কবে হবে মঙ্গলকোটের কৈচর পুলিশফাঁড়ির নিজস্ব অফিস?

Spread the love

মোল্লা জসিমউদ্দিন (টিপু) ,


সম্প্রতি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক ভার্চুয়াল সভায় পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ কে করোনা স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে ব্যারাক গড়ার কথা জানিয়েছিলেন। এই ভার্চুয়াল সভা পরবর্তী ক্ষেত্রে পূর্ব বর্ধমানে নাদনঘাট পুলিশ থানার নিজস্ব অত্যাধুনিক পুলিশ আবাসনের উদঘাটন ঘটে। করোনা মহামারীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে পুলিশের ভূমিকা সর্বাপেক্ষা গুরত্বপূর্ণ। দিন কিংবা রাত, অন ডিউটিতে সদাজাগ্রত পুলিশ। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে পরিকাঠামোগত অত্যন্ত বিপদজনক অবস্থায় রয়েছে মঙ্গলকোট থানার অন্তর্ভুক্ত কৈচর পুলিশ ফাঁড়ি। পূর্ব বর্ধমান জেলার সর্ববৃহত্তম পুলিশ ফাঁড়ি হিসাবে চিহ্নিত কৈচর পুলিশ ফাঁড়ি। এই পুলিশ ফাঁড়ির অধীনে যতটা এলাকা পড়ে থাকে। একই অনুপাতে থাকা অন্য পুলিশ ফাঁড়ি গুলি বছর খানেক আগে নুতন স্বতন্ত্র থানা হিসাবে পরিচিত। দেওয়ানদিঘী কিংবা শক্তিগড় থানার অধীনে যতগুলি অঞ্চল পড়ছে। তার থেকে বেশি এলাকা মঙ্গলকোটের কৈচর পুলিশ ফাঁড়ির৷ মঙ্গলকোটের দক্ষিণপূর্ব এলাকার  ৬ টি অঞ্চল পড়ছে কৈচর পুলিশ ফাঁড়িতে৷ এসআই পদমর্যাদাপূর্ণ আধিকারিক ১ জন, এএসআই  পদমর্যাদা পূর্ণ আধিকারিক ৩ জন, কনস্টেবল র‍্যাংকের ৮ জন, হোমগার্ড ১ জন,ড্রাইভার ১ জন  সহ সিভিক – ভিলেজ পুলিশ রয়েছেন ৭০ জনের মত। ৮০ জনের বেশি পুলিশ কর্মীর কর্মক্ষেত্র পুলিশ ফাঁড়ির অবস্থা অত্যন্ত বেহাল এবং বিপদজনক বলা যায়। পুলিশ ব্যারাকে ১৫ জনের বেশি থাকবার পরিকাঠামো নেই। নেই লকয়াপে আসামি থাকার যথাযথ ব্যবস্থা।  অনির্মলতার বাস্তব ছবি দেখা মেলে এই পুলিশ ফাঁড়ির শৌচাগার দেখলে! পুলিশ ফাঁড়ির নিজস্ব গাড়ি রাখার জায়গা নেই। গাড়ি রাখতে হয় বর্ধমান কাটোয়ার মত ব্যস্ততম সড়কপথের মূল পিচের এক ফুটের মধ্যেই। এই পুলিশ ফাঁড়ির আইসি সাহেব থাকেন ভাড়া বাড়িতে। অবিভক্ত বর্ধমান জেলায় মঙ্গলকোট থানার কৈচর পুলিশ ফাঁড়ি গঠনের জন্মলগ্ন থেকেই অর্থাৎ পাঁচ দশকের বেশি সময়কাল ধরে স্থানীয় এক সোসাইটির ভাড়াবাড়িতে দোতলায় রয়েছে পুলিশ ফাঁড়ি। পূর্ব বর্ধমান জেলায় আর কোথাও ভাড়া বাড়িতে পুলিশ ফাঁড়ি দীর্ঘদিন ধরে থাকার নজির নেই বললেই চলে। ফাঁড়ির যেখানে এহেন অবস্থা সেখানে পুলিশ আবাসন গড়ার স্বপ্নপূরণ অনেকটাই দিবাস্বপ্নের মতন। যদিও মাঝখানে কাটোয়া সিআই ( সার্কেল ইন্সপেক্টর)  অফিস গড়ার জন্য কৈচর ১ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের সামনে সরকারি এক খাস জমিতে হওয়ার প্রস্তাবনা উঠেছিল। সেই প্রস্তাবনা বাস্তবায়নের সরকারি উদ্যোগ নেই বললেই চলে। পূর্ব বর্ধমান জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( গ্রামীণ)  ধ্রুব দাস বলেন ” বিষয় টি খোঁজ খবর নেব “। এলাকাবাসীদের দাবি – ‘কৈচর পুলিশ ফাঁড়ির সামনে বিশাল এলাকা জুড়ে রয়েছে সেচ ও জলপথ দপ্তরের  ( নিগন সেচ শাখা ও পাঁজোয়া সেচ শাখা)  অফিস। এই অফিসে কাজকর্ম সেভাবে নেই। তাই এখানে কৈচর পুলিশ ফাঁড়ি করলে এলাকাবাসীর খুব ভালো হবে ‘। এখন দেখার যেখানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পুলিশ দিবসে পুলিশের পর্যাপ্ত সুযোগসুবিধা দিতে তৎপর, সেখানে পূর্ব বর্ধমান জেলার সর্ববৃহত্তম পুলিশ ফাঁড়ি ভাড়া বাড়ি ছেড়ে নিজস্ব কোন ভবন পায় কিনা?  এই পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত পুলিশ কর্মীরা সরাসরি কোন কিছু না বললেও যে অবস্থায় এখানে বিপদজনকভাবে ডিউটি করছেন তাতে তাঁদের পরিবারও জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে খুবই চিন্তিত। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি এই পুলিশ ফাঁড়ির এক কনস্টেবল কর্মরত অবস্থায় এই পুলিশ ফাঁড়ির সামনে সড়কপথে পথ দুর্ঘটনায় মারাও যান।                                                                                                                                                                                    

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *