চাকরিহারাদের রাজ্যের ভাতা মামলায় স্থগিতাদেশ বাড়লো ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত 

Spread the love

চাকরিহারাদের রাজ্যের ভাতা মামলায় স্থগিতাদেশ বাড়লো ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত 

মোল্লা জসিমউদ্দিন, 

২০১৬ সালের বাতিল হওয়া এসএসসি প্যানেলের চাকরিহারা কর্মীদের জন্য রাজ্য সরকারের ঘোষিত ভাতা কার্যকর হচ্ছে না এখনই। কলকাতা হাইকোর্ট শুক্রবার জানিয়ে দিয়েছে, আগামী ৩০ জানুয়ারি, ২০২৬ পর্যন্ত ভাতা দেওয়া যাবে না।এ দিন বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চে মামলার শুনানি ওঠে। এর আগে আদালত অন্তর্বর্তী নির্দেশে জানিয়েছিল, -‘২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভাতা দেওয়া যাবে না’।শুক্রবার সেই স্থগিতাদেশের মেয়াদ আরও বাড়ানো হল।রাজ্য সরকার গত জুলাই মাসে ঘোষণা করেছিল, চাকরিহারা গ্রুপ সি কর্মীরা মাসে ২৫ হাজার টাকা এবং গ্রুপ ডি কর্মীরা মাসে ২০ হাজার টাকা করে ভাতা পাবেন। তবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েই শুরু হয় বিতর্ক। মামলাকারীদের পক্ষ থেকে যুক্তি দেওয়া হয়, সুপ্রিম কোর্ট ইতিমধ্যেই ২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেল বাতিল করেছে এবং তার রায় অনুযায়ী এই ধরনের আর্থিক সুবিধা দেওয়ার কোনও বৈধতা নেই। বিচারপতি সিনহার পর্যবেক্ষণ, -‘এই ভাতা দেওয়ার বৈধতা এবং সরকারের সিদ্ধান্তের সাংবিধানিক ভিত্তি নিয়ে বিস্তারিত শুনানি প্রয়োজন। তাই মামলার মীমাংসা না হওয়া পর্যন্ত কোনও ভাতা দেওয়া যাবে না’।প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতি ও অস্বচ্ছতার অভিযোগে ২০১৬ সালের পুরো এসএসসি প্যানেল বাতিল করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। এর ফলে রাতারাতি চাকরি হারান প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী। এই রায় কার্যত বাংলার শিক্ষা প্রশাসনে এক বড় ভূমিকম্প তৈরি করেছিল। বহু পরিবার আর্থিক অনিশ্চয়তায় পড়েন, অনেকে আবার বছরের পর বছর চাকরি করে হঠাৎ কর্মহীন হয়ে পড়েন।বিচারপতি অমৃতা সিনহার  নির্দেশ, আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৬ সালের ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত ভাতা দেওয়া যাবে না।রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, যারা গ্রুপ সি-তে কর্মরত ছিলেন তাদের ২৫ হাজার টাকা ভাতা দেওয়া হবে এবং যারা গ্রুপ ডি-র কর্মী ছিলেন তারা ২০ হাজার টাকা ভাতা পাবেন। তবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরই এর বিরোধিতায় মামলা হয় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে। সেই সময়ই আদালত স্পষ্ট করেছিল, কোনও ভাবেই এই ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণযোগ্য নয়। আর এই সিদ্ধান্তে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করা হয়।এই মামলায় প্রথমেই কলকাতা হাইকোর্ট প্রশ্ন তুলেছিল, -‘যাদের ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার তারা কীসের ভিত্তিতে এই টাকা পাবেন এবং ২৫ হাজার বা ২০ হাজার টাকার অঙ্কটাও কী ভিত্তি নির্ধারিত হল?’ সরকার ঠিক কী ভেবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা জানতে চায় রাজ্যের উচ্চ আদালত। বিশেষত, যাদের আর্জি সুপ্রিম কোর্টও গ্রহণ করেনি তাদের কেউ কেন ঘরে বসে টাকা পাবে তাও রাজ্য সরকারের থেকে, এই নিয়েই আপত্তি ছিল কলকাতা হাইকোর্টের।বর্তমানে শীর্ষ আদালতের নির্দেশে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে পুরনোদের ভাতা দেওয়ার প্রশ্নে আদালতের কড়া অবস্থান রাজ্যের সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। কারণ, একদিকে চাকরিহারাদের আর্থিক সঙ্কট, অন্যদিকে আদালতের কঠোর নির্দেশ-এই দুইয়ের মাঝে রাজনৈতিক চাপও বাড়ছে রাজ্য সরকারের উপর বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *