ঔপন্যাসিক নিমাই ভট্টাচার্য স্মরণে
স্নেহাশিস চক্রবর্তী,
আধুনিক বাংলা সাহিত্যে একদম সমকালে জনপ্রিয় এক নাম ঔপন্যাসিক নিমাই ভট্টাচার্য । আজকে দুপুর ১২ টা ১০ মিনিটে তার টালিগঞ্জস্থিত নিজ বাসভবনে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন, তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর । গত কয়েকবছর ধরেই বার্ধক্যজনিত অসুখে তিনি আক্রান্ত ছিলেন, কয়েক বছর আগে পক্ষাঘাতে তার শারীরিক যথেষ্ট পরিমাণ ক্ষতিসাধন হয়েছিল । একজন লেখকের যন্ত্রণা – যখন তিনি চাইছেন অথচ শারীরিক কারণে কলম চালাতে পারছেন না, এর চেয়ে মনে হয় কষ্টকর আর কিছুই হতে পারে না, যদিও ফিজিওথেরাপি করে সেখান থেকে উত্তরণের চেষ্টা চলছিলই নিয়ত, আমি নিজে সাহিত্যিকের ছেলে শ্রী মুকুল ভট্টাচার্যের কাছ থেকে খবর পেতাম ও নিতাম মাঝে মাঝেই । সাহিত্যিক নিমাই ভট্টাচার্য’র সাথে অল্প হলেও বেশ কয়েকবারের সাক্ষাত আজ বড়ো বিশেষ মনে পড়ছে । কিছুদিন আগেই সাহিত্যিকের স্ত্রী’র মৃত্যু অবশ্যই তার মনে নিজ শারীরিক অসুস্থতার মাঝেও এক অনেক বড়ো বেদনা, এ কথা না বললেও চলে ।
১৯৩১ সালে বর্তমান বাংলাদেশের মাগুরা জেলার শরশুনা গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন । পরবর্তীতে কলকাতায় চলে আসেন, কর্মজীবনে প্রাথমিকভাবে তিনি শুরু করেছিলেন একজন সাংবাদিক হিসেবে । পরবর্তীতে দীর্ঘ সময় দিল্লীতে প্রবাসী জীবন যাপন সাহিত্যিক নিমাই ভট্টাচার্য’র । একটা সময় দেশের রাজনৈতিক মহল ও গ্লামার দুনিয়াতেও তার নাম বিশেষভাবে উল্লেখিত ছিল ।
সাহিত্যিক নিমাই ভট্টাচার্য’র প্রথম গ্রন্থ ‘রাজধানীর নেপথ্যে’ প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৬৪ সালে । অনধিক ১৫০ বইয়ের রচয়িতা ছিলেন ঔপন্যাসিক নিমাই ভট্টাচার্য । ‘মেমেসাহেব’, ‘মিনিবাস’, ‘মাতাল’, ‘ইনকিলাব’, ‘ব্যাচেলর’, ‘কেরানি’, ‘রাজধানী এক্সপ্রেস’, ‘আংলো ইন্ডিয়ান’, ‘ডারলিং’, ‘ইয়োর অনার’, ‘ককটেইল’, ‘পথের শেষে’ ইত্যাদি বহু গ্রন্থের প্রণেতা সাহিত্যিক নিমাই ভট্টাচার্য ।
পরিবার সূত্রে খবর – আজকেই কেওড়াতলা মহাশ্মশানে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে সন্ধ্যেবেলা ।
বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করি । বিদায় নিও চোখের জলে । তুমি যাও নি, বয়স তোমায় কেড়েছে ।