খায়রুল আনাম (সম্পাদক আয়না টেলি নিউজ )
লোকাল ট্রেন চালানোর দাবিতে আন্দোলন সংগঠিত হচ্ছে জেলায়
বিভিন্ন জায়গার সাথে এবার লোকাল ট্রেন চালাবার দাবিতে আন্দোলন সংগঠিত হতে শুরু করেছে বীরভূম জেলায়। করোনা আবহে দীর্ঘ আট মাস যাবৎ বন্ধ রয়েছে রেলের স্বাভাবিক যাত্রী পরিষেবা। করোনার থাবা কিছুটা আলগা হয়েছে বলে মনে হওয়ায় বিভিন্ন রেলপথে লোকাল ট্রেন পরিষেবা চালু হলেও, তারসাথে যুক্ত হয়নি বীরভূম জেলা। এ নিয়ে জেলার বিভিন্ন রেল স্টেশনে স্টেশন মাস্টারদের হাতে স্মারকলিপি দিয়ে লোকাল ট্রেন চালাবার আবেদন জানানো হলেও তা কার্যকরী হয়নি। তাই এবার ঐক্য মঞ্চ গড়ে তুলে শুরু হয়েছে গণসাক্ষর সংগ্রহের কাজ। এই কাজে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছে ‘মুরারই ঐক্য’ মঞ্চ। এই মঞ্চ অতি দ্রুত লোকাল ট্রেনের সাথে সাথে এক্সপ্রেস ট্রেন চালাবার দাবিও জানিয়েছে। তাঁরা গণস্বাক্ষরিত এই স্মারকলিপি স্থানীয় স্টেশন ম্যানেজারের মাধ্যমে হাওড়া ডিআরএমের কাছে পাঠাবেন। তারপরেও ট্রেন পরিষেবা চালু না হলে তাঁরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন বলে জানা যাচ্ছে। এমন কী, জেলার উপর দিয়ে পণ্য পরিবহন-সহ দূর পাল্লার যে কয়েকটি ট্রন চলছে, তা বন্ধ করে দিতে জেলায় রেললাইন অবরোধের কর্মসূচীও নেওয়া হতে পারে বলে ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে। জেলার উপর দিয়ে যাত্রীবাহী ট্রেন চালাবার দাবিতে সাঁইথিয়া রেল স্টেশনে বিক্ষোভ দেখিয়ে স্টেশন মাস্টারকে একটি স্মারকলিপি আগেই দেওয়া হয়েছিল রেলযাত্রীদের পক্ষ থেকে। ১১ নভেম্বর থেকে আংশিক যাত্রীবাহী ট্রেন পরিষেবা চালু হলেও তাতে স্থান পায়নি বীরভূম জেলা। শিয়ালদহ ডিভিশনে ৪৩১টি এবং হাওড়া ডিভিশনে ২০২ টি লোকাল ট্রেন দিয়ে এই পরিষেবা শুরু হয়েছে। যার একটিও বীরভূম জেলার উপর দিয়ে যাচ্ছে না। বীরভূম জেলায় পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশনের অধীন একটি শাখা রয়েছে। বর্ধমান থেকে রামপুরহাট পর্যন্ত সেই শাখায় ট্রেন চলাচল করে। আসানসোল ডিভিশনের অধীন অণ্ডাল–সাঁইথিয়া শাখায় ট্রেন চলে। কিন্তু এই দু’টি লাইনে ট্রন পরিষেবা চালু হয়নি। আসানসোল ডিভিশনের জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী জানিয়েও দিয়েছেন যে, অণ্ডাল–সাঁইথিয়া শাখায় ট্রেন চালানোর কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। অপর দিকে হাওড়া ডিভিশন বলছে, বর্ধমান–রামপুরহাট শাখায় ট্রেন চালানো নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। সাঁইথিয়া এলাকার রেলযাত্রীরাও জানিয়ে দিয়েছেন যে, যাত্রী ট্রেন পরিষেবা চালু না হলে তাঁরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন। এবার ঐক্য মঞ্চের মাধ্যমে সেই আন্দোলন আরও জোরালো হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। এদিকে পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী জানিয়েছেন যে, বর্ধমান–সাহেবগঞ্জ লুপ লাইনে লোকাল ট্রেন চালাবার ব্যাপারে আমাদের কাছে কোনও খবর এসে পৌঁছায়নি। এদিকে ঐক্য মঞ্চের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, মুরারই থেকে রামপুরহাট, বর্ধমান, কলকাতা, আসানসোল, পাকুড়, মালদহ যাতায়াতের জন্য মানুষ মূলত ট্রেনের উপরেই নির্ভর করে থাকেন। অসুস্থ মানুষজনও চিকিৎসার জন্য বাইরে যেতে পারছেন না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিভিন্ন গণপরিবহণ ব্যবস্থা স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে। শুধুমাত্র বীরভূমের উপর দিয়ে কোনও লোকাল ট্রেন চলছে না। এদিকে বিভিন্ন সরকারী, বেসরকারী, আধা সরকারী অফিসগুলি খুলে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে যাওয়ার জন্য কর্মীদের চরম সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। অনেকেই কাজে যোগই দিতে পারছেন না। এই পরিস্থিতি থেকে সাধারণ রেলযাত্রীদের পরিত্রাণ দিতে ট্রেন পরিষেবা চালু করা জরুরি হয়ে পড়েছে। রেল কর্তৃপক্ষ এই পরিস্থিতি উপলব্ধি করে এই পথে লোকাল ও এক্সপ্রেস ট্রেন চালাবার দ্রুত সিদ্ধান্ত না নিলে, পরিস্থিতি যে গণ আন্দোলনের দিকে যাবে, তা প্রায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে বলেই জানা যাচ্ছে ।।