বরাদ্দ করা হয়েছে ৭৫ কোটি টাকা
মাছ উৎপাদন ও রফতানি বৃদ্ধিতে জোর রাজ্যের
খায়রুল আনাম
মাছে-ভাতে বাঙালি অতি পরিচিত শব্দ। বাঙালির ভাতের পাতে মাছ, একটা সময় এটি ছিল অতি পরিচিত দৃশ্য। কিন্তু বর্তমান সময়ে রাজ্যে মাছের অভ্যন্তরীন চাহিদা না মেটার ফলে ডিমের মতো ভিনরাজ্য থেকে মাছ আমদানি করে রাজ্যকে পরিস্থিতি সামাল দিতে হচ্ছে। অথচ এরাজ্যে যে পরিমাণ জলাভূমি রয়েছে তা পরিকল্পিতভাবে কাজে লাগিয়ে মাছচাষ করা গেলে রাজ্যে মাছের অভ্যন্তরীন চাহিদা মিটিয়ে ভিনরাজ্যে মাছ রফতানি করার সম্ভাবনাও রয়েছে। সেই সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে এবার রাজ্য সরকার মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি বৃদ্ধিতে বিশেষ পরিকল্পনা নিয়ে ৭৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। ইতিমধ্যেই হারিয়ে যেতে বসা বিভিন্ন প্রজাতির মাছকে ফিরিয়ে এনে তা ভাতের পাতে তুলে দেওয়ার সাথে সাথে বাঙালির অতিপ্রিয় চুনোমাছকের ফিরিয়ে আনতে খালবিল উৎসবেরও আয়োজন করা হচ্ছে। পরিকল্পিতভাবে মাছ উৎপাদনের জন্য যে জলাভূমিকে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে তার বাইরেও বহু জলাভূমিতে এইসব চুনোমাছ উৎপাদিত হয়ে থাকে। এমন কী বর্ষায় চাষের জমিতেও অনায়াসে চুনোমাছের বংশবৃদ্ধি ঘটে এবং ধানজমিতে ধরে রাখা জল থেকেও পরিসংখ্যানের বাইরেও বহু প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়।
রাজ্যে মাছ উৎপাদন করে রফতানি বৃদ্ধিতে যে বিশেষ পরিকল্পনায় ৭৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, সেই পরিকল্পনাটি রূপায়িত হচ্ছে কেন্দ্র-রাজ্য যৌথ উদ্যোগে। কেন্দ্র-রাজ্য যৌথ উদ্যোগের এই প্রকল্পে মৎস্যজীবী, মৎস্যজীবী সঙ্ঘ, স্বনির্ভর গোষ্ঠী, মৎস্যজীবী সমবায় সমিতিগুলি এই সুবিধা পাওয়া ছাড়াও মৎস্যজীবীদের ক্রেডিট কার্ডের সুবিধাও নিতে পারবেন। সরকারিভাবে বলাও হচ্ছে যে, মৎস্যচাষের জন্য যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে তা রাজ্যে কেন্দ্র-রাজ্য যৌথ উদ্যোগে রূপায়িত আর কোনও প্রকল্পে বরাদ্দ করা হয়নি।
রাজ্য মৎস্য দফতর কেন্দ্র-রাজ্য যৌথ উদ্যোগে রূপায়িত এই প্রকল্পে সবচেয়ে বেশি অর্থ বরাদ্দ করেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার জন্য। এই জেলায় ১১ টি প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ১১ কোটি টাকা। সম পরিমাণ প্রকল্পের জন্য দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলাকেও একই পরিমাণের টাকা দেওয়া হয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পেয়েছে ৭ কোটি টাকা, পশ্চিম বর্ধমান, জিটিএ এলাকার শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ, ঝাড়গ্রাম, কালিম্পং পেয়েছে ১ কোটি টাকা করে। ২ টি করে প্রকল্প অনুমোদিত হওয়ায় ২ কোটি টাকা করে পাচ্ছে বাঁকুড়া, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার ও বীরভূম জেলা। পূর্ব বর্ধমান জেলায় ৩ টি, মুর্শিদাবাদ জেলায় ৩ টি ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ৩ টি এবং নদীয়া জেলার জন্য ৪ টি প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। এবং প্রতিটি প্রকল্পের জন্য পাওয়া যাবে ১ কোটি টাকা করে। এরফলে আগামীতে এরাজ্য মাছ উৎপাদনে এগিয়ে গিয়ে, রাজ্যে মাছের অভ্যন্তরীন চাহিদা মিটিয়ে ভিনরাজ্যে মাছ রফতানি করতে পারবে বলে রাজ্য মৎস্য দফতর আশা করছে।।
ছবি : মাছ ধরা।