দুর্গাপুরে শ্রীসঙ্গীতমের উদ্যোগে পাঁচজন কবির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন

Spread the love

দুর্গাপুরে শ্রীসঙ্গীতমের উদ্যোগে পাঁচজন কবির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন

জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী

কবির দেশ অবিভক্ত বাংলা। রবীন্দ্রনাথ, নজরুলের পাশাপাশি জীবনানন্দ, সুকান্ত প্রমুখের নাম কাব্যরসিক মানুষের মুখে মুখে ফিরলেও আরও অনেক কবি আছেন কাব্য জগতে তাদের অবদান প্রচুর। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে তারা অবহেলিত থেকে গেছেন। তাদের নিয়ে সেভাবে সার্বিক আলোচনা হয়না। গত আট বছর ধরে কাব্য রসিকদের সামনে তাদের সৃষ্টি তুলে ধরার মহান ব্রত পালন করে চলেছে দুর্গাপুরের 'শ্রীসঙ্গীতম' নামে একটি প্রতিষ্ঠান। এবছর তারা নবম বছরে পা দিল।

 প্রায় আশি জন সঙ্গীত শিল্পী ও বাচিক শিল্পীর উপস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোগে সম্প্রতি দুর্গাপুরের চিলড্রেনস আকাদেমিতে রবীন্দ্রনাথ, নজরুলের পাশাপাশি দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, অতুলপ্রসাদ সেন ও লালন ফকিরের মত পাঁচজন বিশিষ্ট কবির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্যে এক সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়। প্রসঙ্গত বিগত বছরগুলিতেও রবীন্দ্রনাথ, নজরুলের পাশাপাশি আরও তিনজন ভিন্ন  কবিকে বেছে নেওয়া হয়। মূলত নজরুলের জন্মদিনের পর কোনো একসময় তারা এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। 

উদ্বোধনী সঙ্গীত ‘আগুনের পরশমণি…..’ পরিবেশন করে উপস্থিত কচিকাচা শিল্পীরা। তাদের সঙ্গে গলা মেলান সমস্ত প্রতিষ্ঠিত সঙ্গীত শিল্পীরা। এই প্রথমবারের জন্য কোনো অনুষ্ঠানে উপস্থিত শ্রোতারাও উদ্বোধনী সঙ্গীতে গলা মেলান। এছাড়া শিশু ও প্রতিষ্ঠিত শিল্পীরা অনুষ্ঠানে কোরাস সঙ্গীত ও একক সঙ্গীতও পরিবেশন করেন।
হাওয়াইন গিটার-এ রবীন্দ্রসঙ্গীত বাজিয়ে শোনান এলাকার সুপরিচিত শিল্পী গৌতম দত্ত প্রামাণিক। অন্যদিকে সেক্সাফোন-এ রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশন করেন শ্রাবণী মুখার্জ্জী। অনুষ্ঠানে শিল্পীদের পরিবেশনা দর্শকদের মুদ্ধ করে। ছয় ঘন্টা ব্যাপী অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন গৌতম দাস ও অন্তরা সিংহরায়।

এর আগে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার গৌতম দাস (রড)। তার দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন অন্তরা সিংহরায়, দুলাল দাস, চন্দ্রা পাঁজা, ব্রততী চৌধুরী প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কবি ও বাচিক শিল্পী অন্তরা সিংহরায়, শ্যামলী দত্ত প্রামাণিক, জয়ন্ত চৌধুরী, প্রবীণ মিশ্রা সহ বহু শিশু শিল্পী ও অন্যান্যরা। এযেন এক চাঁদের হাট তথা সাংস্কৃতির মিলন উৎসব। অনুষ্ঠানে শিল্পীদের পরিবেশনা দর্শকদের মুদ্ধ করে ।

গৌতম বাবুর ভূয়সী প্রশংসা করে অন্তরা দেবী বলেন – বাংলায় অসংখ্য প্রতিষ্ঠিত কবি থাকলেও বিভিন্ন কারণে তাদের একটা বড় অংশ আজ স্মৃতির অন্তরালে। গৌতম বাবুর সৌজন্যে নতুন প্রজন্মের কাছে তাদের পরিচিতি ঘটছে। এটাই আমাদের বড় পাওনা। আশাকরি আগামীদিনে আরও অনেক প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসবে।

 উপস্থিত কবি-শিল্পীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে গৌতম বাবু বললেন- বাংলা কাব্যজগতে এইসব কবিরা নিজেরাই এক একটি প্রতিষ্ঠান। তবুও মাঝে মাঝে সবার সামনে বিশেষ করে নব প্রজন্মের সামনে তাদের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন হয়। নাহলে তারা একটা নির্দিষ্ট গণ্ডিতেই আটকে থাকবে। তাই এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *