মোল্লা জসিমউদ্দিন
; কয়েক সপ্তাহ পূর্বে পর্যন্ত এলাকাবাসী মঙ্গলকোট কে জানতো চোরেদের অবাধ মুক্তাঞ্চল হিসাবে। সাইকেল থেকে মোবাইল, ভ্যানো থেকে গাড়ীর স্টেপনি।।পুলিশি ঝামেলা এড়াতে সব অভিযোগ আবার নথিভুক্তিকরণ ঘটতো না। তবে মঙ্গলকোট পুলিশ চুপ করে বসে থাকার পক্ষপাতি নয়। বিভিন্ন সোর্স – ইনফরমারদের লাগিয়ে, নানান সড়কমোড়ে সিসিটিভির ফুটেজ দেখে ক্রমশ সক্রিয় হতে লাগলো মঙ্গলকোট থানার পুলিশ। যদিও সবথেকে ব্যস্ততম জায়গা গুলির সিসিটিভি অজ্ঞাত কারণে ‘অচল’!। ঘটনা যাইহোক মঙ্গলকোট পুলিশের হাতে মহিলা মোবাইল চোর থেকে মোটর চালিত ভ্যানো গাড়ি চুরির পান্ডারা একে একে গ্রেপ্তার হতে শুরু করে থাকে। গত সপ্তাহ থেকে এই চুরি – ছিনতাইয়ের সাথে যুক্ত দশের কাছাকাছি দের জেলের গারদে পুড়লো মঙ্গলকোট থানার পুলিশ। তবে সবথেকে বড় সাফল্য এলো মঙ্গলবার সাত সকালে। আন্তরাজ্য গাড়ির স্টেপনি চোরের এক দল কে ফিল্মি কায়দায় ধরলো মঙ্গলকোট থানার পুলিশ। এদিন সকাল তখন সাড়ে ছয়টা, মঙ্গলকোটের নুতনহাট সংলগ্ন অজয় নদের লোচনদাস সেতুতে ডিউটি করছিলেন এএসআই গিয়াসউদ্দিন মন্ডল। সাথে জনা পাঁচেক কনস্টেবল। এদিকসেদিক ছিল সিভিক / ভিলেজ পুলিশরা। হঠাৎই ঝাড়খণ্ড রাজ্যের নাম্বার থাকা এক ডাম্পার দাঁড়ালো লোচনদাস সেতুর মুখে। গাড়ীটি বর্ধমান থেকে এসে ফুটিসাকো রুটে যাওয়ার কথা। লোচনদাস সেতুতে ডিউটি অফিসার গিয়াসবাবু থানা থেকে জরুরি নির্দেশ পেয়ে গাড়িটি থামতে বলেন। গাড়ীটি থামে তবে গাড়ীতে থাকা তিনজন ছুটতে থাকে। প্রথম পর্যায়ে দুজন কে ধরতে পারলেও মূল পান্ডা সেতু সংলগ্ন পদিমপুর গ্রামে এক গোয়ালঘরে ঢুকে যায়। পুলিশ অত্যন্ত দক্ষতায় এলাকাবাসীর সাহায্যে তাকেও ধরে ফেলে। ওই ডাম্পারে দেখা যায় তখন দশের বেশি স্টেপনি সহ চুরি করার যন্ত্রপাতি রয়েছে। আটকদের বাড়ি ঝাড়খন্ডের পাকুর এলাকায়। পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের এক পদস্থ কর্তা জানান – ” শুধু পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোট কেতুগ্রাম আউশগ্রাম নয় বীরভূমের নানুর লাভপুর থানা এলাকায় গাড়ির স্টেপনি চুরি করতো এরা। এদের কে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই চক্রের সাথে বাকি যুক্তরা এবং চোরাই স্টেপনি গুলি উদ্ধারে অভিযান চালানো হবে “। জানা গেছে, অজয় নদের বালির গাড়িগুলিই ছিল এদের মূল টার্গেট। পূর্ব বর্ধমান এবং বীরভূমের অজয় নদের বালিঘাট সংলগ্ন হোটেলগুলির একশ্রেণির অসাধু কর্মীদের এই আন্তরাজ্য গাড়ির স্টেপনি চোরেদের ‘ইনফরমেশন’ দিত বলে গোপন সুত্রে জানা গেছে। উল্লেখ্য, মঙ্গলকোট থানার এক আধিকারিক রাতের ঘুম হারাম করে মঙ্গলকোটের বিভিন্ন প্রান্তের সিসিটিভি ফুটেজ গুলি ধাপেধাপে পর্যবেক্ষণ করছিলেন। এলাকায় ব্যাপক হারে ডাম্পার সহ বিভিন্ন চারচাকা গাড়ির স্টেপনি ( গাড়ির পেছনে অতিরিক্ত চাকা) চুরি হচ্ছিলো। তাতে লাগাদার চুরির ঘটনায় কিছু সুত্র মেলে। বিশেষত চোরাই কাজে ব্যবহৃত ডাম্পার টি চিহ্নিতকরণ ঘটে। আর এতেই হাতেনাতে মেলে সাফল্য। চোরেদের ব্যবহৃত ডাম্পারটির মালিক কে, তাও জানার চেষ্টা করছে মঙ্গলকোট থানার পুলিশ।