মোল্লা জসিমউদ্দিন টিপু,
আগেও থানা – পুলিশ, কোর্ট- কাছাড়ি হয়েছে। তবে এত বাড়াবাড়ি হবে তা জানতো না মেয়ের বাড়ির লোকজন। মদ্যপ স্বামীর প্রতিনিয়ত অত্যাচার যেন ওর কাছে রোজগার ব্যাপার। গত বুধবার রাতে পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোট থানার কাশেমনগরে পুজা চালক নামে এক গৃহবধূ কে গোটা শরীরে কেরোসিন তেল ঢেলে পুড়িয়ে একটানা বারো ঘন্টা ঘরের দরজায় তালাবন্দি করার অভিযোগ উঠলো শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে। যার নির্মম পরিণতি হিসাবে বর্ধমান সদর হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে ওই বধু।চিকিৎসকরা জানিয়েছেন – “শরীরের ৯০% এর বেশি পুড়ে গেছে।এখন বাঁচিয়ে তোলাটাই কঠিন চ্যালেঞ্জ আমাদের কাছে”। শুক্রবার বিকেলে অগ্নিদগ্ধ বধূর বাবা সুভাষ রায় মঙ্গলকোট থানায় অভিযুক্ত স্বামী বিজয় চালক সহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন। জানা গেছে, দুই সন্তানের মা পুজা চালক ( রায়) এর বাপের বাড়ি ভাতারের বালসিডাঙ্গায়।দশ বছর পূর্বে মঙ্গলকোটের কাশেমনগরের বিজয় চালকের সাথে বিবাহ হয়। মদ খাওয়া নিয়ে স্বামী স্ত্রীর ঝগড়া মারামারি লেগেই থাকতো।বছর খানেক আগে বেশ কয়েকবার মঙ্গলকোট থানায় নির্যাতিতা গেলে আপস মীমাংসার মাধ্যমে পুনরায় একসাথে সংসার করবার ব্যবস্থা করে দেয় পুলিশ বলে দাবি। তবে তা নিতান্তই সাময়িক। গত বুধবার রাত দশটার দিকে মঙ্গলকোটের কাশেমনগরে ওই মদ্যপ স্বামী পরিবারের অন্যদের নিয়ে একটি ঘরে জোরপূর্বক নিয়ে গিয়ে বিবস্ত্র করে গোটা শরীরে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, আগুন লাগাবার পরবর্তী বারো ঘন্টা ওই বধূ কে ঘরের মধ্যে তালা মেরে রাখা হয়।বিনা চিকিৎসায় যন্ত্রণায় ছটফট করা বধূর আত্মনাদ কানে আসেনি শ্বশুর বাড়ির লোকেদের।বেকায়দায় পড়ে বৃহস্পতিবার সকাল দশটার পর বর্ধমান হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে শ্বশুর বাড়ির লোকেরা।গতকাল বিকেলে বর্ধমান হাসপাতালের এমারজেন্সি বিভাগে চিকিৎসা শুরু হয়েছে। এমতাবস্থায় এই বধূর বেঁচে থাকাটা কঠিন চ্যালেঞ্জ বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। কেননা ৯০% এর বেশি পুড়ে গেছে শরীরের বিভিন্ন অংশগুলি।শুক্রবার বিকেলে অগ্নিদগ্ধ বধূর বাবা সুভাষ রায় মঙ্গলকোট থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। এখন দেখার মঙ্গলকোট থানার পুলিশ এই নির্মম ঘটনায় অভিযুক্তদের শাস্তিদানে কি ভূমিকা নেয়? এখনো পর্য্যন্ত এই ঘটনায় আটক বা ধরপাকড়ের খবর নেই।এই ঘটনায় পুলিশ তদন্ত
শুরু করেছে বলে প্রকাশ।