বাবা ও সৎ মায়ের কাছে অবহেলিত কন্যার করুণ আবেদন
সেখ সামসুদ্দিন, ২৩ সেপ্টেম্বরঃ পূর্ব বর্ধমান জেলার মেমারি ১ ব্লকের দলুইবাজার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত কলানবগ্রামের বছর ১৬ র বালিকা ধৃতি লাহা। মা মারা গেছেন বারো বছর আগে, তখন তার বয়স চার বছর। কয়েক বছর আগে দ্বিতীয় বিয়ে করে বাবা। কোলাঘাট থারমাল পাওয়ার প্ল্যান্টের উচ্চ পদের আধিকারিক নীলাব্জ লাহা। বাবা হিসাবে নূন্যতম দায়িত্ব পালন করেনা। খাওয়া পড়া চিকিৎসা কোনোকিছুই মেলেনা বাবার কাছ থেকে। মা মারা যাওয়ার পর থেকেই কার্যত অত্যাচার আর উপেক্ষার শিকার অসহায় মেয়েটি। দাদু ছিলেন সরকারী চাকুরীজীবি, দাদু ঠাকুমার সংসারে দাদুর পেনশনের টাকায় কাটছিল দিন। দাদু মারা যান কয়েক বছর আগে, ঠাকুমা স্নায়ু ও হাড়ের রোগে আক্রান্ত হওয়ায় হাতের আঙুল বাঁকা থাকায় হয়নি আধার কার্ড, তাই চালু হয়নি দাদুর ফ্যামিলি পেনশন ঠাকুমার নামে। একসময়ের সম্ভ্রান্ত পরিবারের মেয়ে এখন কার্যত ভিখারী। দাদু ঠাকুমার জমি জমা বাবার দখলে, সেখান থেকে হওয়া আয়ের কানাকড়িও দেয়না বাবা সংসারে। পাল্লারোড উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী ধৃতি এবিষয়ে একাধিকবার অভিযোগ জানিয়েছিল বিভিন্ন সরকারী দপ্তরে, প্রশাসনিক উদ্যোগে বিগত সময় আলোচনার টেবিলে বসে লিখিত মতামতে বাবা ভরণপোষণের দায়িত্ব নেবে বললেও বাস্তবে তা ফলপ্রসূ হয়নি। বর্তমানে বাবা থাকেন কোলাঘাটের কর্মী আবাসে, রাখেন না কোনো যোগাযোগ। এমত অবস্থায় ধৃতি চিঠি লেখে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্দেশ্যে, তার শোচনীয় অবস্থায় সাহায্যের আবেদন জানিয়ে। সংস্থার তরফে সন্দীপন সরকার জানান ”চিঠি পাওয়ার পরই ধৃতির দেওয়া বয়ান মত লিখিত ভাবে রাজ্য শিশু সুরক্ষা ও অধিকার কমিশনের চেয়ারপারশন, মুখ্য সচিব, জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, সভাধিপতি সহ বিদ্যুৎ উন্নয়ন দপ্তরের চেয়ারম্যানকে জানানো হয়েছে যথোপযুক্ত পদক্ষেপের আর্জি জানিয়ে। আইনি সাহায্য য়ে রাজ্য ও জেলা আইনি পরিষেবা কেন্দ্রের সচিবকেও চিঠি দেওয়া হয়েছে। ওর অধিকার ও সুরক্ষা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা সাথে আছি”। ধৃতি জানায় এফ.আই.আরের জন্য অভিযোগ জমা দিয়েছে মেমারি থানায়, পুলিশ সুপারের মেমার। তার কথায় নতুন মা আর বাবা বাড়িতে বিরিয়ানী , ইলিশ মাছ এনে দেখিয়ে দেখিয়ে খায় আর আমার ঠাকুমার বেলায় আলুভাতেও জোটেনা, পড়ার জন্য খরচ, রোগের ওষুধ, জামা কাপড়ের জন্য ভরসা ঠাকুমার জমানো কিছু টাকা। যাতে আর কয়েক দিন চলবে, বাধ্য হয়েই এহেন কঠিন পদক্ষেপ। বাবা বলে তোর এমন হাল করব আত্মহত্যা করতে বাধ্য হবি, কিন্তু আমি মরব না, হারব না, লড়ব শেষ অবধি , ঠাকুমা কাঞ্চন লাহার একটাই চিন্তা তার অবর্তমানে কি হবে নাতনির ! কি ভাবে কাটবে আগামী দিন গুলো, পেনশনটা কি কোনো ভাবেই চালু হবে না, যাদের হাত থাকেনা তাদের আধার কার্ড কিভাবে তাহলে হয় !