আয়ার টাকা আদায়ে অমানবিক অভিযোগ বর্ধমান হাসপাতালে

Spread the love

সুরজ প্রসাদ

বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী সি বি এস মেল বিভাগের এই ঘটনা ঘটে গত ২৪ জুন । বর্ধমান ১ ব্লকের সিজেপাড়ার বাসিন্দা সেখ আনোয়ার গাছ থেকে পড়ে গিয়ে আহত হন। তার পা ভেঙে যায়। ২৪ তারিখ তাকে বর্ধমান হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে সেখানেই তার অপারেশন হয়। অপারেশনের পর সি বি এস মেল ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয় তাকে। অপারেশন হওয়া বাঁ পা টিকে ট্যাকশনে ঝুলিয়ে রাখতে বলা হয়। রোগীর ভাই সেখ রাজু বাইরে থেকে ট্যাকশন কিনে আনেন। ওয়ার্ডের আয়া মানা মহন্ত ওই ট্যাকশন লাগিয়ে দেন।এই কাজ করে দেওয়ার জন্য আয়া মানাদেবী ২০০ টাকা দাবি করেন। কিন্তু গরীব পরিবার টাকা দিতে অস্বীকার করে। এই নিয়ে তর্কাতর্কি চলতে থাকে। শেষে রোগীর পরিজনরা ১০০ টাকা দিতে রাজী হয়। কিন্তু ১০০ টাকায় সন্তুষ্ট না হওয়ায় ওই আয়া রোগীর অপারেশন হওয়া পা থেকে ওই ট্যাকশন খুলে দেয়। যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকে রোগী। সঙ্গে কাতর চিৎকার। তাতেও মন গলেনি মানাদেবীর। টেনে হিচড়ে ট্যাকসন খুলে দিতে থাকেন তিনি। তিনি ট্যাকশন খুলে দিলে রোগীর পরিজনরা নিজেরাই কোনরকমে তা ফের বেধে দেয়। রোগীর ভাই ২৫ জুন এই ঘটনা নিয়ে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। ২৬ তারিখ তাকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে সেখ আনোয়ারকে ছুটি দেওয়া হয়।

সেখ আনোয়ারের ভাই সেখ রাজু এদিন ফোনে বলেন, তার দাদা দিনমজুরি করেন এবং তার একটি ছোট সাইকেল সারাইয়ের দোকান আছে। তাই তারা সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন। হঠাৎ আয়া ২০০ টাকা চায়। কিন্তু ওই টাকা তাদের কাছে ছিল না। ১০০ টাকা দিতে রাজি হল ওই আয়া জোর করে খুলে দেয়। হাসপাতালে এই রকম হলে আমরা কোথায় যাবো?? হাসপাতাল সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ হওয়ার পর বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। রোগীর পরিজনদের কাছে একটি ভিডিও রয়েছে, যাতে দেখা যায় ওই রোগীর পা থেকে কিভাবে ট্যাকশন খুলে দিচ্ছেন ওই আয়া। শুধু ট্যাকশন খুলে দেওনায় নয়, অভিযুক্ত আয়া রোগীর প্রয়োজনের সাথে দুর্ব্যবহার এবং গালিগালাজ করেন বলে অভিযোগ।

এই ঘটনা নিয়ে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সুপার প্রবীর সেনগুপ্ত জানান, বিষয়টি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। আমরা অভিযুক্ত আয়াকে সাসপেন্ড করেছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *