বাবার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তিন দশকের বেশি সময় ধরে গ্রামে বিনামূল্যে চিকিৎসা শিবির আউশগ্রামে
নিজস্ব সংবাদদাতা, আউশগ্রামঃ ৩৩ বছর ধরে বাবার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার আউশগ্রামের সুয়াতা গ্রামে বিনামূল্যে চিকিৎসা শিবিরের আয়োজন করলেন ছেলেরা। শিবিরে মেডিসিন, শিশু রোগ, স্ত্রী রোগ, নার্ভ সহ বিভিন্ন ধরণের রোগের চিকিৎসা করার পাশাপাশি ইসিজি, ফুসফুসের পরীক্ষা, সুগার, থাইরয়েডের মত রক্তের বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয় এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাশীনাথ দেওয়াসী ও ভবানী দেওয়াসীর স্মৃতিতে এই শিবির করা হয়। আশপাশ এলাকার মানুষজন এই শিবিরে অংশ নেন। উদ্যোক্তাদের তরফে বিশ্বেশ্বর দেওয়াসী জানান, “প্রতিবছর ১৯ পৌষ এই শিবির আয়োজন করা হয়। দেওয়াসী পরিবারের ৯ জন চিকিৎসক বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিসেবা দেন। প্রত্যেক জনের দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়”। আরেক আয়োজক ভুবনমোহন দেওয়াসী বলেন, “এবছর পনেরোসো জনের চিকিৎসা করা হয়। প্রতিবছর সংখ্যাটা বাড়ছে। আমরা এই আয়োজন করতে পেরে নিজেদের ধন্য মনে করি”। মঙ্গলকোটের সিমুলিওয়া থেকে শিবিরে চিকিৎসা করাতে আসেন কোহিনুর নিশা বিবি। তিনি বলেন, এধরণের আয়োজন সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। বাবার স্মৃতিতে এত বছর ধরে বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা দিচ্ছেন ছেলেরা। আমিও সুগারের চিকিৎসা করিয়েছি। বিনামূল্যে ওষুধও পেয়েছি”। প্রতাপপুরের বাসিন্দা মনোয়ারা বিবি মোল্লা বলেন, “এখানে চিকিৎসা থেকে ওষুধ সবকিছুই বিনামূল্যে পাই। সেজন্য প্রতিবছর এই দিনে আসি”। স্থানীয় সুয়াতা গ্রামের বাসিন্দা বৃদ্ধা সরস্বতী মেটে বলেন, “বয়স হয়েছে। বাইরে ডাক্তার দেখাতে যেতে পারি না। এখানে চিকিৎসা করাই। হাতের কাছে এই সুবিধা পাই বলে অনেক উপকার হয়”। জানা গিয়েছে, বছরভর পরিবারের ছোট ছেলে চিকিৎসক নিখিলেশ দেওয়াসী গ্রামে সপ্তাহে একদিন করে বিনামূল্যে চিকিৎসা করেন। শুধুমাত্র চিকিৎসা পরিষেবাই নয়, গ্রামের দুস্থ ছেলেমেয়েদের জন্য শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত বিনামূল্যে পাঠশালা চলে। পাঠশালার দ্বায়িত্বে থাকা তারকেশ্বর দেওয়াসী বলেন, “পাঁচজন শিক্ষক তাঁদের পাঠদান করেন। ওই পাঠশালার বর্তমান পড়ুয়া ৬০ জন। তাঁদের বিনামূল্যে খাতা, পেন, পেন্সিলের মত শিক্ষা সহায়ক সামগ্রী প্রদান করা হয়”।