স্মরণে বিদ্যাসাগর
সৌমিতা দত্ত (আন্দুলে, হাওড়া)
বীরসিংহের সিংহ তুমি অসীম তোমার জেদ!
চরম দারিদ্রতা থাকা সত্ত্বেও করোনি মাথা হেঁট।
আট বছর বয়সে তুমি পাড়ি দিলে কলকাতায়,
ইংরেজী অক্ষর শিখে নিলে মাইল ফলকের সহায়তায়॥
ল্যামপোস্টের আলোয় তুমি করতে পড়াশোনা,
অদম্য তোমার ইচ্ছাশক্তির নেই কোনো তুলনা।
সারাদিনের কাজের পরে তুমি ঘুমোতে যখন যেতে,
তাড়াতাড়ি ওঠার জন্য টিকিটি বেঁধে রাখতে॥
ধীরে ধীরে উঠলে বেড়ে কলকাতার বুকে,
সবার পাশেই দাঁড়াতে তুমি সুখে ও দুঃখে।
সমাজে তুমি এনেছিলে নব জাগরণ!
তোমার জন্যই নারীর জীবনে এসেছে পরিবর্তন॥
ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর জ্ঞানের সাগর তুমি!
তোমার অমর সৃষ্টির কথা শুধুই ভাবি আমি।
তোমার সৃষ্টির জন্যই আজ শৈশব পাচ্ছে আলো!
তোমার লেখা সমস্ত বই পড়তে লাগে ভালো॥
শিক্ষাজীবন শুরুতেই পেলাম তোমার দেখা,
বর্ণপরিচয়ের মধ্যে দিয়েই প্রথম অ, আ, ক, খ শেখা।
ভারতবাসীর গর্ব তুমি, অসীম জ্ঞান তোমার!
তোমায় শুধুই প্রনাম জানাই, ধন্যবাদ জানানোর যোগ্যতা নেই আমার॥
নারীর হতে কলম দিলে, দিলে পরিচয়;
এগিয়ে চলার সাহস দিলে তুচ্ছ করে ভয়।
বহুবিবাহ, বিধবাবিবাহের স্রষ্টা ছিলে তুমি,
একজন নারী হয়ে সর্বদাই ঋণী থাকবো আমি॥
একদিন নাকি খবর আসে অসুস্থ ভগবতী মাতা,
ছুটি মঞ্জুর না হওয়ায় কাজে ইস্তফা দিতে একটুও করোনি দ্বিধা।
সেদিনের সেই ঝড়ের রাতে ছিলনা যাবার উপায় ;
দামোদর নদী তাই সাঁতার কেটে পৌঁছেছিলে সেথায়॥
একদিকে যেমন বিদ্যাসাগর, দয়ার সাগর ও বটে!
সাধ্যমতো দান করেছো প্রাণভরে দুহাতে।
সারাজীবনের মহান কীর্তি লিখে শেষ হবেনা!
তুমিই হলে আগামীদিনে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা॥