চোখে জল কুমোরটুলি মৃৎশিল্পীদের

Spread the love

চোখে জল কুমোরটুলি মৃৎশিল্পীদের

সেখ সামসুদ্দিন,

আকাশে সাদা মেঘের ভেলা, মাঠে মাঠে কাশফুল। মহালয়ার সুরের ছটায় জানান দিচ্ছে পূজার আগমনী বার্তা। প্রত্যেক বছর এ সময়টা এলাকা একেবারে গমগম করে। আর এ বছর গোটা এলাকা জুড়ে ভয়ঙ্কর এক শূন্যতা। দেবী দুর্গার কাঠামোটা রাস্তার দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে। মাটির প্রলেপ যে বহু দিন আগে পড়েছিল, দেখলেই বোঝা যায়। আচমকা যেন থমকে গিয়েছে আঙুলের স্পর্শ। সিংহের মুখ থেকে বেরিয়ে আছে শুকনো খড়। অসুরের অবস্থাও তথৈবচ। এমন ছবি দেখা গেল পূর্ব বর্ধমান জেলার মেমারি ১ নম্বর ব্লকের বিভিন্ন জায়গার কুমোরটুলিতে। লকডাউন এর কারণে বর্তমানে সমস্ত জিনিসের দাম আকাশছোঁয়া, ফলে মাথায় হাত পুজো উদ্যোক্তা থেকে কুমোরটুলির মৃৎশিল্পীদের। তাদের বক্তব্যে জানা গেল যে, প্রতি বছর এই সময় সমস্ত প্রতিমার বায়না হয়ে যায় কিন্তু এবছর এখনো পর্যন্ত প্রতিমা বায়নার কোন আগ্রহ পুজো উদ্যোক্তাদের নেই এবং প্রতিমা তৈরিতে যে কাঁচামাল লাগে যেমন খড়, বাঁশ, দড়ি এবং প্রতিমা সাজের কাঁচামাল লাগে তার দাম বর্তমানে আগের তুলনায় অনেক বেশি। ফলে অন্যবারের তুলনায় এবছর প্রতিমার দাম একটু বেশি হওয়ায় প্রতিমা বিক্রি কমেছে। অপরদিকে লকডাউনের কারণে কোন রকমভাবে পুজো সারার জন্য পুজো উদ্যোক্তারা অন্যবারের তুলনায় এ বছর আরও কম দামে প্রতিমা নিতে চাইছেন।
শিল্পীদের সৃষ্টিতেই কুমারটুলির পরিচিতি। সেই শিল্পীদেরই এখন হাত খালি, পকেট খালি, রোজগার বন্ধ । ব্যবসা কার্যত লাটে উঠেছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই মন ভাল নেই ওঁদের। প্রথমে করোনা জুজু, পরবর্তীকালে লকডাউন। রোজগার বন্ধ হওয়ায় কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ ক্রমশ চওড়া হচ্ছে মৃৎশিল্পীদের। কীভাবে চালাবেন নিজেদের পেট ? পরিবারের সংসারও চলবে কী করে? এই প্রশ্ন মনের মধ্যে সারাক্ষণ ঘোরাফেরা করলেও উত্তর আজও অজানা মৃৎশিল্পীদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *