ফলন ও লাভ বাড়ছে তাই রাজা পাট রোপনে উৎসাহ চাষিদের
সম্প্রীতি মোল্লা,
রাজা পাট চাষ করে একর প্রতি অতিরিক্ত ১০ হাজার টাকা লাভের মুখ দেখছেন চাষিরা। লম্বায় সাধারণ পাটের চেয়ে অন্তত দু-ফুট বড় এবং আরও উন্নতমানের তন্তুর রাজা পাট নিয়ে গান বেঁধেছেন মাটির সংস্পর্শে থাকা শিল্পীরা। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় অভাবনীয় সাফল্যে খুশি এই পাটবীজের উদ্ভাবক সংস্থা নুজিভীডু সিডস। এই সাফল্য তুলে ধরতে সম্প্রতি তারা নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, মালদহ, দক্ষিণ দিনাজপুরের পরে উত্তর ২৪ পরগনাতেও রাজা পাটের উপর ‘মেগা ফিল্ড ডে’ অনুষ্ঠান করেছেন। ২৪ পরগনার বনগাঁ, ছোটা সেহানা গ্রামে এক অনুষ্ঠানে রাজা পাট নিয়ে গান গেয়ে শোনান লোকগীতি শিল্পী অভিজিৎ আচার্য।
রাজা পাটের বীজ উৎপাদনকারী সংস্থা নুজিভীডু সিডস জানিয়েছে, এই পাট একর প্রতি অতিরিক্ত ১০ হাজার টাকা লাভের সুযোগ করে দিচ্ছে কৃষকদের। এটা সম্ভব হয়েছে রাজা পাটের লম্বা আঁশ এবং অন্যান্য প্রজাতির চেয়ে এর একর প্রতি ন্যূনতম বাড়তি ২ কুইন্টাল উৎপাদন বেশি হওয়ার ফলে। তাদের দাবি, ২০২০ সালে, এন জে-৭০০৫ রাজা পাটের এই নতুন প্রজাতি নুজিভীডু সীডস এর গবেষণা বিভাগের প্রধান বিজ্ঞানী ডঃ মোহাম্মদ মসিউর রহমান কতৃক উদ্ভাবিত। তার পর থেকে পাট চাষের দুনিয়া অনেকটা বদলে গেছে। এই চাষে খরচ অন্যান্য পাটের প্রজাতির তুলনায় কম, সঙ্গে পাওয়া যায় উচ্চ ফলন, আরও ভালো গুণমানের তন্তু ও আগের চেয়ে বেশি লাভের সুযোগ। অন্যান্য প্রজাতির তুলনায় এই পাট দু ফুট বেশি লম্বা, অর্থাৎ বেশি ফলন, মোটা ছাল যা ফলন এবং তন্তুর গুণমান বাড়িয়েছে। ছাল মোটা হওয়ায় তন্তুর মানও অনেক উন্নত। তাই ফলনের সঙ্গে মান বেশি হওয়ায় দামও বেশি পাচ্ছেন চাষিরা। ভারতে মূলত যে ধরনের পাট চাষ হয় তার আঁশ বাংলাদেশের পাটের আঁশের চেয়ে ছোট হওয়ায় শিল্পক্ষেত্রে সমস্যা হয়ই। এখন সেই সমস্যার সমাধান হবে এনজে ৭০০৫ রাজা জুট চাষ করে। ইতিমধ্যেই বাড়তি লাভের মুখ দেখেছেন বিভিন্ন গ্রামের চাষিরা। অনেকের সংসারে স্বাচ্ছন্দ্য এসেছে। তাই ভবিষ্যতেও তাঁরা এই বীজই চাষ করতে চান।
একথা শুনে তা নিয়েই গান গাইলেন লোকগীতি শিল্পী অভিজিৎ আচার্য। সেই গান শুনে খুশি গ্রামের মানুষ। যাঁরা এখনও এই বীজে চাষ শুরু করেনি, এই গান শুনে তাঁরাও রাজা পাট চাষে উৎসাহ পাচ্ছেন।