‘মানিক ভট্টাচার্য সমস্ত ওএমআর শিট নষ্ট করেছেন ‘, হাইকোর্টে পর্ষদ 

Spread the love

‘মানিক ভট্টাচার্য সমস্ত ওএমআর শিট নষ্ট করেছেন ‘, হাইকোর্টে পর্ষদ 

মোল্লা জসিমউদ্দিন

মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থারের এজলাসে চমকপ্রদ তথ্য দিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। গত ২০১৭ সালের টেটে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার  শুনানিতে আদালতে বিস্ফোরক তথ্য তুলে ধরল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ । এদিন হাইকোর্টে  পর্ষদের আইনজীবী বলেন , -‘ পর্ষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান পদে থাকাকালীন মানিক ভট্টাচার্য  সমস্ত ওএমআর শিট নষ্ট করেছেন’।পর্ষদের এই বয়ানে রীতিমতো বিস্মিত হন কলকাতা হাইকোর্টের  বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা।এদিন নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানিতে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের আইনজীবী জানান, -‘ তৎকালীন প্রাথমিক শিক্ষা  পর্ষদ চেয়ারম্যান মানিক ভট্টাচার্যের সিদ্ধান্তেই সমস্ত ওএমআর শিট নষ্ট  করা হয়েছিল। পর্ষদের অন্য সদস্যরা কিছুই জানতেন না। পর্যদের সভায় কোনও প্রস্তাবও নেওয়া হয়নি’। এর আগে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা পর্ষদ এর সভার প্রস্তাব আদালতে পেশ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।এদিন পর্ষদের আইনজীবী আদালতে বলেন, -‘ পর্ষদের কোনও সিদ্ধান্ত ছাড়াই মানিক ভট্টাচার্যের একক সিদ্ধান্তে ওএমআর শিট নষ্ট করা হয়েছিল। তিনি পর্যদের অন্য সদস্যদের অন্ধকারে রেখেই সব সিদ্ধান্ত নিতেন’। এর আগে একাধিকবার পর্ষদের বিভিন্ন অফিসার আদালতে অভিযোগ করেন, -‘মূল্যায়নের দায়িত্ব কোন সংস্থাকে দেওয়া হবে, সেই সিদ্ধান্তও মানিক নিজেই নিতেন। এমনকী পর্ষদের সার্ভার রুমে তিনি ছাড়া আর কারও প্রবেশাধিকার ছিল না’।গত সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্টে মানিকের জামিন মামলার শুনানি ছিল। সেদিন তিনি কোনও আইনজীবী নেননি। নিজেই সওয়াল করেন মানিক । জামিন চাইতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন পর্যদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান। আদালতে তিনি বলেছিলেন, -‘২০১৬ সালে আমার জরুরি অপারেশন হয়। তখন ডাক্তার বলেন, আমার আর মাত্র দশ বছর আয়ু আছে। আর দুবছর পর আমি আর বাঁচব না। আমাকে জামিন দিন’। এদিন পর্ষদের আইনজীবী বলেন , -‘মানিক ভট্টাচার্য নিজে বোর্ডের সিদ্ধান্ত নিতেন। তিনি বোর্ডের অন্যান্য সদস্যদের জানাননি’। ওএমআর শিটের বিষয়ে বোর্ডের মিটিংয়ে কোনও ‘রেজলিউশন’ নেওয়া হয়নি। যা শুনে বিস্মিত হন বিচারপতি রাজা শেখর মন্থর। আগামী শুক্রবার মামলার পরবর্তী শুনানিতে মিটিংয়ের ‘রিজলিউশন’ কপি জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ২০২২ সালের ১১ অক্টোবর ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি তথা তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য মানিক ভট্টাচার্য। সেই থেকে জেলবন্দি রয়েছেন তিনি। এরপর তাঁর স্ত্রী শতরূপা ও ছেলে সৌভিকও গ্রেফতার হন। তবে স্ত্রী-পুত্র জামিনে মুক্তি পেলেও জেলবন্দি রয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি। এর আগে জামিন চাইতে সুপ্রিমকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মানিক। যদিও শীর্ষ আদালত সেই আবেদন খারিজ করে রাজ্যের কাছে আবেদন জানাতে বলেছিল তাঁকে।জামিন বিষয়ক মামলার শুনানি চলছে কলকাতা হাইকোর্টে।এদিন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ যা তথ্য দিল মানিক ভট্টাচার্য এর বিরুদ্ধে। তাতে মানিক ভট্টাচার্য এর জামিন বিষয়টি আরও কঠিন হয়ে গেল বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *