পরীক্ষা শেষ হওয়ার ১৩৯ দিনের মাথায় ফল প্রকাশিত হল আজ ।আর ফল প্রকাশিত হবার পরেই সকল ছাত্র ছাত্রীদের উৎসাহ রয়েছে অনেক আর তাই এই মাধ্যমিক এর ফল প্রকাশের খবর আসানসোল উমারানি গরাই মহিলা কল্যাণ হাই স্কুলের ছাত্রী অনুশ্রী কে ফোন করে দেওয়া হয় ।
সামান্য এক প্রাইভেট সংস্থায় চাকরি করা অচিন্ত্য ঘোষ নিজের স্ত্রী ও দুই ছেলে মেয়ে নিয়ে আসানসোল থেকে 15 কিলোমিটার দূরে বারাবনির ব্লকের লালগঞ্জের এক প্রত্যন্ত বালিয়াপুর গ্রামে থাকে অনুশ্রী ঘোষের বাবা।সেখান থেকেই বড় হয় মেয়ে অনুশ্রী ঘোষ আর গ্রামের স্কুল থাকলেও ভাল পঠন পাঠনের জন্য আসানসোল উমারানী গড়াই মহিলা কল্যাণ বিদ্যালয় থেকে পড়াশুনা করে আর সেখান থেকেই মাধ্যমিকে নবম স্থান অধিকার করে জেলার মানুষকে চমকে দিয়েছে অনুশ্রী ঘোষ। অনুশ্রী ঘোষ এবার মাধ্যমিকে ৬৮৪ নম্বর পেয়ে রাজ্যে নবম স্থান অধিকার করে জেলা সহ গ্রাম বাসীর মুখ উজ্জ্বল করেছেন।আর তার এই সফলতার খবর পেয়ে খুশি অনুশ্রীর পরিবার সহ পাড়ার প্রতিবেশী। তার বাড়ি এসে শুভকামনা জানান সকলেই।শুভেচ্ছা জানাতে আসেন বারাবনি বিধায়ক বিধান উপাধ্যায় ও বারাবনি ব্লক সভাপতি অসিত সিংহ মহাশয় ।এদিন অনুশ্রীকে মিস্টি মুখ করান ও ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান বিধায়ক ।
অনুশ্রীর বাবা অচিন্ত্য ঘোষ জানিয়েছেন “মেয়ের এই রেজাল্টের জন্য গর্ব হচ্ছে, কিন্তু আগামী দিনে মেয়েকে পড়াতে গেলে অনেক অর্থের প্রয়োজন যা আমার একার পক্ষে সম্ভব নয় । তাই কোন সহৃদয় ব্যক্তি বা সংগঠন যদি আমার পাশে দাঁড়ান তাহলে উপকৃত হবে অনুশ্রী।
অনুশ্রীর মা অঞ্জনা দেবী গৃহবধূ তিনি জানান ও যে পথে এগোতে চায় সেই পথেই ওকে স্বাধীনভাবে এগোতে দিতে চাই এবং সে অনেক বড় হোক এটাই একমাত্র ইচ্ছা ।
অনুশ্রী ঘোষ জানিয়েছেন সে সারাদিনে আট ঘণ্টা পড়াশোনা করত মাত্র তিনজন গৃহশিক্ষক ছিল তাঁর।বাংলা ইংরেজি আর অঙ্ক।বাকি সমস্ত বিষয়ে পড়াশোনার জন্য স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা তাকে প্রচন্ড সাহায্য করেছেন । আর তাই সে তার এই সাফল্যের পেছনে স্কুলের শিক্ষিকা,টিউশন শিক্ষকদের পাশাপাশি বাবা ও মা কেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন।সে পড়াশুনার পাশাপাশি গল্পের বই পড়তে ভালবাসত ।মাধ্যমিকে ভালো ফলাফলের আশা করেছিল অনুশ্রী। আগামী দিনে IIT-তে পড়তে চায় অনুশ্রী । কিন্তু এই নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের ছাত্রীটির পরিবার কিভাবেই বা আগামীতে তার পড়াশোনার খরচ জোগাবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পরিবারের কপালে।
বারাবনির বিধায়ক বিধান উপাধ্যায় জানান গত তিন বছর পশ্চিম বর্ধমান জেলা থেকে মাধ্যমিকে কোন রেঙ্ক হয়নি । স্বভাবতই বালিয়াপুরের মত প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনুশ্রীর রেজাল্ট চমকে দিয়েছে জেলাবাসীকে । গ্রামের মানুষজনও গর্বিত অনুশ্রীর জন্য ।