কালনায় খুনের মামলায় দুজন আসামীর যাবৎজীবন সাজাদান

Spread the love

মোল্লা জসিমউদ্দিন (টিপু)

ভাঙছিলো প্রতিবেশী পরিবার। প্রতিবাদ করাতে প্রথমে বচসা পরবর্তীতে সশস্ত্র আক্রমণ। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু।ঠিক এইরকম এক খুনের মামলায় দুজন আসামীর যাবৎজীবন সাজা দিলেন কালনা মহকুমা আদালতে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক তপন কুমার মন্ডল  মহাশয়। তবে সাক্ষ্যপ্রমাণের অভাবে আরেক অভিযুক্ত  ছাড়া পেয়েছে  এই খুনের মামলা থেকে। শুক্রবার কালনা মহকুমা আদালতে দুজন আসামীর বিরুদ্ধে ৫০৬ ধারায় ১ বছরে জেল ও ৫০০ টাকার  জরিমানা ( অনাদায়ে অতিরিক্ত ১ মাসের জেল)।৩২৫ ধারায় ৩ বছরের জেল ও ১০০০ টাকার জরিমানা ( অনাদায়ে অতিরিক্ত ২ মাসের জেল) । ৩০৭ ধারায় ৭ বছরের জেল ও ৩০০০ টাকার জরিমানা ( অনাদায়ে অতিরিক্ত ৩ মাসের জেল) । সেইসাথে  ৩০২  ধারায় যাবৎজীবন জেল ও ৫০০০ হাজার টাকার জরিমানা ( অনাদায়ে ৬ মাসের জেল)  সাজা ঘোষণা করেছেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক তপন কুমার মন্ডল মহাশয়। সব সাজায় একসাথে চলবে বলে আদেশনামায় উল্লেখ রয়েছে৷  এই মামলায় ১৬ জন সাক্ষ্যদান করেছিলেন। খুনে ব্যবহৃত অস্ত্রগুলি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। মেডিকেল রিপোর্টের পাশাপাশি চিকিৎসাধীন অবস্থায় নিহত ব্যক্তির জবানবন্দি নেওয়া হয়েছিল। কালনা মহকুমা আদালতের এহেন সাজাদানে খুশি নিহতর পরিবার৷ তবে আসামিদের পক্ষে এই মামলায় রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে। কালনা মহকুমা আদালত সুত্রে প্রকাশ, ২০১৮ সালে ৩০ শে সেপ্টেম্বর রাত ন’টার দিকে কালনা শহরের কাঁসারীপাড়ায় আসামি সমীর দাস ও তার স্ত্রী নলরানী দাস, পুত্র লব দাস পাড়ার এক ট্যাপকল ভাঙ্গছিলেন বলে অভিযোগ। সেসময় প্রতিবেশী বাবলু চৌহান এই ঘটনা দেখে প্রতিবাদ করেন। প্রতিবাদ থেকে শুরু হয় বচসা। তারপর হাতাহাতি। পরে কাঠের বাটাম এবং হাতুড়ি নিয়ে সশস্ত্র আক্রমণ। ঘটনার মাঝামাঝি প্রতিবাদী বাবলু চৌহানের ছোট ছেলে বিশ্বজিৎ চৌহান এসে পড়ে ঘটনাস্থলে। দুজন কে রক্তাক্ত অবস্থায় আনা হয়েছিল কালনা  মহকুমা হাসপাতালে। সেখানে শারীরিক অবস্থার  অবনতি ঘটলে কলকাতার মেডিকেল হাসপাতালে আনা হয়। ৪৭ দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায়  থাকার পর মারা যায় প্রতিবাদীর ছেলে বিশ্বজিৎ চৌহান। এই ঘটনায় প্রতিবাদীর বড় ছেলে পিন্টু চৌহান কালনা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। ২০১৯ সালে ৪ এপ্রিল  ১৬ জন সাক্ষ্যদানকারীর মাধ্যমে আইপিসি ৩৪ দণ্ডবিধি অনুযায়ী   ৫০৬, ৩২৫, ৩০৭, ৩০২ ধারায় চার্জ গঠন করা হয়৷ চলতি বছরের ৩০ জুলাই এই মামলায় আক্রমণকারী পিতা পুত্র দোষী সাব্যস্ত হয়। তবে সাক্ষ্যপ্রমাণ এর অভাবে এই মামলায় আরেক অভিযুক্ত খালাস পায়। শুক্রবার দুপুরে কালনা মহকুমা আদালতে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক তপন কুমার মন্ডলের এজলাসে এই মামলায় দুজন কে খুনের অভিযোগে যাবৎজীবন সাজা ঘোষণা করা হলো।                                                                                                                                                                         

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *