পঞ্চায়েত এলাকার টোটো শহরের বুকে না চালানোর নির্দেশিকাই রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ টোটো চালকদের
সেখ রিয়াজুদ্দিন , বীরভূম:- অনেকে ঋণদেন করে জীবিকা নির্বাহ তথা কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে টোটো কিনে ব্যবসা শুরু করেন।এতদিন যাবৎ ঠিক চলছিল কিন্তু হঠাৎ পঞ্চায়েত শহরের বিভাজন রেখা টেনে দেওয়ায় টোটো চালকদের মাথায় যেন বজ্রাঘাত। জানা যায় ,রামপুরহাট পৌরসভা কর্তৃক ঘোষণা করা হয় যে ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে রামপুরহাট শহর এলাকায় পঞ্চায়েত এলাকার কোন টোটো প্রবেশ করবে না। সেই নির্দেশিকার প্রতিবাদে রবিবার রামপুরহাট পার্শ্ববর্তী ২৫-৩০টি গ্রামের হাজার খানেক টোটো চালকরা রামপুরহাটের বর্ডার ঝনঝনিয়া মোড় এর কাছে রামপুরহাট- দুমকা রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।
পঞ্চায়েত এলাকার টোটো চালকদের দাবি এই ধরনের নির্দেশিকা জারি করার আগে প্রশাসন আমাদের সঙ্গে কোন রকম আলোচনা করেনি। তাছাড়া দীর্ঘদিন ধরে পঞ্চায়েত এবং পৌর এলাকায় টোটো চালিয়ে জীবিকানির্বাহ করছি। পৌরসভা ও মহকুমা প্রশাসনের এরূপ সিদ্ধান্তের ফলে চরম সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। প্রতিটি টোটো চালক ব্যাংকের মাধ্যমে লোন নিয়ে গাড়ি কিনেছেন। এমন সিদ্ধান্তের জন্য প্রায় হাজার খানেক টোটো চালকের জীবন অনিশ্চিতয়তার মুখে ঠেলে দিয়েছে। অবরোধের জেরে রামপুরহাট-দুমকা রুটের সমস্ত বাস এবং পাথর শিল্পাঞ্চলের গাড়ি আটকে পড়ে।
পঞ্চায়েত এলাকার টোটো চালক রিন্টু আলী জানান আমরা দীর্ঘদিন ধরে পৌর এলাকায় টোটো চালিয়ে রুটি রুজি করে খাচ্ছি। পৌরসভা কর্তৃক যে নিয়ম কানুন রয়েছে তা পালন করে চলি, কিন্তু হঠাৎ করে পৌরসভা ও মহকুমা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে তা আমরা মানতে নারাজ। কারণ আমরা পঞ্চায়েত এলাকা থেকে প্যাসেঞ্জার নিয়ে পৌর এলাকার বিভিন্ন অফিস, আদালত, চিকিৎসাকেন্দ্র সহ সর্বত্র জায়গায় যাত্রীদের নিয়ে যায়। তাতে আমাদের জীবন জীবিকা নির্বাহিত হয়। এখন প্রশাসনের নির্দেশ অনুযায়ী যদি পৌরসভা এলাকা বাদ দিয়ে টোটো চালানো হয় সেক্ষেত্রে পঞ্চায়েত এলাকার এক বা দুই কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে।যারফলে যাত্রী সংখ্যা কমে যাবে ।স্বভাবতই রোজগারের পরিমাণ কমে যাবে। শেষ পর্যন্ত পৌরসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পঞ্চায়েত এলাকার কোন টোটো পৌরসভায় প্রবেশ না করে তাহলে আমরাও পঞ্চায়েতে এলাকার অনুরূপ ভাবেই রাস্তা অবরোধ করে রাখবো। যাতে রামপুরহাট পৌরসভার কোন গাড়ি পঞ্চায়েত এলাকার রাস্তার ওপর দিয়ে চলাচল করতে দেব না। উল্লেখ্য,পৌরসভার ভাগাড় রয়েছে পঞ্চায়েত এলাকায়। সেখানেও পৌরসভার কোন গাড়ি আমরা প্রবেশ করতে দেবো না। পৌরসভার পানীয় জলের ব্যবস্থা রয়েছে পঞ্চায়েত এলাকায় সেখানেও আমরা অবস্থান-বিক্ষোভ করা হবে।যাতে পঞ্চায়েত এলাকা থেকে পৌরসভার পানীয় জলের সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।
অন্য টোটো চালক সালাউদ্দিন শেখ জানান পৌরসভা এবং মহকুমা প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করছি আমরা পঞ্চায়েত এলাকার টোটো চালকরা সকলেই বিভিন্ন ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে টোটো কিনে জীবিকা নির্বাহ করছিলাম এই নির্দেশিকার ফলে আমরা কর্মহীন হয়ে পড়বো এবং আমাদের রুজি রোজগারে টান পড়বে। এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের ডেপুটি স্পিকার ডক্টর আশীষ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনিক মিটিংয়ে ছিলেন, তিনি কেন এ ধরনের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেননি? সে ব্যাপারে মন্তব্য করেন টোটো চালক সালাউদ্দিন শেখ। তিনি আরও বলেন, রামপুরহাট পার্শ্ববর্তী প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি তৃণমূলের দখলে।আমরা প্রত্যেকটা টোটো চালকই তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত তবুও বিধায়ক এবং পৌরপতির এই ধরনের সিদ্ধান্তে সকলেই মর্মাহত।এব্যাপারে রামপুরহাট মহকুমা শাসক সাদ্দাম নাভাস ঘটনা প্রসঙ্গে জানান ব্যাপারটি শুনলাম, দেখছি।