চক্ষু পরীক্ষা শিবিরে খুশীর হাওয়া
— গলসি ১ নং এবং ২ নং ব্লকের প্রচুর মানুষের সমাগমে ১৭ই সেপ্টেম্বর চক্ষু পরীক্ষা শিবির হলো গলসি থানার পুরসা ১ নং প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সকলের জন্য পত্রিকা আয়োজিত এই ক্যাম্পে সকল মানুষের মধ্যে আলাদা উচ্ছাস পাওয়া গেল। একদিকে অসহায় মানুষেরা বিনামূল্যে এমন সুবিধা পেয়ে যেমন আনন্দিত, অন্যদিকে সকলের জন্য পত্রিকার সম্পাদক এমন ক্যাম্পের আয়োজন করে প্রচুর তৃপ্তি পাচ্ছেন বলে জানা গেছে। তিনি বলেন, এলাকার অসহায় মানুষদের চক্ষু অপারেশনের এমন সুযোগ করে দিতে যে কি আনন্দ তা আমি অনুধাবন করেছি। এক ব্যাক্তি যখন আমার হাত দুটো ধরে বলেছিলেন, চোখে ভালো দেখতে পায় না,আবার বাইরে যাওয়ার ক্ষমতাও নেই। টাকার অভাবে একবেলা না খেয়ে অন্যবেলায় আহার করে জীবন কাটায়। তার এমন করুণ কাহিনী শুনে আমিও প্রতিজ্ঞা করলাম,আমার যত ক্ষতিই হোক না কেন, এই সকল মানুষের সহযোগিতা করতে সারাজীবন এমন ক্যাম্প করে যাবো। পুরুলিয়া জেলার মুরাড্ডির সুবিখ্যাত নেতাজী চক্ষু হাসপাতাল যেভাবে হাজার হাজার দূঃস্থদের চক্ষু অপারেশন করে চলেছেন তা একটা ঐতিহাসিক নজীর। গলসি এলাকা থেকে মুরাড্ডি পর্যন্ত বাসে নিয়ে যাওয়া আবার নিয়ে আসা বিপুল টাকার খরচা। এমনকি পরিস্কার পরিছন্ন বেড এবং যত্ন সহকারে আপ্যায়ন ছাড়াও বিভিন্ন ওয়ার্ডে দামী মেশিন দিয়ে চক্ষু পরীক্ষা করে ডাক্তারবাবুরা লেন্স উপহার দিয়ে অপারেশন করছেন। এখানেই শেষ নয়। প্রত্যেক রোগীর কালো চশমা ও পাওয়ার চশমা ছাড়াও ওষুধ দিয়ে চোখে ড্রেসিং করে তবেই ছাড়া হয়। ফলে এমন মুগ্ধ ব্যাবহারে এই নেতাজী হাসপাতালের প্রত্যেক কর্মীদের সুনাম করেন রোগীরা। পুরসায় এই চক্ষু শিবিরে অপারেশনের জন্য নির্বাচন হয়েছেন ৮২ জন। তাদেরকে প্রথম দফায় ৫১ জন ও দ্বিতীয় দফায় ২১ জন রোগীকে মুরাড্ডি নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ক্যাম্পের মাধ্যমে এমন সূবর্ণ সুযোগ করে দেন নেতাজী আই হসপিটালের অফিসার রাজেশ চক্রবর্তী ও সূরর্শন প্রামাণিক। পুরসা ছাড়াও পারাজ,জাগুলিপাড়া, সি গ্রাম,বেতালবন,সীমনোড়,বুদবুদ, গলসি,রামপুর,বুন্দুটিয়া, গলিগ্রাম,সিমপুর,ভাষাপুর,পোতনা,শিড়রাই,কোলকোল,পুরন্দরগড়,আটপাড়া,রানাডি প্রভৃতি গ্রাম থেকে রোগীরা আসেন চক্ষু পরীক্ষা করাতে। একমাস পর এই রোগীদের পাওয়ার টেষ্ট করে সকলকে পাওয়ার চশমা দেওয়া হবে। এতসব পরিষেবা দেওয়ায় গলসি এলাকার মানুষ প্রশংসা করেন নেতাজী হাসপাতালের ডাক্তার ও অন্যান্য কর্মীদের। এই শিবিরে নেতাজী হাসপাতালের ডাক্তারবাবু ও অন্যান্য কর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে এই ক্যাম্পকে স্বার্থক করে তোলেন।