তু সবার পক্ষে সেটা সম্ভব নয়। যেমন সম্ভব নয় শহরের ১৬ টি ওয়ার্ডের ঠাকুর দর্শন করা। ফলে প্রবীণ ও মহিলাদের মনে একটা আক্ষেপ থেকে গিয়েছিল। অবশেষে কার্নিভ্যালের মাধ্যমে তাদের এই আক্ষেপ দূর হলো।
কার্নিভ্যাল উপলক্ষ্যে সেজে ওঠে গুসকরা বাসস্ট্যান্ডের সামনের অংশ। তৈরি করা হয় মঞ্চ। উপস্থিত দর্শকদের করতালির মধ্যে দিয়ে শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে একে একে হাজির হয় এগারোটি দুর্গা প্রতিমা। মঞ্চের সামনে এসে সংশ্লিষ্ট পুজো কমিটিগুলি সাঁওতালি নৃত্য সহ অন্যান্য নৃত্য তুলে ধরে।
এর আগে উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে গলায় উত্তরীয় পড়িয়ে অতিথিদের বরণ করে নেওয়া হয়। প্রদীপ প্রজ্বলিত করে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন বিশিষ্টরা। একইসঙ্গে মঞ্চের সামনে রাখা গাছে জল সিঞ্চন করেন শহরের একজন সাধারণ বাসিন্দা। গুসকরা পুলিশ ফাঁড়ির ওসি নীতু সিং সহ দশজন মহিলাকে ‘দশভুজা’ সম্মানে সম্মানিত করা হয়।
সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন অরিত্রিকা পাল ও সুব্রত শ্যাম। তাদের সঞ্চালনার গুণে অনুষ্ঠানটি অন্য উচ্চতায় পৌঁছে যায়।
প্রথমবারের জন্য পুজো কার্নিভ্যালের আয়োজন করতে যারা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তাদের প্রত্যেকের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে গুসকরা পুরসভার চেয়ারম্যান কুশল মুখার্জ্জী বললেন - সত্যিই এটা এক নতুন অভিজ্ঞতা। মনের মধ্যে আশঙ্কা ছিল সব ঠিকঠাক হবেতো! সামান্য কিছু ত্রুটিবিচ্যুতি থাকলেও শেষপর্যন্ত আমরা সফল হয়েছি। এতবড় একটি অনুষ্ঠান সফলভাবে শেষ করতে সাহায্য করার জন্য আবার তিনি প্রত্যেককে ধন্যবাদ জানান।