স্ট্যাম্প পেপারে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের সই, সিল জালকান্ডে ধৃত দুই
সেখ রিয়াজুদ্দিন, বীরভূম:- একবারে পাকাপোক্ত যেন সরকারি অফিস। এফিডেভিট এর কাজকর্ম এখান থেকেই পরিচালনা করা হতো। স্ট্যাম্প পেপারে সহি, সীল থেকে শুরু করে সমস্ত কিছু সমাধান করা হতো। বাইরে থেকে বোঝার কোনো চিহ্ন পর্যন্ত নেই। কিন্তু একটি এফিডেভিট এর অফিসিয়াল ভেরিফিকেশন করতে গিয়ে সমস্ত জলচক্রের হদিস বেরিয়ে আসে।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায় যে,পাসপোর্ট করার সময় এফিডেভিটের মাধ্যমে স্ব-স্বীকারোক্তি দিতে হয় যে, তাঁর নামে থানায় কোনো কেস নেই।সেরূপ এক ব্যক্তি এফিডেভিট করার জন্য আবেদন করতে মাড়গ্রামের চাঁদপাড়ার বাসিন্দা বিকাশচন্দ্র মণ্ডল ওরফে রবি মণ্ডলের শরণাপন্ন হন।এফিডেভিট হয়ে প্রশাসনিক স্তরে জমাও পড়ে যায়।সম্প্রতি সেই এফিডেভিট যাচাই করতে আদালতে আসেন এক ডিআইবি অফিসার।বিষয়টি নজরে আসে রামপুরহাট আদালতের বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক উৎপল মুখোপাধ্যায়ের।তিনি বলেন, গত বছরের ১০ মে এফিডেভিট করা হয়েছে অথচ সেই সময় ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটরা নির্বাচনের কাজে ব্যস্ত ছিলেন। তাই এফিডেভিটের সমস্ত কাজ বন্ধ ছিল। তা নিয়ে সন্দেহ ঘনীভূত হয়। তদন্তের মাধ্যমে জানতে পারেন স্ট্যাম্প পেপারে সীল সই জাল করা হয়েছে।পাশাপাশি যাঁর নামে এফিডেভিট, তিনি মুম্বইয়ে থাকেন। অথচ তাঁর নামে এফিডেভিট ? এটা বড় জালিয়াতি ছাড়া কিছু নই।সেই প্রেক্ষিতে বিষয়টি মহকুমা শাসককের কাছে অভিযোগ হিসেবে জমা হয়।উক্ত এফিডেভিটের স্ট্যাম্প পেপারে সই রয়েছে ডেপুটি ম্যাজিস্টেট তথা ডেপুটি কালেকক্টর নাজিম আলি মুফতির।সেই সই ও তাঁর অফিসিয়াল স্ট্যাম্পও জাল করা হয়েছে।মুফতি সাহেব বলেন, বিষয়টি নজরে আসার পর যিনি এফিডেভিট করেছিলেন, তাঁকে মহকুমা শাসকের উপস্থিতিতে ডাকা হয়।তিনি জানান যে,ল-ক্লার্ক রবি মণ্ডলের মারফত করা হয়েছে। রবিকে ডাকা হলে তিনি আবার ল’ক্লার্ক মাড়গ্রামের বাসিন্দা সেন্টু শেখ এর নাম করেন।এবিষয়ে সেন্টুকে ডাকা হলেও সে আসতে চায়নি।এমনকী এসডিওর নাম করে ডাকা হলেও আসতে অস্বীকার করে।তিনদিন ধরে এই প্রক্রিয়া চলার পর মুফতি সাহেব রবি ও সেন্টুকে নিয়ে আসার জন্য মাড়গ্রাম থানাকে চিঠি দেন।সেই মতো এদিন ওই দু’জনকে তুলে এনে রামপুরহাট থানায় পৌঁছে দেয় মাড়গ্রাম থানার পুলিস। মুফতি সাহেব বলেন, ওরা একেবারে পার্সোনাল অফিস খুলে বসেছিল।স্ট্যাম্প পেপারে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের জাল সই, সিল দিয়ে এফিডেভিট করে দিচ্ছিল।অভিযুক্ত দু’জনেই ল’ক্লার্ক বলে দাবি করেছে। আজ তাদের দুজনকে রামপুরহাট মহকুমার আদালতে তোলা হয় বলে জানা গেছে ।