জমিদাতাদের হাতে তুলে দেওয়া হলো চেক
দেউচা-পাঁচামি কয়লাখনি প্রকল্পের কাজ ত্বরান্বিত হচ্ছে
খায়রুল আনাম
এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম বীরভূমের মহম্মদবাজার ব্লকের দেউচা-পাঁচামি কয়লাখনি প্রকল্পের কাজ ক্রমশই এগিয়ে চলেছে। সেইসাথে এই প্রকল্পের কাজ বন্ধ করতে বিভিন্ন অপচেষ্টা হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। বলা হচ্ছে যে, সরকার বলপূর্বক এখানকার মানুষদের উচ্ছেদ করে এই কয়লাখনি করতে তৎপরতা দেখাচ্ছে। যদিও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্টভাবেই জানিয়ে দিয়েছেন যে, অনিচ্ছুক কারও জমি বলপূর্বক অধিগ্রহণ করা হবে না। স্বেচ্ছায় যাঁরা জমি দেবেন তাঁদের সরকারি প্যাকেজ অনুযায়ী জমির মূল্য, পুনর্বাসন, পরিবারের একজনকে সরকারি চাকরি ও অন্যান্য সুবিধা দেওয়া হবে। স্বেচ্ছায় যাঁরা জমি দিয়েছেন তাঁরা সরকারি চাকরি পেয়ে চাকরিতে যোগদানও করেছেন। ইতিমধ্যেই কয়লাখনির জন্য সরকারের হাতে যে জমি এসেছে এবং সরকারের হাতে যে খাস জমি রয়েছে, সেখানে অত্যাধুনিক যন্ত্র দিয়ে বোরিং করে যে কয়লা পাওয়া গিয়েছে তার গুণগত মানও পরীক্ষা করা হচ্ছে। আবার এই কয়লাখনির বিরোধীতাও করা হচ্ছে কয়েকটি মহল থেকে। বিগত পঞ্চায়েত ভোটের সময় সিপিএমের দিক থেকে এই কয়লাখনির বিরোধীতা করে জোর প্রচারও করা হয়। দলের যুবনেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে এলাকায় এনে কয়লাখনি এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধী আন্দোলন-হাওয়া উত্তপ্ত করার চেষ্টা হলেও, ওই এলাকায় পঞ্চায়েত ভোটে সিপিএমের শোচনীয় পরাজয়ের মধ্যে দিয়ে এলাকার মানুষ তাঁদের সুস্পষ্ট মতের ইঙ্গিত দিয়ে দিয়েছেন। এবার লোকসভা ভোটের আগে সিপিএম একই পরিস্থিতির উদ্ভব করতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। তাই দেউচা-পাঁচামি কয়লাখনির জন্য যাঁরা জমি দিয়েছেন তাঁরা চাইছেন, সরকারিভাবে দ্রুততার সাথে তাঁদের জমি রেজিষ্ট্রি করে অধিগ্রহণ করে নেওয়া হোক। এই দাবিতে ইচ্ছুক জমিদাতারা দেউচা-পাঁচামি কয়লাখনি প্রকল্পের আব্দারপুর অফিসে গিয়ে বিক্ষোভও দেখান।
আর তারপরই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জমি অধিগ্রহণের কাজকে ত্বরান্বিত করা হলো। ইচ্ছুক জমিদাতাদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় যে, কয়লাখনির জন্য জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় ১১ নম্বর লট পর্যন্ত জমি রেজিষ্ট্রেশন এবং চাকরির নিয়োগপত্র দেওয়ার কাজ হচ্ছে ধীর গতিতে। এরফলে ১২ এবং ১৩ নম্বর লটের কাজও শ্লথ হয়ে পড়েছে। ১২ নম্বর লটের কাজ শুরু হয়েছে গত ডিসেম্বর মাস থেকে। যে কাজে গতি আসছে না। আর এরপরই প্রশাসনিকস্তরে দ্রুততার সাথে সেই কাজ সম্পন্ন করে ১২ নম্বর লটের ২২৫ জন জমিদাতা এবং ১৩ নম্বর লটের ৪৩ জন জমিদাতাদের হাতে তাঁদের জমির মূল্যের চেক তুলে দেওয়া হলো। এরফলে দেউচা-পাঁচামি কয়লাখনি প্রকল্পের অগ্রগতি ত্বরান্বিত হলো বলেই বলা হচ্ছে।
ছবি : জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে।