চিত্তহরষে বিত্তনাশ
স্নেহাশীষ চক্রবর্তী
আত্মনির্ভর ভারতের আত্মা-নাশ হচ্ছে কি না জানি না, তবে বিশ্বায়নের দুনিয়ায় গরীব দেশ ভারত যে আগামীতে আরো গরীব হয়ে পড়বে না, সে কথা হলফনামা দিয়ে কেউ জানিয়ে রাখলে আনন্দই পাওয়া যেত।
বিষয় হচ্ছে রয়টার্স জানাচ্ছে তাদের সূত্র মারফৎ যে, আগামীদিনে ব্যাংকিং ব্যবস্থায় বেসরকারিকরণ প্রায় নিশ্চিত। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা নাকি নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলেছেন এ বিষয়ে। সরকারি কোষাগার প্রায় ফাঁকা, সেটি পূরণের অন্য উপায় আর নেই। কেন্দ্রীয় সরকার ব্যাংকের শেয়ার বিক্রি করে খরচ সামলানোর চেষ্টা করবেন, তেমনই তাদের ইচ্ছা।
আচ্ছা বলুন তো ব্যাংকের শেয়ার বিক্রি করে অর্জিত টাকা যদি খরচই করে ফেলা হয় তবে, আমাদের তো সম্পদহানী হল, নয় কি?
দ্বিতীয়ত, ৫৬ বছর আগে জনসাধারণের টাকা বেসরকারি হাতে বহু নয়ছয় হওয়ার কারণেই এবং নিত্যনতুনভাবে গণেশ উল্টে রাতারাতি আগের নামের ব্যাংক নতুন নামের ব্যাংকে পরিচিত হত বলেই তৎকালীন সরকার ভারতীয় জনগণের টাকাকে সুরক্ষিত করতেই ব্যাংক বীমা সরকারি ক্ষেত্র হিসেবে অধিগৃহীত হয়।
একদিকে, নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি অপরদিকে ক্ষয় হতে থাকা সাধারণ জনগণের টাকা ও মানসিকতাকে আজ এক চরম সন্ধিক্ষণে এনে দাঁড় করিয়েছে। এই অবস্থায় ব্যাংকের ‘সরকারি থাপ্পা’ উঠে গেলে মানুষ কিন্তু পড়বে চরম এক বিপদসংকুল অবস্থায়।
এইধরণের কঠিন সিদ্ধান্ত এই কোরোনা বিধ্বস্ত সময়কালে নিলে জনগণ যে চরম এক অসহায়তার মধ্যে পড়বেন, সে বিষয় নিয়ে দ্বিমত নেই।
শুধু কথায় নয়, কেন্দ্রীয় সরকার ভারতীয় জনশক্তির কথা মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত নিলে মনে হয়, অনেক বেশি আশ্বস্ত থাকবেন দেশের জনগণ।
সংসদীয় গণতন্ত্রে সরকার আসবে যাবে, কিন্তু ভারতীয় জনশক্তির বিস্তার কিন্তু থেমে থাকবে না। মানসিক এক বিকলাঙ্গতার মাঝে আগামী জনশক্তিকে এগিয়ে না দিয়ে, আরো অন্তত দশবার ভেবে সিদ্ধান্ত নেওয়াটাই এখন আগামীর শক্তিসঞ্চয়।
ভাবুন, ভাবুন অন্তত দশবার ভাবুন, তারপর সিদ্ধান্ত নিন এই বিবেচনায় এই প্রতিবেদন। জনশক্তিকে লালন করার ভার কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের উপরেই বর্তায়।