খাগড়াগড় বিস্ফোরণ মামলায় আরও দুজনের ৭ বছরের কারাবাস
মোল্লা জসিমউদ্দিন
গত মঙ্গলবার বিকেলে কলকাতার সিটি সেশন কোর্টে এনআইএ সংক্রান্ত বিশেষ এজলাসে খাগড়াগড় বিস্ফোরণ মামলায় আরও দুজনের সাজাদান ঘটলো। আসামি কদর কাজি এবং আসামি মহম্মদ জাইদুল হকের সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং পাঁচ হাজার টাকার জরিমানা অনাদায়ে অতিরিক্ত আরও পাঁচমাসের সশ্রম কারাবাস রায়দান দিয়েছেন এই এজলাসের বিচারক প্রসেনজিৎ বিশ্বাস মহাশয় । ধৃতদের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা মধ্যপ্রদেশ থেকে গ্রেপ্তার করে থাকে। এই মামলায় চারটি ধাপে সর্বমোট ৩০ জনের বিরুদ্ধে সাজাদান ঘটলো। যা এনআইএ সংক্রান্ত মামলায় এই রাজ্যে আজ পর্যন্ত ঘটেনি। গত বছর ৩০ আগস্ট ১৯ জন, এরপর ওই বছরের ১৫ নভেম্বর ৫ জন। চলতি বছরের ৯ সেপ্টেম্বর ৪ জন সহ গত মঙ্গলবার বিকেলে আরও ২ জন আসামির সাজা ঘোষণা করেছে সিটি সেশন কোর্টের এই এনআইএ এজলাস। এই মামলার চৌত্রিশ জন অভিযুক্তের মধ্যে তেত্রিশজন জেলবন্দি। যার মধ্যে ত্রিশ জন তাদের দোষ আদালতে জবানবন্দির মধ্য দিয়ে স্বীকার করেছে। এই মামলায় মূল অভিযুক্ত সালাউদ্দিন সালেহান বরাবরই ফেরার রয়েছে। জেএমবির আন্তজার্তিক শাখার নেতা এই অভিযুক্ত বলে দাবি কলকাতা পুলিশের এসটিএফের। গত সপ্তাহে নগর দায়রা আদালতে সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলো মহম্মদ ইউনিস, মতিউর রহমান, জিয়াউল সেখ, এবং জাহিরুল সেখ। প্রত্যেক সাজাপ্রাপ্ত ( দুদফায় ত্রিশ জন) আসামি নিজেদের অপরাধ স্বীকার করে সমাজের মূল স্রোতে ফিরতে চেয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে ২ অক্টোবর বর্ধমান শহরে খাগড়াগড় পাড়ায় এক দোতলা বাড়িতে ভাড়াটিয়াদের দল বিস্ফোরণ ঘটায়।ল্যান্ডমাইন জাতীয় গ্রেনেড তৈরির সময় এই বিস্ফোরণটি ঘটেছিল তাতে দুজন ঘটনাস্থলেই মারা যায় । সর্বপ্রথম বর্ধমান সদর থানার পুলিশ, তারপর জেলা পুলিশের বিশেষ দল ঘটনার তদন্তে নামে। রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থা সিআইডি এই মামলার তদন্তভার নেয়। পরবর্তীতে ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক যোগ বিশেষত বাংলাদেশ কানেকশন থাকায় এনআইএ এই মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে থাকে। মামলাটি বর্ধমান জেলা আদালত থেকে কলকাতার নগর দায়রা আদালতে স্থানান্তরিত হয়। পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোট, পূর্বস্থলী সহ বীরভূম – মুর্শিদাবাদ সর্বপরি বাংলাদেশের যোগসুত্র মেলে। জঙ্গি গ্রুপের যোগসাজেশে পশ্চিমবাংলা এবং বাংলাদেশের বড় অংশ জুড়ে এই জঙ্গি দলের নেটওয়ার্ক খুঁজে পায় তদন্তকারীরা। খাগড়াগড় বিস্ফোরণ মামলায় বেশিরভাগ অভিযুক্তই আসামি হিসাবে সাজাদান পেল।