মোল্লা জসিমউদ্দিন (টিপু),
রাজ্যের প্রতিটি ক্ষেত্রে হানা দিচ্ছে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ। এবার বাদ গেলনা কলকাতা হাইকোর্ট। গত ১৬ মার্চ থেকে ধাপে ধাপে রাজ্যের সমস্ত আদালতে চলছে লকডাউন পরিস্থিতি। করোনা বিধি কড়াভাবে বজায় রেখে কলকাতা হাইকোর্টে মাঝেমাঝে চলছিল ভিডিওগ্রাফি শুনানি৷ আদালত কর্মীদেরও ভীড় এড়াতে ছিল রোটেশন ডিউটি। তাতেও করোনার থাবা পড়লো কলকাতা হাইকোর্টের অন্দরমহলে। আগে উচ্চআদালতে এক গাড়ি চালকের দেহে মিলেছিল করোনা পজিটিভ। এবার ডেপুটি রেজিস্ট্রার ( কোর্ট) পদমর্যাদাপূর্ণ বিচারকের করোনা পজিটিভ। কলকাতা হাইকোর্ট সুত্রে প্রকাশ, সোমবার ওই বিচারকের রিপোর্ট এসেছে করোনা পজিটিভ। আর এতেই তটস্থ কলকাতা হাইকোর্ট চত্বর। সোমবারই কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির পক্ষে রেজিস্ট্রার জেনারেল এক বিজ্ঞপ্তিজারী করে জানিয়েছেন – ‘ করোনা স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে আগামী ১৯ জুলাই পর্যন্ত কলকাতা হাইকোর্টের সমস্ত বিচার প্রক্রিয়া সহ অফিস বন্ধ থাকবে ‘। প্রসঙ্গত কলকাতা হাইকোর্ট এলাকাটি আবার করোনা ভাইরাস অধ্যুষিত এলাকা। এই কয়েক দিনে কলকাতা হাইকোর্টের বিভিন্ন ভবন জীবাণুমুক্ত করার অভিযান চলবে। উল্লেখ্য, গত ১০ জুলাই থেকে ১৩ জুলাই এই ধরনের অভিযান চলছে। সেক্ষেত্রে মঙ্গলবার থেকে অনলাইন শুনানি চলার কথা ছিল। তবে সোমবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের ডেপুটি রেজিস্ট্রার ( কোর্ট) এর রিপোর্ট করোনা পজিটিভ আসাতে এই জীবাণুমুক্ত করার অভিযান আগামী ১৯ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হলো বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল৷ সাম্প্রতিক করোনা পরিস্থিতিতে আলিপুর – সিটি সেশন – ব্যাঙ্কশাল আদালতে কখনো বিচারকদের একাংশের আবার কখনো বা আদালতকর্মীদের করোনা পজিটিভ আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা দেখা যায়। তাতে দফায় দফায় আদালত একপ্রকার বন্ধ হয়ে যায়। শুধুমাত্র কলকাতা হাইকোর্টে অনলাইন শুনানি ( গড়ে সপ্তাহে দুবার) হচ্ছিল। সেইসাথে নিম্ন আদালত ( জেলা ও মহকুমা স্তরে) গুলিতে পুলিশ ফাইল ( এসিজেম এজলাস) চলছিল। সম্প্রতি সমস্ত আদালতে সপ্তাহে দুদিন করে সিভিল ও ক্রিমিনাল মামলা গুলির শুনানি শুরু হয়েছে। আর এর মধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টের ডেপুটি রেজিস্ট্রার পদমর্যাদাপূর্ণ বিচারকের করোনা পজিটিভ রিপোর্টে তটস্থ এই রাজ্যের আইনমহল। জানা গেছে, ওই ডেপুটি রেজিস্ট্রার সাহেব প্রতিদিন কলকাতা হাইকোর্টে আসতেন। তাঁর দায়িত্বে রয়েছে অনলাইনে সমস্ত নথিবদ্ধ মামলার ( তালিকা) গুলি যথাযথ জায়গায় গুরত্ব বুঝে পাঠিয়ে দেওয়া। জানা গেছে, আক্রান্ত ডেপুটি রেজিস্ট্রার সাহেব আদালতে আসা মানুষজনের প্রত্যক্ষ্য সংপর্শে এসেছিলেন। কারা কারা সংস্পর্শে এসেছেন তার তালিকা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে রাজ্যের বিভিন্ন রুট থেকে যেসব আদালত কর্মীদের স্টেটবাসে আনার কাজ চলছে। তাঁদের করোনা স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে বজায় রাখার কথা বলা হয়েছে। এই ব্যাপারে কলকাতা হাইকোর্টের রেকর্ড সেকশনের অফিসার সুবল সরদার জানান – ” আমি যেমন মগরাহাট এলাকা থেকে আদালতে ডিউটি করতে আসি স্টেটবাসে চেপে। আমরা চায় নিয়মিত জীবাণুমুক্ত করার অভিযান চলুক ‘। অপরদিকে জানা গেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার কালনা মহকুমা আদালত আগামী ২২ জুলাই অবধি বন্ধ থাকছে৷ ওই আদালত চত্বর এলাকাটি জেলা প্রশাসন দ্বারা করেন্টাইন জোন হিসাবে ঘোষিত।